শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

Somoy Channel
সোমবার ● ২০ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » অভিমানে তুমি-গল্পের শেষ লাইন
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » অভিমানে তুমি-গল্পের শেষ লাইন
৮৭ বার পঠিত
সোমবার ● ২০ মে ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

অভিমানে তুমি-গল্পের শেষ লাইন

অভিমানে তুমি-গল্পের শেষ লাইন“দেড় বছরের চুক্তিতে বিয়ে করতে হবে আমাকে। তার বিনিময়ে আপনার যতো লক্ষ টাকা লাগে আমি দিবো সমস্যা নেই। শুধু দেড় বছর আমার সাথে থাকবেন আপনি। এই দেড় বছরের মধ্যে আমার একটা সন্তান হবে। আর আমার সন্তান এর যখন ৮মাস বয়েস হবে তখন আপনি আপনার পথে আমি আমার মতো। আপনাকে আমি জোর করবো না, এই যে এটা আমার কার্ড যদি মনে হয় আপনি আমার শর্তে রাজি তাহলে আমাকে ফোন করে জানাবেন। দোস্ত তুই থাক অফিস সামলা আমি একটু আমার ফ্লাট এ যাবো।” (আব্রাহাম)

“মিস্টার আব্রাহাম আপনি কি একটা মেয়ের অসহায়’তার সুযোগ নিতে চাচ্ছেন? আপনি যখন দেখলেন একটা মেয়ে অসহায় হয়ে পরেছে তখন আপনি তাকে এতো বাজে একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে বসলেন! ওয়াও সো…” (ফারিহা)

“মিস ফারিহা রাইট? আপনি আমাকে কথা শোনাতে আসবেন না প্লিজ। আমি কি আপনাকে জোর করেছি!? আর আপনার কি মনে হয়? কোনো বড়োলোক এর মেয়ে আমার পস্তাব এ রাজি হবে! না হবে না সে জন্য আপনার মতো অসহায় মানুষদের বলতে বাদ্ধ হলাম আমি। আমি আমার সিদ্ধান্ত জানাতে আসছি, এখন বাকিটা আপনি আপনার মন যা বলে তাই মানবেন।” (আব্রাহাম) #গল্প_Story

“কিন্তু আপনি যে অসহায়’তার সুযোগ নিচ্ছেন সেটা কি জানেন? এমন একটা পর্যায়ে আপনি আমাকে এই কথাটা শুনালেন। আপনি তো ভেবে নিছেন আমি রাজি হবো। কারণ আমার যে টাকার দরকার।” (ফারিহা)

“হ্যা ধরতে পারেন আমি আপনার অসহায়’তার সুযোগ নিলাম। সো? আপনার টাকার দরকার হলে আমার কথা মানবেন না হয় না। আমি সময় ওয়েস্ট করা পছন্দ করি না, আয়ান হাহা তুই ইন্টার পাশে মিস ফারিহাকে কি চাকরি দিবি আমি ও দেখি, গেলাম থাক।” (আব্রাহাম)

“আপনি কিন্তু আয়ান স্যার কে হুমকি দিচ্ছেন। কেনো এমন করছেন আমার সাথে? আমি তো শুধু একটা জব চাই। প্লিজ আমার সাথে এমন করবেন না। যেখানে যাই সেখানেই টাকা চায়। আর আপনি তো শরীর কিনতে চাচ্ছেন।” (ফারিহা)

__ফারিহার আর্তনাদ আব্রাহামের কানে পৌঁছায় না। গাড়ির চাবি আঙ্গুলের মাথায় ঘুরাতে ঘুরাতে অফিস থেকে বেড়িয়ে যায়। আয়ানের পায়ের সামনে বসে ফারিহা নিজের সমস্যার কথা বলে। কিন্তু আয়ান নিজে ও কিছু বলতে পারছে না। অফিস তো আব্রাহামের, তাকে নিজের ভাইয়ের মতো দেখে বলে বসের একটা আসন দেয়। আয়ানের মা-বাবা এক্সিডেন্ট এ মারা যাওয়ার পর থেকে আয়ান আব্রাহামের সাথেই থাকে। ফারিহা বুঝতে পারে, কেউ তাকে ইন্টার পাশে জব দিবে না। যখন দিবেই না তখন ইন্টারভিউ এর জন্য তাকে ডাকার কি দরকার ছিলো? কেউ কেউ তো আরো বাজে প্রস্তাব দিয়েছে। ভাই টার দিকে তাকিয়ে ফারিহা আজ এই স্থানে। যে ভাই ছোট থেকে মানুষ করলো, সেই ভাই আজ অসুস্থ। ১০/১২ লক্ষ্য টাকা লাগবে চিকিৎসা হতে। যা টাকা ছিলো ২ মাসে সবটা শেষ। ফারিহা অফিস রুম থেকে বেড়িয়ে একটা রিক্সা ধরে বাড়ির পথে রওনা হয়। আর আয়ান আবারো নিজের কাজে লেগে পড়ে। আব্রাহামের কাহিনি তার নিজের ও ভালো লাগছে না। এভাবে কি কোনো মেয়ে’কে সে পাবে? কিন্তু কিছু করার নাই। ফারিহার আশা বাদ দিয়ে অন্য মেয়েদের সেই একই প্রস্তাব দিতে থাকে। ফারিহা বাসায় এসে ভাইয়ের মাথার কাছে বসে। মুনির আসতে আসতে চোখ খোলে, পিচ্চি বোনটার দিকে তাকিয়ে বলে-

