রবিবার ● ২৬ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » বিশেষ প্রতিবেদন » আওয়ামী লীগের কাছে অন্তত ৭০ আসন চায় ১৪ দল
আওয়ামী লীগের কাছে অন্তত ৭০ আসন চায় ১৪ দল
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী আগামী ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন। আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিবে বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বেশ কয়েকটি দলও ক্ষমতাসীন দলের সাথে জোটগতভাবে অংশ নেয়ার কথা জানিয়েছে।
মনোনয়ন জমাদানের আর মাত্র তিন দিন হাতে থাকলে এখনও ঝুলে আছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের আসন বণ্টন। তবে দলীয়ভাবে নিজেদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে শরিক দলগুলো। এসব দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে অন্তত ৬০-৭০টি আসনে মনোনয়ন চাইবেন তারা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাথে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেনি শরিক দলগুলো। তবে নৌকার প্রার্থী চূড়ান্তের পর দর-কষাকষি শুরু হতে পারে। সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৭ নভেম্বর) গণভবনে শরিক দলের নেতাদের সাথে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৪ দলীয় জোট গঠনের পর এখন পর্যন্ত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটভুক্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন জোট নেতারা। এর মধ্যে নবম জাতীয় নির্বাচনে ১৪, দশম জাতীয় নির্বাচনে ১৮ ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জোট শরিক দলগুলোকে ১৩ আসন ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছিলেন শরিক দলের ৫ নেতা। কিন্তু গত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগ একলা চলার নীতি গ্রহণ করে। মন্ত্রিসভায় ১৪ দল ও শরিকদের বাদ দেয়ায় জোটের মধ্যে স্পষ্টত হতাশা ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল।
শরিক দলের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টি ৩০টি, জাসদ ১০টি, তরীকত ফেডারেশন ১৫টি, সাম্যবাদী দল অন্তত ১০টি আসন, জাতীয় পার্টি (জেপি) ৫-৭টি আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চায়। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে নিজ দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছে শরিক দলগুলো। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের বিপরীতে ১৮১টি আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ইতোমধ্যে ৩০টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে শরিক দলগুলোকে ১২-১৪টি আসন দেয়া হতে পারে। ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগের দিন দলের প্রার্থীদের সরিয়ে শরিক দলগুলোকে সমর্থন দেওয়া হবে।
গত শুক্রবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শরিক দল হোক, আর যে-ই হোক, আমাদের বিবেচনায় যেটা আসবে, আমি আমার দলের প্রার্থী নির্বাচনে জনপ্রিয় প্রার্থীকে বাছাই করছি। অন্য দল থেকে এলেও তার জনপ্রিয়তা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের কাছে যারা গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে, তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, তারা ইলেক্টেবল না; উইনেবল না। জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা নাই, তাদের আমরা মনোনয়ন দিচ্ছি না।
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে ভোট করার কথা জানিয়ে জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন, সাম্যবাদী দল ও গণতন্ত্রী পার্টি নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে। এছাড়া বিকল্পধারাও নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চায় বলে জানিয়েছে।
জানতে চাইলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার বিবার্তাকে বলেন, আমরা দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছি। ৩০০ আসনের বিপরীতে ১৮১ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আসন বণ্টন নিয়ে এখনো কোনো কথা হয়নি। যে কয়টি মনোনয়ন দেয়া হবে তারা নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। আর বাকিরা জাসদের দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবেন।
তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বিবার্তাকে বলেন, আমরা জোটগতভাবে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছি। শরিক হিসেবে কয়টি আসন আমাদের দেয়া হচ্ছে, এখন পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের আসন ভাগাভাগির বিষয়ে আলোচনা হবে।
গণতন্ত্রী পার্টি মহাসচিব ডা. শাহাদাত হোসেন বিবার্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখনও আসন বণ্টন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে আলোচনা করে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। জোটের দল হিসেবে যে কয়টি মনোনয়ন দেয়া হবে, তারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবে।
বিষয়: #নির্বাচন ২০২৪