বৃহস্পতিবার ● ২৩ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » খেলা » এক সময়ে বাংলাদেশকে ভোগানো কেনিয়া এখন কোথায় খেলে?
এক সময়ে বাংলাদেশকে ভোগানো কেনিয়া এখন কোথায় খেলে?
২০০৬ সালে যে ৭টি ওয়ানডে খেলেছে দুই দল, সবগুলোতেই বাংলাদেশ জিতেছে। সেই শেষ, আর কখনো দেখা হয়নি বাংলাদেশ আর কেনিয়ার। ২০০৬ সালের আগে অবশ্য কেনিয়া বড় একটা দুশ্চিন্তার নামই ছিল বাংলাদেশের জন্য। এর আগ পর্যন্ত সাত ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় যে শুধু একটি - ১৯৯৮ ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে।
এই শতাব্দীর শুরুর দশক থেকে কখনো অন্তর্কলহ, বোর্ডের দুর্নীতি, আর্থিক দৈন্য, কখনো মাসের পর মাস বসে থাকা…সব মিলিয়ে কেনিয়ার অধঃপতনের শুরু। ২০০৩ বিশ্বকাপে সবাইকে চমকে দিয়ে সেমিফাইনালে খেলা সেই কেনিয়াই এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কুলীন মঞ্চে অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু কেনিয়া এখন কোন পর্যায়ে খেলে? কেমন খেলছে?
উত্তর খুঁজতে গেলে একটু চমকে যেতে পারেন। কেনিয়া বললে অন্তত দুই দশক পুরোনো ক্রিকেটপ্রেমীদের তো স্টিভ টিকোলো, মরিস ওদুম্বে, টনি সুজি, মার্টিন সুজি, কেনেডি ওটিয়োনো…এই নামগুলোই মনে ভাসবে। এই পুরোনো নামগুলোর মধ্যে একটি নাম এই ২০২৩ সালে এসেও কেনিয়া দলে খুঁজে পাবেন - কলিন্স ওবুইয়া! ৪২ বছর বয়সী তরুণ অলরাউন্ডার যে আজও খেলেছেন কেনিয়ার জার্সিতে।
মঞ্চটা আইসিসির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাইপর্ব। প্রাথমিক বাছাইপর্ব পেরিয়ে আঞ্চলিক বাছাইপর্ব আজ শুরু হয়েছে নামিবিয়ায়। স্বাগতিক নামিবিয়া, উগান্ডা, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, রুয়ান্ডা, তানজানিয়া ও জিম্বাবুয়ে - এই সাত দল জায়গা করে নিয়েছে আঞ্চলিক বাছাইপর্বের চুড়ান্ত পর্বে। এখান থেকে পয়েন্ট তালিকার সেরা দুই দল জায়গা করে নেবে আগামী বছরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তা চূড়ান্ত বাছাইপর্বের প্রথম দিনে আজ রুয়ান্ডাকে ১৭ রানে হারিয়ে দারুণ শুরু হয়েছে কেনিয়ার।
আগে ব্যাট করে কেনিয়া ২০ ওভারে করেছে ২ উইকেটে ১৫৪ রান। জবাবে রুয়ান্ডা ২০ ওভার খেলেও ৪ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৩৭ রান। কেনিয়ার পারফরমারদের নামগুলো দেখুন, কিছু স্মৃতি ফিরতে পারে। কেনিয়ার হয়ে ব্যাট হাতে দুজন ফিফটি করেছেন - ওপেনার ওদুম্বে (৪৭ বলে ৫০) ও তিনে নামা ইরফান করিম (৪৩ বলে ৬৩)। ওদুম্বে তো কেনিয়ার সোনালি সময়ের সাক্ষী, ইরফান করিমের নাম থেকেও একটা সূত্র টেনে নিতে পারেন। করিম নামে একজন তো কেনিয়ার সোনালি সময়ের দলেও ছিলেন - আসিফ করিম। ইরফান করিম সেই আসিফ করিমের ছেলে।
এখানেই শেষ নয়, কেনিয়ার হয়ে আজ ৩ ওভারে ১৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মিডিয়াম পেসার নেলসন ম্যান্ডেলা ওধিয়াম্বো। না, আফ্রিকান কিংবদন্তি নেতার সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই, তাঁর রক্তের সূত্র খুঁজতে গেলে চোখে পড়বে কেনিয়ান সাবেক আরেক ক্রিকেটারের নাম - টমাস ওডোয়ো। নেলসন ম্যান্ডেলা ওধিয়াম্বোর চাচা টমাস ওডোয়ো।
কেনিয়া যদি এখানে পয়েন্ট তালিকার সেরা দুইয়ে থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়, সে ক্ষেত্রে ওবুইয়া পরিবারের একটা গর্বের উপলক্ষই তৈরি হবে। ১৯৯৬ ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছিলেন কলিন্স ওবুইয়ার ভাই কেনেডি ওটিয়োনো ওবুইয়া। কেনিয়া আগামী বছরের বিশ্বকাপে খেললে, এবং কলিন্স ওবুইয়া তাতে খেলার সুযোগ পেলে, ২৮ বছর আগে-পরে দুই সংস্করণের দুই বিশ্বকাপে থাকবে ওবুইয়া পরিবারের অংশগ্রহণ।
মজার ব্যাপার কী, ৪২ বছর বয়সী ওবুইয়াই কিন্তু এবারের আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাইপর্বে সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রাঙিয়ে যাওয়া খেলোয়াড় নন। উগান্ডা দলে ফ্রাঙ্ক এনসুবুগা নামে ৪৩ বছর বয়সী এক বাঁহাতি স্পিনার আছেন, যাঁর আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল ইস্ট অ্যান্ড সেন্ট্রাল আফ্রিকার হয়ে ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিতে! কলিন্স ওবুইয়ার অভিষেক ২০০১ সালে।
আফ্রিকান অঞ্চলের চূড়ান্ত বাছাইপর্বের প্রথম দিনে আজ কেনিয়া দারুণ শুরু পেলেও জিম্বাবুয়ে অবশ্য হেরে গেছে নামিবিয়ার কাছে। আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৩২ রান করেছে জিম্বাবুয়ে, নামিবিয়া সে রান পেরিয়ে গেছে ৬ উইকেট আর ৩২ বল হাতে রেখে।
বিষয়: #কেনিয়া