“এতো দৌঁড় ঝাপ করতে তোকে কে বলেছে? ইন্টার পাশে ঢাকা শহরে চাকরি নেই। আমি মাস্টার্স পাশ, সে জন্য একটা কোম্পানিতে চাকরি হয়েছিল। এখন তো কাজে যেতে পারি না আমি। তুই আর কোথাও যাস না।” (মুনির)

“ভাইয়া, কেনো আমাদের মা-বাবা নেই? তারা থাকলে তো তোমার এতো কষ্ট হতো না। মা কেনো আ’ত্ম/হ’ত্যা করছিলো বলো। তোমার পায়ে ইনফেকশন হচ্ছে দিনদিন। টাকা ছাড়া চিকিৎসা হবে কিভাবে?” (ফারিহা)

“আমার চিন্তা করিস না, সারাদিন থেকে না খেয়ে আছিস। যা রান্না করে খাবার নিয়ে আয়, আমি ও তো খাইনি কিছু।” (মুনির)

“তুমি আমাকে ছোট থেকে মানুষ করছো ভাইয়া। তুমি অসুস্থ আর আমি বাসায় বসে থাকবো? দিন চলতে হবে তো।” (ফারিহা)

__মুনির বলার মতো কিছু পায় না। পায়ের ব্যাথায় কথা বলতে ও কষ্ট হচ্ছে। একটা ছোট্ট এক্সিডেন্ট থেকে যে পায়ের এতো বড় ক্ষতি হবে ভাবতে ও পারে নাই সে। এখন পা ফুলে সেখান থেকে মাংস পঁচার মতো হয়ে যাচ্ছে। [পরিচয় : ফারিহা রাহমান, ছোট বেলায় বাবা মারা যায়। মা অ’ত্ম/হ’ত্যা করেছে তার বয়েস যখন ৫ তখন। শাশুড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সেই পথ বেছে নেওয়া তার। ফারিহার বড় ভাই মুনির রাহমান। এসএসসির পর পর বোনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেড় হতে হয় তাকে।] ফারিহা রান্না করে একটা প্লেটে খাবার নিয়ে মুনিরের রুমে আসে। মুনির’কে দেখে হাত থেকে খাবারের প্লেট পড়ে যায়। পায়ের আঘাতের জায়গা ফেটে ফেটে রক্ত পড়ছে। মুনির বিছানায় ছটফট করছে। ফারিহা দৌড়ে বাহিরে যায়। গাড়ি ঠিক করে এসে মুনির’কে সাথে নিয়ে হসপিটালে যায়। প্রায় ২ ঘন্টা পর ডাক্তার এসে জানায় -

“৪/৫ দিনের মধ্যে অপারেশন করতে হবে মিস ফারিহা। নাহলে আপনার ভাইয়ের পা এই জায়গা থেকে খুলে পড়বে। তখন আমাদের কিছু করার থাকবে না। পা কেটে ও ফেলতে হবে প্রয়োজন হলে। তাই আপনি তাড়াতাড়ি টাকা জোগাড় করুন।” (ডাক্তার মাহি)

__ফারিহা ভাবার জন্য সময় নেয় না। তার কাছে তার ভালো থাকার থেকে ও ভাইয়ের ভালো থাকা বেশি জরুরি। সেখান থেকে রিক্সা ধরে সোজা সেই অফিসে যায়। আব্রাহাম ফারিহা কে দেখে বসা থেকে উঠে পড়ে। আব্রাহাম ফারিহা কে এখানে আশা করে নাই। মেয়েটা যেভাবে তার সাথে কথা বলছিলো সকালে, ভেবে তো রাখছে ফারিহা কখনো রাজি হবে না। ফারিহাকে দেখে অবাক হয়ে বলে-

“আরে মিস ফারিহা যে! আপনাকে তো বলা হয়েছে। আপনি এই পড়াশোনা দিয়ে আমাদের এখানে কোনো জব পাবেন না। আপনি এখন আসতে পারেন প্লিজ।” (আব্রাহাম)

“আমি আপনার শর্তে রাজি আছি। কিন্তু তার আগে আমার ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে। আমার ভাই হসপিটালে ভর্তি আছে। প্লিজ টাকা না হলে ভাইয়ার চিকিৎসা হবে না।” (ফারিহা)

