শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
শুক্রবার ● ১২ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের কিশোর চালকের লাশ উদ্ধার
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের কিশোর চালকের লাশ উদ্ধার
১১৪ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১২ জানুয়ারী ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের কিশোর চালকের লাশ উদ্ধার

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের কিশোর চালকের লাশ উদ্ধারআকিকুর রহমান রুমন:-হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার এক ইজিবাইক গাড়ির কিশোর চালকের লাশ মিললো আজমিরীগঞ্জ উপজেলার এক হাওরের মধ্যে।
এ ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযানে চালিয়ে বানিয়াচং উপজেলা সদরের একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে রাত ৮টার দিকে ব্যাটারীবিহীন ঐ কিশোরকে হত্যা করে ইজিবাইক গাড়িটির বডি উদ্ধার করেন পুলিশ।
এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানাযায়, ১১জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৫নং শিবপাশা ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুরের একটি হাওরের মধ্যে কম বয়সী এক কিশোর যুবককে প্যান্ট পরা অবস্থায় হালি গায়ে পরে থাকতে দেখেন হাওরে কাজকরা শ্রমিকগন।
অথচ এই কিশোরের আশপাশে কোন কিছুই দেখতে পান নাই তারা।
তাৎক্ষণিক এই বিষয়টি থানা পুলিশ ও স্হানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ গ্রামবাসীকে অবগত করেন তারা।
এই বিষয়টি গ্রামের লোকজনের কাছে জানাজানি হয়ে পড়লে এলাকার শত,শত লোকজন হাওরের দিকে ছুটতে থাকেন এক নজর দেখার জন্য।
এছাড়াও স্হানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করে তিনিও ঘটনাস্থলে রওয়ানা দেন।
এমন ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)ডালিম আহমেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন।
এবং লাশের পাশে শত,শত জনতার সামনে কিশোর যুবকটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করেন এবং লাশটি উদ্ধার করে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান।
প্রথমে উদ্ধার হওয়া ইজিবাইক কিশোর চালকের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ।
অনেকেই এই বিষয়টি আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম”ফেইসবুক” এর বিভিন্ন আইডি থেকে পোস্ট করেন ও ভিডিও আপলোড দেন পরিচয় বিহীন লাশ উদ্ধারের বিষয়টি।
এবিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসলে তাৎক্ষণিক আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের ব্যস্ততার কারনে কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি।
৫নং শিবপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ নলিউর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে বেলা ৪টা ২০মিনিটের দিকে যোগাযোগ করা হলে,তিনি এই লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,এমন সংবাদ শুনে আমি বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে এমনই একটি কিশোর যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখী।
পরে থানা পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে জুড়ো হওয়া শত,শত উপস্থিত লোকজনের কেউ কেউ বলছিলেন এই ছেলেটির বাড়ি বানিয়াচং এবং সে নাকি একটি ইজিবাইক মিশুক গাড়ি চালায়।
এমন আলাপ আলোচনা থেকে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা পরিকল্পিত হত্যা এবং ঐ ছেলের মিশুক গাড়িটি ছিনতাইয়ের জন্যই মূলত এমনটা করেছে ঘাতকেরদল।
এই ঘটনার ঘাতকদের গ্রেফতার ও রহস্য উদঘাটনে কাজ করে যাচ্ছেন আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশসহ পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সদস্যগন।
তিনি আশা করেন পুলিশ বাহিনীর সঠিক তদন্তে বেড়িয়ে আসবে মূল ঘটনা ও গ্রেফতার হবে অপরাধীগন।
তার ইউনিয়নের ভিতরে এমন হত্যাকান্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে গাড়িটি উদ্ধার পূর্বক জড়িতদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য জেলা পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট জোরালো দাবি জানিয়ে তার মতামত প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে এই ছেলেটিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই দেখে বানিয়াচং উপজেলা সদরের ২নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের চানপাড়া মহল্লার বলে কেউ কেউ তার পরিচয় তুলে ধরেন তাদের মতামতের মাধ্যমে।
