রবিবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » রাজনীতি » চট্টগ্রামে নৌকার এজেন্ট আরমানের চোখে গুলি, দায়িত্ব নিলেন আমিন
চট্টগ্রামে নৌকার এজেন্ট আরমানের চোখে গুলি, দায়িত্ব নিলেন আমিন
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করায় আরমানুল ইসলাম (২৯) নামে এক যুবলীগ নেতাকে গুলিবিদ্ধ করেছে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকরা। এতে তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। গুরুতর আহত আরমানুল বর্তমানে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতের চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয় হাসপাতালে নেয়া হবে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হোসেন নগর গ্রামের বাসিন্দা আরমানুল। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার হোসেন নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ছিলেন। ৭ জানুয়ারি রাতে বাড়িতে ঢুকে আরমানুলকে গুলি করে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব এর কর্মীরা। এতে আরমানুলের চোখে-মুখে ছররা গুলি লাগে। তাকে প্রথমে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। পরে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতে নেয়া হবে। আরমানুলের উন্নত চিকিৎসার জন্য শুরু থেকে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
গুরুতর আহত আরমানুলের ভাই মোহাম্মদ হাছান বিবার্তাকে বলেন, সংসদ নির্বাচনে আমরা নৌকা পক্ষের কাজ করেছি। আমার ভাই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ছিল। ভোট শেষ করে রাতে আমরা বাড়িতে আসি। আমরা সবাই বাড়িতে ছিলাম। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের সময় ঈগল প্রতীকের অনুসারীরা বাড়িতে এসে আরমানুলকে গুলি করে আমাদের বাড়ির পাশের জয়নাল। সে ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর লোক। তার নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন এ হামলা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রথমে সাতকানিয়া হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে চট্টগ্রাম হাসপাতালে রেফার্ড করেছিল। এসময় আমিন (আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন) ভাইকে কল দিয়েছি। উনি বলার পর সাথে সাথে চট্টগ্রাম হাসপাতালে ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ওখান থেকে ঢাকায় রেফার্ড করে। এরপরে আমরা বিমানের ফ্লাইটে এসেছি। আমিন ভাই টিকিটসহ সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
হাছান বলেন, আমরা এখন আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত যাবো। আমিন ভাই ইন্ডিয়ার শংকর নেত্রালয় হাসপাতাল থেকে অ্যাপয়নমেন্ট নিয়ে দিয়েছেন। আমাদের পাসপোর্ট রিনিউ করে দিয়েছেন। এখন ভিসা পেলেই আমরা চলে যাবো।
তিনি বলেন, গুলির ঘটনায় এখনো মামলা করতে পারিনি। ঘটনার পর ওসি মহোদয়কে কল দিয়েছিলাম। উনি হাসপাতালে এসে দেখেছেন। আমাদের বাড়িতে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছেন। উনি বলেছেন ভাইকে সুস্থ করে এসো, তারপর মামলা হবে। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিকে, গুলিবিদ্ধ আরমানুল ইসলামকে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল তিনটায় ঢাকা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে দেখতে যান আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাতকানিয়া–লোহাগাড়ার সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য রিজিয়া রেজা চৌধুরী। এ সময় আরমানের পাশে ছিলেন তার ভাই মোহাম্মদ হাছান ও পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে আবারও আরমানুলকে দেখতে ঢাকা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে যান আমিনুল ইসলাম আমিন। ওই সময়ে তিনি বিবার্তাকে বলেন, এটা অবশ্যই খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই অন্যায় কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন এবং দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত।
তিনি বলেন, তার চিকিৎসা সহায়তায় শুরু থেকে আমরা পাশে আছি। তার সুস্থতায় আমাদের সার্বিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
বিষয়: #নির্বাচন ২০২৪