“এখানে মজা করতে আসেছেন? সকালে তো খুব কথা শুনিয়ে চলে গেলে। দেখো তুমি এখন আসতে পারো, আমি অন্যদের সাথে যোগাযোগ করবো।” (আব্রাহাম)

“প্লিজ স্যার, আমি মিথ্যা বলছি না। আমি আপনার সব শর্তে রাজি আছি। প্লিজ আপনি আমাকে সাহায্য করুন। নাহলে আমার ভাই কে বাঁচানো সম্ভব হবে না।” (ফারিহা)

“এই পেপারে সাইন করো, আর তোমার ভাই কোথায় আছে আমাকে নিয়ে চলো।” (আব্রাহাম)

__আয়ান একটা পেপার বের করে আব্রাহামের হাতে দেয়। আব্রাহাম ফারিহাকে পেপার দিলে, পেপার না পড়েই ফারিহা সই করে দেয়। আব্রাহাম একটা সস্তির নিশ্বাস ফেলে। অবশেষে তার আশা পুরুন হলো। ফারিহার সাথে অফিস থেকে বেড়িয়ে যায়। ফারিহার চোখে পানি দেখে আব্রাহাম বিরক্ত হয়ে। মনে মনে বিরবির করে-

“মেয়ে মানুষ এতো নাটক বাজ কেনো? সব সময় তারা নাটক করে। আচ্ছা তাদের টাকার লোভ কেনো এতো? টাকা থাকলে কি সুখি হওয়া যায়? এই যে মেয়েটা যে সিদ্ধান্ত নিলো। তার আগে একটা বার ও ভাবলো না, জন্মের পর তার সন্তান মা ছাড়া একা একা বড় হবে কিভাবে?” (আব্রাহাম)

“স্যার এভাবে দাড়িয়ে থাকবেন? ভাইয়া হসপিটালে একা আছে। কি করবেন একটু তাড়াতাড়ি করুন প্লিজ। আমি তো আপনার সব কথা শুনতে রাজি তাহলে?” (ফারিহা)#গল্প_Story

“গাড়িতে গিয়ে উঠো, আমি আয়ানের সাথে দেখা করে আসি একটু। সামনের গাড়িয়ে বসো, আমি আসতেছি।” (আব্রাহাম)

__ফারিহা চোখের পানি মুছে গাড়িতে গিয়ে বসে। আব্রাহাম প্রায় ১০ মিনিট পর আসে। পিছনের ছিটে গিয়ে ফারিহার পাশে বসে। ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করলে, আব্রাহাম ফারিহার দিকে তাকিয়ে বলে-

“আমার একটা কথা জানা হয়নি। তোমার কি মেডিকেল কোনো সমস্যা আছে নাকি? মানে বেবি হতে কোনো সমস্যা হবে না তো!” (আব্রাহাম)

“না আমি সুস্থ” (ফারিহা)

__ফারিহা দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলে। অসহ্য লাগছে এসব তার। ভাইয়ের জন্য এমন একটা পথে পা বাড়ালো সে। যদি ভাই জানে তখন কি হবে? আর সে তো এক পুরুষে আসক্ত হতে চায়। তাহলে? চুক্তি শেষ হওয়ার পর সে কি করবে! ফারিহার ধ্যাণ ভাঙ্গে গাড়ির ঝাঁকি লাগার জন্য। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নামলে ফারিহা নেমে সামনে হাঁটতে থাকে। আব্রাহাম ডাক্তারের সাথে কথা বলে মুনিরের কাছে যায়। ছেলেটাকে এক পলক দেখে সেখান থেকে চলে আসে। ফারিহার থেকে নাম্বার নিয়ে বলে-

“চিন্তা করো না, তোমার ভাইয়ের কাগজ পত্র রেডি করবো দু একদিনের ভিতরে। আমি দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিবো। সেখান থেকে একদম সুস্থ হয়ে ফিরবে সমস্যা নেই। ২ বছর সময় লাগলে ও আমি সব খরচ দিবো। আর এই কয়দিন তোমার ভাইয়া হসপিটালে থাকবে।” (আব্রাহাম)

“ধন্যবাদ, আপনি তাহলে যান। আমি বাসায় গিয়ে ভাইয়ার জন্য খাবার নিয়ে আসবো রাতের। নাকি আজ থেকেই আপনার সাথে থাকতে হবে? ভাইয়া যাওয়ার পর থাকি?” (ফারিহা)

“আমি সেটা নিয়ে কি কিছু বলেছি! তোমার ভাইয়ের কিছু কাগজ পত্র লাগবে। আমি তোমার সাথে যাবো চলো। আর ওখানের বাসা ছেড়ে দিবে তুমি। কারণ তোমার ভাইয়া তো এখন বাসায় ফিরবে না। আর তুমি আমার সাথে থাকবে।” (আব্রাহাম)

“আচ্ছা” (ফারিহা)

