বৃহস্পতিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে বিদায় নিতে হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী
ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে বিদায় নিতে হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোট চুরির অপরাধে বিদায় নিতে হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। এক বার নয়, দুই বার বিদায় নিতে হয়েছিল।
১৪ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। আমি বলেছিলাম গ্যাস পাবে না। আল্লাহ-তায়ালাও যখন সম্পদ দেয়, মানুষ বুঝে দেয়। সেই গ্যাস দিতে পারেনি। কূপ খনন করে দেখে গ্যাস নাই।
সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র তিন বছর সাত মাস সময় পান, এরই মধ্যে দেশটাকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলেন। স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি জাতিসংঘ কর্তৃক আদায় করেন। এতো অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নতিটা আমাদের স্বাধীনতা বিরোধীরা ভাবতেও পারেনি।
তিনি আরও বলেন, যারা বলেছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে কি হবে? এটা তো বটমলেস বাস্কেট হবে। তারা এই উন্নয়নটাকে মেনে নিতে পারেনি। একটা দেশ এত দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে, প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের ওপর উঠতে পারে, এটা তাদের ধারণার বাইরে ছিল। চক্রান্ত করে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়েই আমরা সরকারে এসেছি। যার ফলে আজকে বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে। মাত্র তো ১৫ বছর একটানা সময় পেলাম। ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩, বাংলাদেশ আজকে একটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশকে পাকিস্তানির মনে করেছিল বোঝা, এটা চলে গেলেই ভালো। আজকে তারাই বলে, আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। আমরা বাংলাদেশের মতো উন্নত হতে চাই। আর যারা বলেছিল তলাবিহীন ঝুড়ি তারা দেখেছে যে, বাংলাদেশ-বাঙালিকে দাবায়ে রাখা যায় না যেটা জাতির পিতা বলেছিলেন। আজকে তাদের চক্রান্ত শুরু হয়েছে। প্রত্যেকটা নির্বাচনের আগেই চক্রান্ত হয়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এ দেশের মানুষের শক্তিই বড় শক্তি। আর সেই শক্তি আমাদের সঙ্গে আছে বলেই পর পর আমরা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা মাত্র ৫ বছর সময় পেয়েছিলাম। ওই একই শক্তির চক্রান্তে ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। যাই হোক অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর আমরা ২০০৯ সালে সরকারে আসতে পেরেছি। আজকে একটানা ১৫ বছর দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। এরই মধ্যে আমরা দেখি অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন। কতো মানুষকে যে তারা হত্যা করেছে। সেই জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন, সেনাবাহিনী-বিমানবাহিনীর শতশত অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি হত্যা করেছেন। আর আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের দল করা, রাজনীতি করা ও ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। যারা রেললাইন উপড়ে ফেলে, আগুন সন্ত্রাস করে তারা পরাজিত শক্তির দালাল, তাদের না বলুন। বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। বাংলাদেশকে আর পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দেওয়া হবে না।
১৯৭১ সালে পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে। নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।
শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়। পরে তা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর পালন করা হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এবারও যথযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করা হচ্ছে।
বিষয়: #নির্বাচন ২০২৪