মঙ্গলবার ● ২১ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » বিশেষ সংবাদ » যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রিল্যান্সারদের শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রিল্যান্সারদের শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ
বিশ্বব্যাপী কর্মশক্তির একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে ফ্রিল্যান্সিং। বিশেষ করে বর্ধিত কাজের কারণে যা দূর থেকে সম্পন্ন করা যায়। ফ্রিল্যান্সাররা অবস্থান নির্বিশেষে যে কাউকে কাজের সুযোগ দেয় এবং কম খরচে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
সম্প্রতি মার্কিন সাময়িকী CEOWorld Magazine-এর ১৯ এপ্রিল ২০২৪-তে প্রকাশিত Best Countries for Hiring Freelancers 2024-এ ৩০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় ২৯তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত তথ্য ও প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কোন দেশের কর্মীদের চাহিদা বেশি, তা নিয়ে সিইওওয়ার্ল্ড।
ফ্রিল্যান্স কাজের ধরন, ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা, আর্থিক অবস্থানসহ প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বিষয় যোগ করে বিভিন্ন দেশকে স্কোর নম্বর দেয়া হয়েছে।
যাঁরা ফ্রিল্যান্সারদের কাজ দিচ্ছেন, তাঁদের ভাষ্যে ২০২৪ সালের সেরা কয়েকটি দেশের ফ্রিল্যান্সারদের তালিকা প্রকাশ করেছে। কাজের ধরন, ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা, আর্থিক অবস্থানসহ প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বিষয় যুক্ত করে বিভিন্ন দেশের জন্য নম্বর দেওয়া হয়েছে। সেই নম্বর বা স্কোর অনুসারে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় ৯৭ দশমিক ৪৬ নম্বর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইন্টারনেট সোসাইটির ২০১৯-এর ডিসেম্বরের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, পৃথিবীর প্রায় ২৪% আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে ভারতের ফ্রিল্যান্সাররা; আর এর পরেই ১৬% কাজের ভাগ নিয়ে বাংলাদেশিদের অবস্থান।
সিইওওয়ার্ল্ডের তালিকায় ৯৫.৭১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। আর তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য দেশটির স্কোর ৯৪.৮১। তালিকায় চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম অবস্থানে আছে ফিলিপাইন, ইউক্রেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, ব্রাজিল ও পর্তুগাল।
দক্ষিণ এশিয়া থেকে শীর্ষ ৩০ দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ২৮তম। পাকিস্তানের স্কোর ৪৮.৫৬ ও বাংলাদেশের স্কোর ৪৬.৯২।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর ট্রেন্ড লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে ২০২১ সালের আগে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং আগ্রহী সংখ্যার তুলনায় বর্তমানে ফ্রিল্যান্সারদের আগ্রহ দ্বিগুণ। মূলত বিশ্বের সবথেকে নামিদামি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আধিপত্য চোখে পড়ার মতো।
এছাড়াও বাংলাদেশি বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি পক্ষ থেকে ফ্রিল্যান্সিং শেখানোর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা আরো বিশাল এবং বড় হবে।
অনেকেই জানেন যে ফ্রিল্যান্সাররা বিশ্বব্যাপী কর্মশক্তির একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত। বিশ্বব্যাপী প্রায় ১.৫৭ বিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্মের বাজার বিশ্বব্যাপী ৩.৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অনুমান করা হয়। শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ফ্রিল্যান্সাররা গত বছর অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করেছে, যা তাদের মোট ডলার ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে এসেছে। গড়ে, বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সাররা প্রতি ঘণ্টায় ২১ ডলার উপার্জন করে। মজার বিষয় হলো, প্রায় ৭০% ফ্রিল্যান্সারদের বয়স ৩৫ বা তার কম।
বেসিসের সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর মনে করেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছে- নতুন নতুন টেকনোলজিতে আমাদের দক্ষতা অর্জন বা বৃদ্ধি না করা। আমরা এখনো এমন সব পরিষেবা দিয়ে থাকি, যা AI বা RPA ব্যবহার করে ফেলা যায়। ফলে ধীরে ধীরে আমাদের চাহিদা কমছে। ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিতে আমাদের ছেলেমেয়েদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে না পারলে এই চাহিদা আরো কমবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্লেষণধর্মী (analytical) ও সিদ্ধান্ত (decision based) নেওয়ার মতো কাজগুলো করতে পারলে কাজের পারিশ্রমিকও ২-৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে। ক্লিপিং পাথ বা ডাটা এন্ট্রির মতো শুধুমাত্র বেসিক কাজের দাম ও চাহিদা দিন দিন কমতেই থাকবে। তাই, অবিলম্বে আমাদের আইটি প্রফেশনালদের নতুন প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন ও বৃদ্ধির কাজে মনোনিবেশ করতে হবে।
বিষয়: #যুক্তরাষ্ট্র