__ফারিহার সাথে আব্রাহাম ও তাদের ফ্লাটে যায়। ফ্লাট ঘুরে আব্রাহাম ভ্রু কুঁচকে ফেলে। কিছুই নাই রুমে, খুব দরকার যা সে গুলো আছে শুধু। কিছুক্ষণ পর আয়ান আসলে ফারিহার সব জামা কাপড় তার হাতে দিয়ে পাঠায়। আব্রাহাম বিছানায় গাঁ এলিয়ে দেয়। ফারিহা রান্না বসিয়ে গোসল করার জন্য রুমে যায়।

“স্যার আপনি কি গোসল করছেন? নাকি গোসল করবেন কোনটা।” (ফারিহা)

“আমাকে স্যার বলতে হবে না। আর তুমি করে বলতে পারো সমস্যা নাই। আর গোসল! সকালে আমি গোসল করে বের হয়েছি।” (আব্রাহাম)

“আচ্ছা, আমার রান্না কি খাবেন? নাকি বাহিরে খাবেন।” (ফারিহা)

“কি রান্না করছো?” (আব্রাহাম)

__ফারিহা বিরক্ত হয়, ছেলেটা একদম খুঁটে খুঁটে সব শুনতিছে। আর শুনবে না কেনো? বড়লোক বাড়ির ছেলে, সব কিছু কি খাবে! ফারিহা কিছু না বলে গোসল করার জন্য জামা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। গোসল করে বের হয় ১০ মিনিটের মাথায়। পড়নে একটা নীল রং এর থ্রি পিস। আব্রাহাম একবার সে দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়। ফারিহা মাথায় একটা তোয়ালে পেচিয়ে রান্না ঘরে যায়। প্রায় ৪০ মিনিট পর সে একটা খাবারের প্লেট নিয়ে আব্রাহামের কাছে আসে। পায়ের আওয়াজ শুনে আব্রাহাম বলে-

“এতো সময় লাগে রান্না করতে? আমি বাসায় যাবো। তোমার এখানে যা জিনিস আছে, সেসব নিয়ে আয়ান ভেবে দেখবে। এখানে আর আসার প্রয়োজন নাই তোমার।” (আব্রাহাম)

“আচ্ছা, উঠে খেয়ে নেন। ডিম ছিলো চারটা, ডিমের ভুনা করেছি। আপনি কি এসব খান? নাকি শুধু মাংস!” (ফারিহা)#গল্প_Story

“এই তোমার কি মনে হয়? বড়লোক মানুষ মাংস খায় শুধু নাকি! তারা কি ডিম দুধ খায় না!” (আব্রাহাম)

__আব্রাহাম ধমক দিয়ে কথাটা বলে। ফারিহা কেঁপে উঠে, এই মানুষটার সাথে সে ১.৫ বছর থাকবে কিভাবে? নাক মুখ কুঁচকে খাবার প্লেট সামনে দেয়। আব্রাহাম খাবারের দিকে তাকিয়ে একটা কাঁশি দেয়। তারপর বলে-

“ভাত কম হয়েছে আর একটু হবে কি প্লিজ?” (আব্রাহাম)

__ফারিহা দৌঁড়ে কিচেনে যায়। আর একটা প্লেট থেকে ভাত এনে আব্রাহামের প্লেটে দেয়। আব্রাহাম হা হয়ে দেখছে সেটা। মাথা চাপরায় সে। এ কাকে বিয়ে করলো! এবার কিছুটা জোরে ধমক দিয়ে বলে-

“পাগল হয়েছো? এতো ভাত আমি খাবো নাকি! তুলে নেও। আর তুমি ও তাড়াতাড়ি খেয়ে নেও। আমাকে তোমার ভাইয়ের কাগজ পত্র দিও নিয়ে যাবো।” (আব্রাহাম)

__ফারিহা ধমক শুনে কেঁদেই দেয়। এভাবে কেউ কখনো তাকে ধমক দিয়ে কথা বলে নাই। আব্রাহাম বিরক্ত হয়ে হালকা খাবার খেয়ে উঠে পড়ে। ফারিহা তাড়াতাড়ি সব ঠিক করে বেড়িয়ে পড়ে। চারদিনের মাথায় মুনির’কে চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আজ রাত থেকে ফারিহা আব্রাহামের সাথেই থাকবে। সে জানে ও না, আব্রাহামের মা-বাবার সাথে থাকবে নাকি একা। কিছু কাজ করছে না তার মাথায়। আব্রাহাম ফারিহাকে নিয়ে মার্কেটে যায়। ১০টা শাড়ি, ১৫ টা থ্রি পিস, আর ১০ সেট গেঞ্জি, প্লাজু কিনে। ফারিহা হা হয়ে সব দেখে। শুধু মনে মনে একটা কথা বলে-

“বড়লোক বুঝি এমনি হয়। এসব তো আমার ৫ বছরের জামা কাপড়। আর উনি? এমন করে গরীব দের দান করলে ও পাড়তো।” (ফারিহা)

