শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
মঙ্গলবার ● ২৮ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » ধর্ম » মৃত্যুর প্রথম রাত কেমন হবে! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
প্রথম পাতা » ধর্ম » মৃত্যুর প্রথম রাত কেমন হবে! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
১৪১ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ২৮ নভেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মৃত্যুর প্রথম রাত কেমন হবে! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।

মৃত্যুর প্রথম রাত কেমন হবে! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী: মৃত্যু থেকে আমরা কেউ বাঁচতে পারব না। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, কুল্লু নাফসিন জাইকাতুল মাউত-ইকাতুল মাউত। অর্থাৎ প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। মৃত্যু খুবই কষ্টের। মৃত্যু হলেই দামি বিছানা ও কষ্টে অর্জিত বাড়ি থেকে নিচে নামিয়ে মসজিদের খাটিয়ায় শুইয়ে দেওয়া হবে। মসজিদের মাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে মৃত্যুর সংবাদটি। আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশী শেষবারের মতো আমার চেহারাটা এক নজর দেখতে আসবে। বরইপাতা দিয়ে পানি গরম করে সেই পানি দিয়ে শেষ গোসল করাবে। দামি ও রঙিন পোশাক নয়, বাজারের সাদা কাফন শরীরে জড়িয়ে দেবে। আমার নামে ডাকা মুহূর্তের মধ্যেই বন্ধ করে সবাই আমাকে লাশ বলে সম্বোধন করবে। ছেলেমেয়ে, ভাইবোন কাঁদতে থাকবে। আঃ আমিও এ দৃশ্য দেখতে থাকব। কিন্তু কোনো কথা বলার শক্তিই পাব না। জানাজা দিয়ে কবরের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি খাটিয়ায় শুইয়ে আর্তনাদ করতে থাকব। যা পৃথিবীর কোনো মানুষ শুনবে না। এ ব্যাপারে হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) রসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, ‘যখন মৃত ব্যক্তিকে পুরুষ তাদের কাঁধে করে নিয়ে যায় তখন যদি সে নেককার হয় তাহলে সে বলে, আমাকে জান্নাতে পৌঁছে দাও। আর যদি বদকার-গুনাহগার হয় তাহলে বলতে থাকে, হায় আফসোস! একে (মৃত ব্যক্তিকে) কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ওরা। মানুষ ছাড়া সবাই তার আর্তনাদ শুনতে পাবে। আর মানুষ যদি মৃত ব্যক্তির এসব আহ্বান শুনত তবে তারা বেহুঁশ হয়ে পড়ত।’ (বুখারি)

আহ, কি নির্মম পরিণতি হবে তখন আমার। কবরের পাশে আমাকে রেখে দুজন কবরে নামিয়ে দেবে। তখন ভাবতে থাকব এ দুজনই আমার সঙ্গী। হঠাৎ তারা আমাকে রেখে উঠে যাবে। আমি চিল্লিয়ে কাঁদতে থাকব। আত্মীয়-প্রতিবেশী বন্ধুরা সবাই ওপরে রয়েছে। শুধু আমি একাই মাটিতে শুয়ে আছি। ডানে-বাঁয়ে-নিচে মাটি। নেই কোনো বিছানা কিংবা বালিশ। শুধু একটু আকাশ দেখা যায়। মিনিটের মধ্যেই আকাশও দেখা যাবে না। বাঁশ, পাটি ও ওপরে মাটি দিয়ে আমার মাটির ঘরটাকে অন্ধকার বানিয়ে দেবে। তারা কিছুটা সময় দোয়া করে একা রেখে চলে যাবে। দুনিয়ার কোনো আলো-বাতাস কিংবা শব্দ আর শুনতে পাব না। একা একাই থাকতে হবে ঘণ্টা, সপ্তাহ, মাস, বছরের পর বছর। একসময় আমার কবরের চিহ্নটিও মুছে যাবে।
প্রিয় পাঠক! আসুন একটু চিন্তা করি, আমাকে যে কবরে রাখা হবে এ কবরের প্রথম রাত কীভাবে কাটাব? আমার সঙ্গে ফেরেশতারা কেমন আচরণ করবে? আমার জন্য জান্নাত, জাহান্নাম কোনটি অপেক্ষা করছে? মহান আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হওয়ার পর আমার অবস্থা কেমন হবে? আমার কৃতকর্মের জন্য কী জবাব দেব? কীভাবে পুলসিরাত পার হব? আমার জন্য হাশরের উত্তপ্ত ময়দানে একটু ছায়ার ব্যবস্থা হবে কি? আমি হাউসে কাওসারের পানি পান করার সুযোগ পাব কি?

আসুন নিজেকে একটু প্রশ্ন করি আমি কে? দুনিয়ায় কেন এসেছি? আমার কাজ কী? এরপর কোথায় যাব? আমার গন্তব্য কোথায়? এ প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে কি কোনো চিন্তাভাবনা আছে? আমি কোনো পরিকল্পনা করেছি? অস্থায়ী এই দুনিয়ার জীবনে এ প্রশ্নগুলো নিজেকে করুন এবং উত্তর খোঁজার চেষ্টা করুন। উত্তর খুঁজে পেলেই কবরের প্রথম রাতটিতে কোনো ভয় থাকবে না। পরিবর্তন হতে হবে নিজেকে। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি বুদ্ধিমান যে নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মৃত্যুর পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করে।’ (তিরমিজি) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন আমাদের সকলকে উপরোক্ত আলোচনা গুলোর প্রতি গুরুত্ব সহকারে আমল করার তাওফিক দান করুন আমীন।

লেখক : বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।



বিষয়: #  #  #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)