শনিবার ● ৩০ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » দেশে ডলার ও টাকার সংকট কমেছে
দেশে ডলার ও টাকার সংকট কমেছে
দেশে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে ডলার সংকট। এ কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলতে পারেনি। লাগামহীন বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায় ডলারের দর। এর মধ্যেই কারসাজিতে জড়িয়ে পড়ে অনেক ব্যাংক-মানি চেঞ্জার। ফলে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে বাজার। কারসাজিতে জড়িত ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারকে জরিমানাও করা হয়। এরপরও বাজার নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং
কিছুদিন আগেও ডলার সংকট চরম আকার ধারণ করেছিল। নানা কারসাজির কারণে খোলা বাজারে ডলারের দাম উঠেছিল ১২৭ টাকায়। ফলে বাড়তি দাম পাওয়ার আশায় অধিকাংশ ডলার খোলা বাজারে চলে যাচ্ছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানামুখী উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও সতর্ক অবস্থানে থাকায় দেশে মার্কিন ডলার ও দেশীয় টাকার সংকট কিছুটা কমেছে। একদিকে ডলারের দাম কমেছে, অন্যদিকে টাকার সরবরাহ বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলসি পেমেন্ট দিতে না পারায় একসময় প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কেনায় মরিয়া হয়ে উঠেছিল ব্যাংক। ফলে প্রতি ডলারের দাম উঠেছিল ১২০ টাকায়। তবে এখন প্রবাসী আয়ের ডলার ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা দামে পাওয়া যাচ্ছে। প্রবাসী আয়ের ডলারের দাম কমায় ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১০ টাকায় নেমে এসেছে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোতে যে তারল্য সংকট ছিল, সেটাও কমে এসেছে কিছুটা।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ডলার সংকট কমে আসার পেছনে কয়েকটি উদ্যোগ কাজে এসেছে। এর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি আরোপের কারণে আমদানি কমে আসা। একইভাবে ডলারের দাম নিয়ে কড়াকড়ি অবস্থান থেকে সরে আসায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়েছে। পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকা অদল-বদলের (সোয়াপ) সুবিধার কারণে সংকট কিছুটা কমে এসেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই দেশে ডলারের সংকট শুরু হয়। দুই দেশের এ যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ে। এতে আমদানি খরচ হঠাৎ বেড়ে যায়। রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির মধ্যেই ২০২২ সালের জুনে ৮৩৭ কোটি ডলারের আমদানি দায় শোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। এরপর ঋণপত্র (এলসি) খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এলসি খোলার বিপরীতে শতভাগ পর্যন্ত নগদ টাকা জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়।
এর ফলে কমতে থাকে আমদানি দায়। কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম আমদানি দায় পরিশোধ হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। এ মাসে আমদানি দায় পরিশোধ হয় ৪৬৭ কোটি ডলারের। তার আগের মাস জানুয়ারিতে আমদানি দায় পরিশোধ হয়েছিল ৫৯৬ কোটি ডলারের। আমদানি দায় পরিশোধ হলো সংশ্লিষ্ট মাসের প্রকৃত ডলার খরচ। ফলে এ হিসাবে দেখা যায় ডলারের ওপর চাপ কিছুটা কমে এসেছে।
এরই মধ্যে সুবাতাস বইছে রেমিট্যান্সে। ধারাবাহিকভাবে কিছুটা উন্নতির দিকে অর্থনীতির অন্যতম এ সূচক। গত ডিসেম্বরে প্রায় দুই বিলিয়ন বা ১৯৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। এর পরের মাস জানুয়ারিতে আসে ২১১ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ২১৬ কোটি ডলারে। চলতি মার্চের প্রথম ২৬ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১৭২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। স্বাধীনতার এ মাসে রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে- এমনটাই মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
বিষয়: #টাকার #ডলার #সংকট