[প্রথম পর্বে আশা করি সবাই রেসপন্স করবেন।]”দেড় বছরের চুক্তিতে বিয়ে করতে হবে আমাকে। তার বিনিময়ে আপনার যতো লক্ষ টাকা লাগে আমি দিবো সমস্যা নেই। শুধু দেড় বছর আমার সাথে থাকবেন আপনি। এই দেড় বছরের মধ্যে আমার একটা সন্তান হবে। আর আমার সন্তান এর যখন ৮মাস বয়েস হবে তখন আপনি আপনার পথে আমি আমার মতো। আপনাকে আমি জোর করবো না, এই যে এটা আমার কার্ড যদি মনে হয় আপনি আমার শর্তে রাজি তাহলে আমাকে ফোন করে জানাবেন। দোস্ত তুই থাক অফিস সামলা আমি একটু আমার ফ্লাট এ যাবো।” (আব্রাহাম)

“মিস্টার আব্রাহাম আপনি কি একটা মেয়ের অসহায়’তার সুযোগ নিতে চাচ্ছেন? আপনি যখন দেখলেন একটা মেয়ে অসহায় হয়ে পরেছে তখন আপনি তাকে এতো বাজে একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে বসলেন! ওয়াও সো…” (ফারিহা)

“মিস ফারিহা রাইট? আপনি আমাকে কথা শোনাতে আসবেন না প্লিজ। আমি কি আপনাকে জোর করেছি!? আর আপনার কি মনে হয়? কোনো বড়োলোক এর মেয়ে আমার পস্তাব এ রাজি হবে! না হবে না সে জন্য আপনার মতো অসহায় মানুষদের বলতে বাদ্ধ হলাম আমি। আমি আমার সিদ্ধান্ত জানাতে আসছি, এখন বাকিটা আপনি আপনার মন যা বলে তাই মানবেন।” (আব্রাহাম) #গল্প_Story

“কিন্তু আপনি যে অসহায়’তার সুযোগ নিচ্ছেন সেটা কি জানেন? এমন একটা পর্যায়ে আপনি আমাকে এই কথাটা শুনালেন। আপনি তো ভেবে নিছেন আমি রাজি হবো। কারণ আমার যে টাকার দরকার।” (ফারিহা)

“হ্যা ধরতে পারেন আমি আপনার অসহায়’তার সুযোগ নিলাম। সো? আপনার টাকার দরকার হলে আমার কথা মানবেন না হয় না। আমি সময় ওয়েস্ট করা পছন্দ করি না, আয়ান হাহা তুই ইন্টার পাশে মিস ফারিহাকে কি চাকরি দিবি আমি ও দেখি, গেলাম থাক।” (আব্রাহাম)

“আপনি কিন্তু আয়ান স্যার কে হুমকি দিচ্ছেন। কেনো এমন করছেন আমার সাথে? আমি তো শুধু একটা জব চাই। প্লিজ আমার সাথে এমন করবেন না। যেখানে যাই সেখানেই টাকা চায়। আর আপনি তো শরীর কিনতে চাচ্ছেন।” (ফারিহা)

__ফারিহার আর্তনাদ আব্রাহামের কানে পৌঁছায় না। গাড়ির চাবি আঙ্গুলের মাথায় ঘুরাতে ঘুরাতে অফিস থেকে বেড়িয়ে যায়। আয়ানের পায়ের সামনে বসে ফারিহা নিজের সমস্যার কথা বলে। কিন্তু আয়ান নিজে ও কিছু বলতে পারছে না। অফিস তো আব্রাহামের, তাকে নিজের ভাইয়ের মতো দেখে বলে বসের একটা আসন দেয়। আয়ানের মা-বাবা এক্সিডেন্ট এ মারা যাওয়ার পর থেকে আয়ান আব্রাহামের সাথেই থাকে। ফারিহা বুঝতে পারে, কেউ তাকে ইন্টার পাশে জব দিবে না। যখন দিবেই না তখন ইন্টারভিউ এর জন্য তাকে ডাকার কি দরকার ছিলো? কেউ কেউ তো আরো বাজে প্রস্তাব দিয়েছে। ভাই টার দিকে তাকিয়ে ফারিহা আজ এই স্থানে। যে ভাই ছোট থেকে মানুষ করলো, সেই ভাই আজ অসুস্থ। ১০/১২ লক্ষ্য টাকা লাগবে চিকিৎসা হতে। যা টাকা ছিলো ২ মাসে সবটা শেষ। ফারিহা অফিস রুম থেকে বেড়িয়ে একটা রিক্সা ধরে বাড়ির পথে রওনা হয়। আর আয়ান আবারো নিজের কাজে লেগে পড়ে। আব্রাহামের কাহিনি তার নিজের ও ভালো লাগছে না। এভাবে কি কোনো মেয়ে’কে সে পাবে? কিন্তু কিছু করার নাই। ফারিহার আশা বাদ দিয়ে অন্য মেয়েদের সেই একই প্রস্তাব দিতে থাকে। ফারিহা বাসায় এসে ভাইয়ের মাথার কাছে বসে। মুনির আসতে আসতে চোখ খোলে, পিচ্চি বোনটার দিকে তাকিয়ে বলে-

