শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
শুক্রবার ● ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » #গর্ভধারিণী_মা
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » #গর্ভধারিণী_মা
৭০ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

#গর্ভধারিণী_মা

#গর্ভধারিণী_মাআব্বা আমার হাতে একটা বি’ষে’র শিশি তুলে দিয়ে বললো :
—যা,এটা তোর মায়ের ভাতের সাথে মিলিয়ে দে।আর হ্যাঁ,তোর মা যেনো বুঝতে না পারে।
—এইডা কি আব্বা?
—এইডা,এইডা হইলো খাওন।
—তাইলে আমি একটু খাই?
—না না,ভুলেও না।এইডা শুধু তোর আম্মার জন্য আনছি আমি,আর কারোর জন্য না।
আমার বয়স তখন ছয় কি সাত।বি’ষ’ক্রি’য়া সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান ছিলো না তখন।শুধু এইটুক বুঝেছি আব্বা মায়ের ভাতের সাথে মিশিয়ে দিতে বলেছে আমায় তাই করতে হবে।
আম্মাকে ডেকে বললাম :
—আম্মা,ভাত খাবো,খিদা লাগছে।
—দাঁড়া বাবা,হাতের কাজ সেরেই তোকে খেতে দিচ্ছি।
আমি অপেক্ষা করতে থাকি আম্মা কখন রান্না ঘরে যাবে।একটু পরে হাতের কাজ সেরে আম্মা সত্যি সত্যি রান্নাঘরে ঢুকলো।গরম ভাতের পাতিল থেকে এক চামচ ভাত বের করে আমার থালায় রাখলো।তারপর কিছু একটা ভেবে আরোও এক চামচ ভাত আমার থালাতে দিলো।এরপর মা নিজের থালা নেয়।তিন চার চামচ ভাত সেই থালায় বেড়ে পাতিলটা যথাস্থানে রেখে দিলো।ভাতের থালা থেকে এখনো ধোঁয়া উড়ছে।একটা পাটি পেতে আম্মা আমার জন্য ভাত,আলু-বেগুন তরকারি,থাকুনি পাতার বড়া সাজিয়ে দিলো।তারপর বাইরে চলে যায়।
—কইরে আকাইদ,ভাত খাবি বলছিলা না।এখন কোথায় গেলি?
–হ, আম্মা।আইতেছি।
আমি বি’ষে’র শিশিটা প্যান্টের ভেতরে গুজে রান্নাঘরে ঢুকে পড়লাম,আম্মা আমায় দেখে উঠে চলে গেলো।চারদিকটা ভালো করেই তাকাতে লাগলাম আমি।না,আম্মা আশেপাশে নেই।হাঁস মুরগিদের খাবার দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সে।এই ফাঁকে আমি আম্মার খাবারের থালাটার ওপর শিশটা উপুর করে দিলাম,বিষের শেষ ফোঁটাটা ভাতের সাথে মিশে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি।তারপর বুদ্ধি করে খালি শিশিটা চুলার জলন্ত কয়লার ভেতরে ফেলে দিলাম।কাজ শেষ করে আপন মনে খেতে থাকি।থানকুনি পাতার একটা বড়া মুখে তুলতেই মা একটা পানির গ্লাস আমার দিকে এগিয়ে দিলো।
—জল নে বাবা,
—তুমি খাবা না আম্মা?
–হুমমম,বড্ড খিদে লাগছে।আজ তোর সাথেই বসে খাই।
খেতে খেতে বারবার আম্মার দিকে আড়চোখে তাকাতে লাগলাম।আলু বেগুনের তরকারি দিয়ে ভাত মেখে একটা গ্রাস মুখে তুললো আম্মা।আমি চেয়ে আছি সেইদিকে।লক্ষ্য করলাম আম্মার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে,কিন্তু তারপরেও সে খাওয়া থামাচ্ছে না।আম্মাকে কাঁদতে দেখে আমার নিজেরও কেনো জানি না খুব কান্না পাচ্ছে।আমি তাকে জিজ্ঞেস করি।
—আম্মা,কি হইছে তোমার? কানতেছো কেনো?
আম্মা আমার দিকে তাকিয়ে ঈষৎ হেসে বললো
—তুই আমার ভাতে বি’ষ মিশিয়ে দিয়েছিস,তাই না বাবা?
আমায় প্রশ্নটা করে আরোও একটা ভাতের গ্রাস মুখে তুলে নিলো,আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি সেইদিকে।
চলবে…..
#গর্ভধারিণী_মা
তিয়াশ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত



বিষয়: #  #  #  #


আর্কাইভ