বুধবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » রাজনীতি » আ. লীগ এখন লোক ভাগানোর দলে পরিণত হয়েছে: রিজভী
আ. লীগ এখন লোক ভাগানোর দলে পরিণত হয়েছে: রিজভী
আওয়ামী লীগ এখন ‘লোক ভাগানো’র দলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির সাচ্চা কাওকে হালুয়া রুটির লোভে রাজদলে ভাড়া করতে পারেনি। গুটি কয়েক উচ্ছিষ্ট পূর্ব থেকে দল বিতাড়িত কিছু গণধিকৃতকে টাকার বিনিময়ে ভাগিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন লোক ভাগানোর দলে পরিণত হয়েছে।
৬ ডিসেম্বর, বুধবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মানে এটা কি ধরনের ছোটলোকি? আমরা বিভিন্ন পাড়ায়-মহল্লায় শুনি কিছু মানুষজন থাকে নীতিহীন, নীতিবিবর্জিত তারা পাশের বাড়ির কাজে লোককে ভাগিয়ে নিয়ে যায় বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন-টলোভন দিয়ে।
এই সমস্ত মানুষদেরকে অন্যান্য মানুষরা, ভদ্রলোকরা যারা সুশীল, সুশিক্ষিত মানুষরা এরা খুবই অবজ্ঞার চোখে দেখে, বাজে মানুষ হিসেবে দেখে। এখন সেই দলে পড়েছে আওয়ামী লীগ, লোক ভাগানোর দলে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ। কাজের লোক ভাগিয়ে নিয়ে যায় সেই সমস্ত ব্যক্তিদের সমপর্যায় এখন আওয়ামী লীগ।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, তাদের (সরকার) লজ্জা হওয়া উচিত যে, দেড় যুগ ধরে এতো রাষ্ট্রীয় লোক লস্কর মাঠে নামিয়ে এতো নগদ অর্থ বিতরণ, ব্লাকমেইলিং, এমপি-মন্ত্রী করার প্রলোভন দিয়ে পর্বতের মূষিক প্রসবের মতো অবস্থা হলো। যাঁদের কিনে ভোটে ভিড়িয়েছে তাদের দুই-একজন ছাড়া কারো নাম পর্যন্ত শোনিনি দেশের মানুষ।
এমপি হওয়ার জন্য জনগণের কাছে নয়, আওয়ামী লুটেরা চক্র এবং তাদের দোসররা এখন মাফিয়াদের বর্তমান আস্তানা গণভবনের দিকে ছুটছে। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ চলছে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবাই হাস্যকরভাবে আকুতি জানাচ্ছেন সংসদে যাওয়ার জন্য। তারা কেউ সরকার গঠনের কথা ভাবছেন না। তারা শুধু সংসদে যেতে চান। তাই তারা শেখ হাসিনার মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি তার হাতে রাখা ‘হাড্ডি’ দিয়েছেন আরেক নেতার হাতে। এখন ‘হাড্ডি’ বিলানোর দায়িত্ব সেই নেতার। যে রগড় চলছে ভোট ঘিরে তা ইতিহাসে অদৃশ্যপূর্ব।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা তার রেজিমের প্রধান বিরোধীদল বানিয়েছেন যাদের সেই জাতীয় পার্টির মহাসচিব গতকাল বলেছেন, সরকার আশ্বাস দিয়েছে বলেই নির্বাচনে এসেছি। কি ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে তা জাতীয় পার্টির মহাসচিবের বক্তব্যে স্পষ্ট। শেখ হাসিনার আর্শীবাদ ছাড়া দেশে কেউ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতাও নেই।
গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ১২ কোটি ভোটারের কাছে আমাদের আহ্বান আপনারা কারো প্রহসনের নির্বাচন করার স্বার্থ সিদ্ধিতে নিশ্চিয়ই অংশ নিবেন না, আপনারা অংশ নেবেন, এটা আমরা প্রত্যেকে জানি এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বও জানে।
রিজভী আরও বলেন, যারা এই পাতানো সিলমোহরের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা করছেন, তাদেরকে আমি বিএনপির পক্ষ থেকে উদাত্ত্ব আহ্বান জানাচ্ছি আপনাদের যদি নূন্যতম দেশপ্রেম থাকে, যদি মনুষ্যত্ব থাকে, বিবেক বিবেচনাবোধ থাকে তবে ফিরে আসুন। আপনারা মীরজাফরের উত্তরসূরী হবেন না। ১৮ কোটি মুক্তিকামী মানুষের ঘৃণা রুদ্ররোষের শিকার হবেন না।
প্রজাতন্ত্রের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাগ-বাটোয়ারার পাতানোর নির্বাচনে কেউ কোন সহযোগিতা করবেন না। ভোটাররা ভোটদান থেকে বিরত থাকুন। যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা প্রত্যাহার করুন। অন্যথায় এই অমার্জনীয় অপকর্মের জন্য জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না। ইতিহাসের পাতায় আপনাদের নাম বেইমান-মীরজাফরের পাশে উতকীর্ণ থাকবে। আপনাদের একদিকে স্বাধীনতার পতাকা অন্যদিকে নাতসীবাদী স্বৈরাচার-গোলামীর জিঞ্জির। আপনারা দেশপ্রেম ও ইমানী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার চেষ্টা করুন।
গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে ৩৬০ জনের অধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার ও ১৮ মামলায় ১ হাজার ৭৮৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান রিজভী।
বিষয়: #নির্বাচন ২০২৪