“এতো দৌঁড় ঝাপ করতে তোকে কে বলেছে? ইন্টার পাশে ঢাকা শহরে চাকরি নেই। আমি মাস্টার্স পাশ, সে জন্য একটা কোম্পানিতে চাকরি হয়েছিল। এখন তো কাজে যেতে পারি না আমি। তুই আর কোথাও যাস না।” (মুনির)

“ভাইয়া, কেনো আমাদের মা-বাবা নেই? তারা থাকলে তো তোমার এতো কষ্ট হতো না। মা কেনো আ’ত্ম/হ’ত্যা করছিলো বলো। তোমার পায়ে ইনফেকশন হচ্ছে দিনদিন। টাকা ছাড়া চিকিৎসা হবে কিভাবে?” (ফারিহা)

“আমার চিন্তা করিস না, সারাদিন থেকে না খেয়ে আছিস। যা রান্না করে খাবার নিয়ে আয়, আমি ও তো খাইনি কিছু।” (মুনির)

“তুমি আমাকে ছোট থেকে মানুষ করছো ভাইয়া। তুমি অসুস্থ আর আমি বাসায় বসে থাকবো? দিন চলতে হবে তো।” (ফারিহা)

__মুনির বলার মতো কিছু পায় না। পায়ের ব্যাথায় কথা বলতে ও কষ্ট হচ্ছে। একটা ছোট্ট এক্সিডেন্ট থেকে যে পায়ের এতো বড় ক্ষতি হবে ভাবতে ও পারে নাই সে। এখন পা ফুলে সেখান থেকে মাংস পঁচার মতো হয়ে যাচ্ছে। [পরিচয় : ফারিহা রাহমান, ছোট বেলায় বাবা মারা যায়। মা অ’ত্ম/হ’ত্যা করেছে তার বয়েস যখন ৫ তখন। শাশুড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সেই পথ বেছে নেওয়া তার। ফারিহার বড় ভাই মুনির রাহমান। এসএসসির পর পর বোনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেড় হতে হয় তাকে।] ফারিহা রান্না করে একটা প্লেটে খাবার নিয়ে মুনিরের রুমে আসে। মুনির’কে দেখে হাত থেকে খাবারের প্লেট পড়ে যায়। পায়ের আঘাতের জায়গা ফেটে ফেটে রক্ত পড়ছে। মুনির বিছানায় ছটফট করছে। ফারিহা দৌড়ে বাহিরে যায়। গাড়ি ঠিক করে এসে মুনির’কে সাথে নিয়ে হসপিটালে যায়। প্রায় ২ ঘন্টা পর ডাক্তার এসে জানায় -

“৪/৫ দিনের মধ্যে অপারেশন করতে হবে মিস ফারিহা। নাহলে আপনার ভাইয়ের পা এই জায়গা থেকে খুলে পড়বে। তখন আমাদের কিছু করার থাকবে না। পা কেটে ও ফেলতে হবে প্রয়োজন হলে। তাই আপনি তাড়াতাড়ি টাকা জোগাড় করুন।” (ডাক্তার মাহি)

__ফারিহা ভাবার জন্য সময় নেয় না। তার কাছে তার ভালো থাকার থেকে ও ভাইয়ের ভালো থাকা বেশি জরুরি। সেখান থেকে রিক্সা ধরে সোজা সেই অফিসে যায়। আব্রাহাম ফারিহা কে দেখে বসা থেকে উঠে পড়ে। আব্রাহাম ফারিহা কে এখানে আশা করে নাই। মেয়েটা যেভাবে তার সাথে কথা বলছিলো সকালে, ভেবে তো রাখছে ফারিহা কখনো রাজি হবে না। ফারিহাকে দেখে অবাক হয়ে বলে-

“আরে মিস ফারিহা যে! আপনাকে তো বলা হয়েছে। আপনি এই পড়াশোনা দিয়ে আমাদের এখানে কোনো জব পাবেন না। আপনি এখন আসতে পারেন প্লিজ।” (আব্রাহাম)

“আমি আপনার শর্তে রাজি আছি। কিন্তু তার আগে আমার ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে। আমার ভাই হসপিটালে ভর্তি আছে। প্লিজ টাকা না হলে ভাইয়ার চিকিৎসা হবে না।” (ফারিহা)

“এখানে মজা করতে আসেছেন? সকালে তো খুব কথা শুনিয়ে চলে গেলে। দেখো তুমি এখন আসতে পারো, আমি অন্যদের সাথে যোগাযোগ করবো।” (আব্রাহাম)

