শনিবার ● ৯ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ‘বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করেছি, একটা আফসোস রয়ে গেছে’
‘বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করেছি, একটা আফসোস রয়ে গেছে’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটা আফসোস রয়ে গেছে আমার, খুব ইচ্ছা ছিল একজন নারীকে আমি প্রধান বিচারপতি করে যাবো। কিন্তু আমাদের সমাজে এত বেশি কনজারভেটিভ, এগুলো ভাঙতে সময় লাগে। সেজন্য করতে পারেনি। এ আফসোসটা থেকে গেল।’
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ অনুষ্ঠানে তিনি এই আফসোসের কথা জানান।
বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করতে পেরেছেন বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে। তারা যেমন ট্রেনিংয়ে গেছে, তেমনি যুদ্ধক্ষেত্রেও সহযোগিতা করেছে। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নানা নির্যাতনের শিকার হন। অনেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া নিজের স্বামীর নামে স্কুল করেছেন। সেখানে ছাত্রী পাওয়া যেত না। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করতেন। সেখানেও নানা বাধার সম্মুখীন হন। তিনি তার লেখায় উল্লেখ করেছেন, যাহা পুরুষ পারিবে, তাহা নারীও পারিবে।
তিনি বলেন, জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, এটাই ছিল পাকিস্তানের আইন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সমস্ত আইনগুলো পরিবর্তন করেন। এই আইন পরিবর্তনের পর থেকে আমাদের দেশের মেয়েরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দিতে পারছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি সরকারের এসে দেখি আমাদের উচ্চ আদালতে কোনো নারী জজ নেই। তখন আমি উদ্যোগ নিলাম, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বলেছি— উচ্চ আদালতে কোনো জজ নিয়োগ দেওয়া হলে তাতে যদি কোনো নারী জজের নাম না থাকে, আমি কখনো ওই ফাইল সই করব না, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাব না। সেই থেকে যাত্রা শুরু।
তিনি বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছিল। বিজয় অর্জন করেছিল।
তিনি আরো বলেন, বেগম রোকেয়ার সময় মুসলমান মেয়েরা ঘরে অবরুদ্ধ থাকতো। লেখাপড়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তবে তার স্বামী সবসময় তাকে সহযোগিতা করেছেন, তার ভাই তাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি নিজের প্রচেষ্টা উর্দু, বাংলা, আরবি, ইংরেজি, শিক্ষা যেগুলো গ্রহণ করা সেগুলো তার স্বামীর কাছ থেকে শিখেছেন। স্বামীর কাছে আক্ষরিক জ্ঞান এবং বই পড়ার শিক্ষা গ্রহণ করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি তার ভাইয়ের কাছ থেকেও একটি অনুপ্রেরণা পান। তার স্বামীর নামে একটি স্কুল তৈরি করেন। স্কুল তৈরির পরও তাকে অনেক বাধা বিপত্তি মোকাবিলা করতে হয়। কারণ, স্বামীর নামে যে স্কুল করেছিলেন সেখানে ছাত্রী পড়ানো যেত না। তিনি নিজের বাড়ির বাইরে গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করে নিয়ে আসতেন। এটা করতে গিয়ে অনেক পরিবারের বাধা এবং অনেক প্রতিবন্ধকতা এসেছে। তিনি দমে যাননি কখনো। তার সাহসী ভূমিকা সব সময় আমরা স্মরণ করি।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
বিষয়: #নির্বাচন ২০২৪