বুধবার ● ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » অনুপ্রেরণা (গল্প) » অনুগল্প:নারী
অনুগল্প:নারী
জেনিফা চৌধুরী:: পেছন থেকে দুটো হাত তৃণার বুকের নরম মাং’স পি’ন্ডে চে’পে ধরতে-ই তৃণা কেঁপে উঠল। আড় চোখে তাঁকিয়ে দেখল হাত দুটো মধ্য বয়সী কেউ একজনের। লোকটা পেছন থেকে তৃণার গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে। ঘৃ”ণায় গা শিরশির করে উঠল। বুকে থাকা হাত দুটো এবার শক্ত করে খাবলে ধরল। ব্যাথায় শিউরে উঠল তৃণা। লোকটার হাতের নখ গুলো জামা ভেদ করে ক্ষ*ত সৃষ্টি করছে নরম জায়গায়। তৃণা টু-শব্দ করল না। নিঃশব্দে হাসল। মুখে লেগে রয়েছে রহস্যময় হাসি। যে হাসির অর্থ কেউ জানেনা। কিছুক্ষণ এভাবেই নিরব অত্যাচার সহ্য করল। লোকটা বেশ তৃপ্তি সহকারে নিজের হাতের জ্বা*লা মিটিয়ে নিচ্ছে। তৃণা আড় চোখে তাকিয়ে দেখল লোকটা বিশ্রি নজরে ওর দিকে তাঁকিয়ে আছে। তৃণা তাকাতেই লোকটা গা গুলানো হাসি উপহার দিল। তৃণার চোখের কোণে অশ্রুকণা এসে জমাট বাঁধল। গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ার আগেই মুছে নিল। উচ্চস্বরে হাঁক ছাড়ল,
“এই, মামা! গাড়ি থামান নামব।”
তারপর ফিসফিস করে লোকটার কানে বলে উঠল,
“ফুলের দিকে হাত বাড়ালে কা’টার আঘাত তো খেতেই হবে, চাচা।”
মিনিটের মাথায় বাস থামল। তৃণা ধীর পায়ে দরজার সামনে এগিয়ে আসতেই বিকট চিৎকার ভেসে আসল। তৎক্ষনাৎ পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখল, একটা লোক নিচে পড়ে গোপনাঙ্গ ধরে ছটফট করছে। র*ক্তে মাখামাখি হয়ে যাচ্ছে হাত দুটো। যন্ত্রণায় মুখ দিয়ে করুন আর্তনাদ করছে! তৃণা কিছুক্ষণ লোকটার দিকে তাকিয়ে আফসোসের স্বরে চিৎকার করে বলে উঠল,
“আরে! আরে! চাচার একি হয়ে গেল? ইশ! কীভাবে ছটফট করছে দেখুন? এদৃশ্য দেখার ক্ষমতা আমার নেই। আপনারা একটু দেখুন না, কী হয়েছে?”
তারপর চোখের জলটুকু মুছে আফসোস করতে করতে নেমে আসল বাস থেকে। ফুটপাতের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে ভাবল। ইশ রে! এই বয়সে এসে রাস্তাঘাটে কিভাবে হেনস্তা হতে হলো? তৃণার ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি ফুটে উঠল। চোখে, মুখে খুশির ঝলক দেখা দিল। চোখ দুটো খুশিতে চিকচিক করে উঠল। নিজের হাতটা ওড়নার নিচের থেকে এনে চোখের সামনে ধরল। হাতে থাকা রক্তাক্ত ছু-ড়িটার দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠল,
“সম্মান বাঁচাতে হলে বুকে সাহস থাকা লাগে। ইজ্জত হারিয়ে হয় চরিত্রহীন হয় জীবন্ত লা’শ হয়ে বাঁচো, নয় ম’রো। আর যদি সুস্থ ভাবে বাঁচতে চাও, তাহলে মা’রো।”
তৃণা ছু*ড়িটাকে ব্যাগে রেখে বুক ফুলিয়ে শ্বাস নিল। কোনো এক জা’নোয়ারকে তার পাপের শাস্তি দিতে পেরে মনটা ফুড়ফুড়ে হয়ে গেল। হয়তো পৃথিবীর সবার কাছে তৃণা অপরাধী। কিন্তু নিজের কাছে অসীম সাহসী নারী। ভালো মানুষের মুখো’শের আড়ালে কিছু জা-নোয়ার ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু আমরা দেখতে পাইনা। এসব হায়ানার থাবা থেকে নারী তোমাকে কোমল হলে চলবে না। সব প্রতিবাদ মুখে করার দরকার নেই৷ কিছু অপরাধের প্রতিবাদের ভাষা হোক নিরব। নিরবতার চাইতে ভ*য়ংকর অশ্র আর কিছু নেই।
“আমি নারী, আমি সব পারি”
“আমি নারী, আমি ঘর সামলাতেও পারি,
আবার অফিসের কাজে ছুটতেও পারি,
আমি নারী, আমি যেমন ভালোবাসতেও পারি,
তেমন ঘৃ’ণা করতেও পারি।
আমি নারী, আমার ভালোবাসার হয়তো শেষ আছে
কিন্তু, আমার ঘৃণার কোনো শেষ নেই।
আমি নারী, আমি কিছু নির্যাতন যেমন নিরবে সহ্য করে নেই।
তেমনি ধৈ’র্যের বাঁধ ভেঙে গেলে আমাদের নিরব প্রতিবাদ গুলো মা*রা*ত্নক ভ*য়ং*কর হয়ে উঠে।
আমি নারী, আমার এক রুপ নয় পরিবেশ, পরিস্থিতিতে হাজার রুপ ধারণ করতে হয়।”
বিষয়: #অনুগল্প #চৌধুরী #জেনিফা #নারী