“প্লিজ স্যার, আমি মিথ্যা বলছি না। আমি আপনার সব শর্তে রাজি আছি। প্লিজ আপনি আমাকে সাহায্য করুন। নাহলে আমার ভাই কে বাঁচানো সম্ভব হবে না।” (ফারিহা)

“এই পেপারে সাইন করো, আর তোমার ভাই কোথায় আছে আমাকে নিয়ে চলো।” (আব্রাহাম)

__আয়ান একটা পেপার বের করে আব্রাহামের হাতে দেয়। আব্রাহাম ফারিহাকে পেপার দিলে, পেপার না পড়েই ফারিহা সই করে দেয়। আব্রাহাম একটা সস্তির নিশ্বাস ফেলে। অবশেষে তার আশা পুরুন হলো। ফারিহার সাথে অফিস থেকে বেড়িয়ে যায়। ফারিহার চোখে পানি দেখে আব্রাহাম বিরক্ত হয়ে। মনে মনে বিরবির করে-

“মেয়ে মানুষ এতো নাটক বাজ কেনো? সব সময় তারা নাটক করে। আচ্ছা তাদের টাকার লোভ কেনো এতো? টাকা থাকলে কি সুখি হওয়া যায়? এই যে মেয়েটা যে সিদ্ধান্ত নিলো। তার আগে একটা বার ও ভাবলো না, জন্মের পর তার সন্তান মা ছাড়া একা একা বড় হবে কিভাবে?” (আব্রাহাম)

“স্যার এভাবে দাড়িয়ে থাকবেন? ভাইয়া হসপিটালে একা আছে। কি করবেন একটু তাড়াতাড়ি করুন প্লিজ। আমি তো আপনার সব কথা শুনতে রাজি তাহলে?” (ফারিহা)#গল্প_Story

“গাড়িতে গিয়ে উঠো, আমি আয়ানের সাথে দেখা করে আসি একটু। সামনের গাড়িয়ে বসো, আমি আসতেছি।” (আব্রাহাম)

__ফারিহা চোখের পানি মুছে গাড়িতে গিয়ে বসে। আব্রাহাম প্রায় ১০ মিনিট পর আসে। পিছনের ছিটে গিয়ে ফারিহার পাশে বসে। ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করলে, আব্রাহাম ফারিহার দিকে তাকিয়ে বলে-

“আমার একটা কথা জানা হয়নি। তোমার কি মেডিকেল কোনো সমস্যা আছে নাকি? মানে বেবি হতে কোনো সমস্যা হবে না তো!” (আব্রাহাম)

“না আমি সুস্থ” (ফারিহা)

__ফারিহা দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলে। অসহ্য লাগছে এসব তার। ভাইয়ের জন্য এমন একটা পথে পা বাড়ালো সে। যদি ভাই জানে তখন কি হবে? আর সে তো এক পুরুষে আসক্ত হতে চায়। তাহলে? চুক্তি শেষ হওয়ার পর সে কি করবে! ফারিহার ধ্যাণ ভাঙ্গে গাড়ির ঝাঁকি লাগার জন্য। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নামলে ফারিহা নেমে সামনে হাঁটতে থাকে। আব্রাহাম ডাক্তারের সাথে কথা বলে মুনিরের কাছে যায়। ছেলেটাকে এক পলক দেখে সেখান থেকে চলে আসে। ফারিহার থেকে নাম্বার নিয়ে বলে-

“চিন্তা করো না, তোমার ভাইয়ের কাগজ পত্র রেডি করবো দু একদিনের ভিতরে। আমি দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিবো। সেখান থেকে একদম সুস্থ হয়ে ফিরবে সমস্যা নেই। ২ বছর সময় লাগলে ও আমি সব খরচ দিবো। আর এই কয়দিন তোমার ভাইয়া হসপিটালে থাকবে।” (আব্রাহাম)

“ধন্যবাদ, আপনি তাহলে যান। আমি বাসায় গিয়ে ভাইয়ার জন্য খাবার নিয়ে আসবো রাতের। নাকি আজ থেকেই আপনার সাথে থাকতে হবে? ভাইয়া যাওয়ার পর থাকি?” (ফারিহা)

“আমি সেটা নিয়ে কি কিছু বলেছি! তোমার ভাইয়ের কিছু কাগজ পত্র লাগবে। আমি তোমার সাথে যাবো চলো। আর ওখানের বাসা ছেড়ে দিবে তুমি। কারণ তোমার ভাইয়া তো এখন বাসায় ফিরবে না। আর তুমি আমার সাথে থাকবে।” (আব্রাহাম)

“আচ্ছা” (ফারিহা)