এমন সংবাদ জানাজানি হয়ে পড়লে নিহত কিশোরের পরিবারের লোকজনের কাছেও খবর পৌঁছায়।
তারাপর পরিবারের লোকজন আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় গিয়ে তাদের ছেলের লাশটি শনাক্ত করেন।
এব্যাপারে নিহত কিশোরের পরিচয় নিশ্চিত হতে ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চানপাড়া মহল্লার ইউপি(সদস্য)মেম্বার জিতু মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই নিহত যুবকের পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,ছেলেটি হলো আমার ওয়ার্ডের বশির মিয়ার পুত্র শাহজাহান মিয়া(১৪)বাসিন্দা।
পরিবারের লোকজন এমন মৃত্যুর সংবাদ শুনে বিকালের দিকে আজমিরীগঞ্জ থানায় চলে যান এবং তাদের ছেলেকে সনাক্ত করেন।
এমন ঘটনা শুনে তিনি জনপ্রতিনিধি হিসাবে নিজেও বানিয়াচং থেকে আজমিরীগঞ্জ থানায় ছুটে যান।
পরে থানা পুলিশের সাথে আলাপ আলোচনা করে তারা জানান,লাশের সকল প্রকার কাজকর্ম প্রায় শেষ হয়ে রাত হয়ে যাওয়ায় আগামীকাল শাহজাহানকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তে শেষে পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে হত্যাকান্ডের কিশোর শাহজাহান এর পরিবার সম্পর্কে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাযায়, মা,বাবা ৩ ভাই ও ২ ছোট্ট দু’বোনসহ ৭ সদস্য বিশিষ্ট সংসার ছিলো তাদের।
কিন্তু পরিবারটি তেমন সচ্ছল নয় বলে ৩ ভাইয়ের মধ্যে শাহজাহান ছিলো সবার ছোট্ট।
এদিকে সবার বড় ভাইটি প্রতিবন্ধী হওয়ায় মেঝো ভাই ও শাহজাহানকে ঐ সংসারের জন্য লেখাপড়া বাদ দিয়ে পরিবারের জন্য জীবীকা নির্বাহ করতে হতো।
এজন্য পরিবারের লোকজন শাহজাহানকে ঋন করে এই মিশুক গাড়িটা ক্রয় করে দিয়েছিলেন।
শাহজাহান প্রায় ২ বছর ধরে ইজিবাইক গাড়ি চালিয়ে সংসারে সহযোগীতা করে যাচ্ছিলো।
প্রতিদিনের ন্যায় আজও সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে গাড়িটি নিয়ে বের হয়েছিলো।
কিন্তু এভাবে তাকে হত্যা করা হবে কেউ কল্পনাও করেননি।
তাই এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল দ্রুত শাহজাহানের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁশির রায় কার্যকর করে বিচার ব্যবস্হা করার জন্য নবাগত হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আক্তার হোসেনসহ দেশের গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন ইউনিটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সুদৃষ্টি কামনা চেয়ে জোরদাবী করছেন তারা।
এদিকে রাত সাড়ে ৮টায় ইউপি সদস্য জিতু মিয়া জানান,থানা পুলিশের অভিযানে গাড়ির ব্যাটারী ছাড়া ৪নং ইউপির কুন্ডরপার এলাকার পরিত্যক্ত একটি স্হান থেকে ইজিবাইক গাড়িটির ব্যাটারী ছাড়া বডিটা উদ্ধার করেছেন থানা পুলিশ।
কিন্তু শাহজাহানের হত্যাকান্ডে তার মা,বাবা ও পরিবারের লোকজনের কান্নায় আজমিরীগঞ্জে ও বাড়িতে এক হৃদয় বিদারক এর সৃষ্টি হয়ে আকাশ পর্যন্ত ভারী উঠছে।
দ্রুত যেন এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসেন এমনটাই পুলিশের প্রতি জোরালো দাবি জানান বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।
এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ডালিম আহমেদ এর সাথে সর্বশেষ রাত ১০টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি ছিনতাইয়ের উদ্যেশেই এই কিশোর চালককে হত্যা করা হয়েছে।
তবে লাশ উদ্ধার পর পরই তিনিসহ তার পুলিশ বাহিনী বিভিন্ন স্হানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে বানিয়াচং ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের কুন্ডরপার এলাকার পরিত্যক্ত একটি স্হান থেকে এই ইজিবাইক গাড়ির বডি করা হয়েছে।
শীঘ্রই এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান।
এছাড়াও লাশটি বর্তমানে কোথায় রয়েছে জানতে চাইলে,তিনি আরও বলেন এদিকে লাশের সকল কাজ শেষের দিকে কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় পোস্টমর্টেমের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়নি।
লাশটি তাদের থানায়ই রয়েছে আগামীকাল সকালে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং সেখানের কার্যক্রম শেষ করে পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তবে এঘটনায় পরিবারের পক্ষ হতে কোন প্রকার মামলা দায়ের হয়নি বলেও জানান তিনি।।



বিষয়: #  #  #  #  #  #


আর্কাইভ