__ফারিহার সাথে আব্রাহাম ও তাদের ফ্লাটে যায়। ফ্লাট ঘুরে আব্রাহাম ভ্রু কুঁচকে ফেলে। কিছুই নাই রুমে, খুব দরকার যা সে গুলো আছে শুধু। কিছুক্ষণ পর আয়ান আসলে ফারিহার সব জামা কাপড় তার হাতে দিয়ে পাঠায়। আব্রাহাম বিছানায় গাঁ এলিয়ে দেয়। ফারিহা রান্না বসিয়ে গোসল করার জন্য রুমে যায়।

“স্যার আপনি কি গোসল করছেন? নাকি গোসল করবেন কোনটা।” (ফারিহা)

“আমাকে স্যার বলতে হবে না। আর তুমি করে বলতে পারো সমস্যা নাই। আর গোসল! সকালে আমি গোসল করে বের হয়েছি।” (আব্রাহাম)

“আচ্ছা, আমার রান্না কি খাবেন? নাকি বাহিরে খাবেন।” (ফারিহা)

“কি রান্না করছো?” (আব্রাহাম)

__ফারিহা বিরক্ত হয়, ছেলেটা একদম খুঁটে খুঁটে সব শুনতিছে। আর শুনবে না কেনো? বড়লোক বাড়ির ছেলে, সব কিছু কি খাবে! ফারিহা কিছু না বলে গোসল করার জন্য জামা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। গোসল করে বের হয় ১০ মিনিটের মাথায়। পড়নে একটা নীল রং এর থ্রি পিস। আব্রাহাম একবার সে দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়। ফারিহা মাথায় একটা তোয়ালে পেচিয়ে রান্না ঘরে যায়। প্রায় ৪০ মিনিট পর সে একটা খাবারের প্লেট নিয়ে আব্রাহামের কাছে আসে। পায়ের আওয়াজ শুনে আব্রাহাম বলে-

“এতো সময় লাগে রান্না করতে? আমি বাসায় যাবো। তোমার এখানে যা জিনিস আছে, সেসব নিয়ে আয়ান ভেবে দেখবে। এখানে আর আসার প্রয়োজন নাই তোমার।” (আব্রাহাম)

“আচ্ছা, উঠে খেয়ে নেন। ডিম ছিলো চারটা, ডিমের ভুনা করেছি। আপনি কি এসব খান? নাকি শুধু মাংস!” (ফারিহা)#গল্প_Story

“এই তোমার কি মনে হয়? বড়লোক মানুষ মাংস খায় শুধু নাকি! তারা কি ডিম দুধ খায় না!” (আব্রাহাম)

__আব্রাহাম ধমক দিয়ে কথাটা বলে। ফারিহা কেঁপে উঠে, এই মানুষটার সাথে সে ১.৫ বছর থাকবে কিভাবে? নাক মুখ কুঁচকে খাবার প্লেট সামনে দেয়। আব্রাহাম খাবারের দিকে তাকিয়ে একটা কাঁশি দেয়। তারপর বলে-

“ভাত কম হয়েছে আর একটু হবে কি প্লিজ?” (আব্রাহাম)

__ফারিহা দৌঁড়ে কিচেনে যায়। আর একটা প্লেট থেকে ভাত এনে আব্রাহামের প্লেটে দেয়। আব্রাহাম হা হয়ে দেখছে সেটা। মাথা চাপরায় সে। এ কাকে বিয়ে করলো! এবার কিছুটা জোরে ধমক দিয়ে বলে-

“পাগল হয়েছো? এতো ভাত আমি খাবো নাকি! তুলে নেও। আর তুমি ও তাড়াতাড়ি খেয়ে নেও। আমাকে তোমার ভাইয়ের কাগজ পত্র দিও নিয়ে যাবো।” (আব্রাহাম)

__ফারিহা ধমক শুনে কেঁদেই দেয়। এভাবে কেউ কখনো তাকে ধমক দিয়ে কথা বলে নাই। আব্রাহাম বিরক্ত হয়ে হালকা খাবার খেয়ে উঠে পড়ে। ফারিহা তাড়াতাড়ি সব ঠিক করে বেড়িয়ে পড়ে। চারদিনের মাথায় মুনির’কে চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আজ রাত থেকে ফারিহা আব্রাহামের সাথেই থাকবে। সে জানে ও না, আব্রাহামের মা-বাবার সাথে থাকবে নাকি একা। কিছু কাজ করছে না তার মাথায়। আব্রাহাম ফারিহাকে নিয়ে মার্কেটে যায়। ১০টা শাড়ি, ১৫ টা থ্রি পিস, আর ১০ সেট গেঞ্জি, প্লাজু কিনে। ফারিহা হা হয়ে সব দেখে। শুধু মনে মনে একটা কথা বলে-

“বড়লোক বুঝি এমনি হয়। এসব তো আমার ৫ বছরের জামা কাপড়। আর উনি? এমন করে গরীব দের দান করলে ও পাড়তো।” (ফারিহা)

(অভিমানে তুমি) (সূচনা পর্ব)
গল্পের শেষ লাইন



বিষয়: #  #  #  #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)