শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
বুধবার ● ২০ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » অনুপ্রেরণা (গল্প) » শিক্ষণীয় গল্প
প্রথম পাতা » অনুপ্রেরণা (গল্প) » শিক্ষণীয় গল্প
১৬৭ বার পঠিত
বুধবার ● ২০ মার্চ ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শিক্ষণীয় গল্প

শিক্ষণীয় গল্পএকদিন এক মহিলা হুজুরের কাছে গেলেন তার স্বামীর সমস্যা নিয়ে।
মহিলা : হুজুর আমার স্বামী আমাকে সহ‍্য করতে পারে না, সবসময় খিটমিট করে মনে হয় ও অন্য মেয়ের চক্করে পড়েছে, আমাকে একটা তাবিজ দেন যাতে আমার স্বামী ঠিক হয়ে যায়।

হুজুর : এইতো জটিল সমস্যা এরজন‍্যে জটিল তাবিজ দিতে হবে, আর সেই জটিল তাবিজ নিতে হলে তোমাকে কিছু জটিল কাজ করতে হবে, পারবে?

মহিলা : জ্বী হুজুর আমি এর জন‍্যে যে কনো কাজই করতে পারবো কিন্তু আমার স্বামী ঠিক হওয়া চাই ব‍্যাস।

হুজুর : এই তাবিজের মেন উপাদান যেটা লাগবে সেটা হলো বাঘের মাথার একটা চুল, আর যেটা তোমাকে নিজের হাতে আনতে হবে! তুমিকি পারবে বাঘের মাথা থেকে চুল আনতে?

মহিলা : ( কিছুটা সময় চিন্তা করার পর ) জ্বী হুজুর হয় তো এটা আনা আমার পক্ষে অসম্ভব তবুও চেষ্টা করে তো দেখতেই পারি।

আমি আনার চেষ্টা করবো বলে মহিলা সেখান থেকে রওনা হলো।
এই নিয়ে মহিলা তার ( মা বা কনো আত্মীয়র সাথে) পরামর্শ করলো কিভাবে এটা করা যায় ঠিক কেউ একজন তাকে পরামর্শ দিল চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখতে পারিস।
এইশুনে মহিলা পরের দিন চিড়িয়াখানায় গেল কিন্তু বাঘের মাথার চুল তো দুরের কথা তার পাসেও তো যেতে পারছে না । এই নিয়ে মহিলা খুবই চিন্তিত কি করবে কেমনে করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
এর পরে কেউ একজন তাকে বুদ্ধি দিলো বাঘ যেটা পছন্দ করে তুই তাকে সেটা দিয়ে দেখতে পারিস। কথামতো মহিলা পরের দিন বাঘের জন‍্যে মাংস নিয়ে গেলো কিন্তু কাছে থেকে দেওয়ার সাহস পেলো না দুর থেকে দিয়ে চলে এলো। এইভাবে ঐ মহিলা প্রত‍্যেকদিন বাঘের জন‍্যে মাংস নিয়ে যেতে লাগলো এবং বাঘ মাংস পেয়ে খুশি হয়ে মহিলার প্রতি আকৃষ্ট হতে লাগলো। এবং মহিলা ও ধিরে ধিরে বাঘের কাছে আসতে লাগলো। এবং একটা সময় এমন এলো যখন বাঘটা মহিলার কাছে বস মেনে গেলো। ঠিক তখন সেই মহিলা বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে মাংস খাইয়ে তার একটা চুল ছিড়ে নিয়ে হুজুরের কাছে গেলো।

মহিলা : এই নেন হুজুর আমি নিজের হাতে বাঘের মাথা থেকে চুল নিয়ে এসেছি এইবার আপনি তাবিজ বানিয়ে দেন।

হুজুর : (একটু অবাক হয়ে ) তা তো বুঝলাম মা, কিন্তু তুমি এই অসম্ভব কাজটা করলে কিভাবে?

মহিলা প্রথম দিন থেকে শুরু করে প্রতিটা কথা হুজুর কে বললো। বললো কিভাবে সে বাঘের মতো একটা হিংস্র প্রাণীকে ভালোবাসা, যত্ন, এবং পছন্দ মতো খাবার খাইয়ে বস মানিয়ে চুল নিয়ে এসেছে।

হুজুর : (একটু মুসকি হাসি দিয়ে বললেন) আচ্ছা মা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো সত্যি করে উত্তর দেবে?

মহিলা : জ্বী হুজুর বলুন!

হুজুর : আচ্ছা মা তোমার স্বামী কি এই বাঘের থেকে ও হিংস্র?

মহিলা : (মাথা নিচু করে) না হুজুর আমার স্বামী এর মতো হিংস্র না।

হুজুর : তাহলে মা তুমি যদি ভালোবাসা আদর যত্ন দিয়ে একটা হিংস্রপুশুকে বস মানাতে পারো তাহলে সেই ভালোবাসা আদর যত্ন দিয়ে তুমি কি পারো না তোমার স্বামী কে বস মানাতে?

মহিলা : (লজ্জিত) জ্বী হুজুর চেষ্টা করলেই পারবো। আমার ভুল হয়েছে আমার আর তাবিজ লাগবে না। এখন আসি দুয়া করিয়েন ।

মূল বিষয় হলো আমরা ভুল পথে অনেক অসম্ভব কাজ কে সম্ভব করতে পারি কিন্তু সঠিক পথে থেকে সেই কাজটা করতে পারি না। কারন সঠিক পথে থাকার মূলমন্ত্র হলো নিজের ভুল নিজে বুঝতে পারা বা আগে নিজে সঠিক হওয়া,যেটা আমারা কেউ হতে চাই না। আমরা সবসময় নিজের হাজারো দোষকে চাপা দিয়ে অন্যের সামান্য দোষ খুজে বেড়ায়। আমরা স্ত্রী হয়ে বুঝতে বা স্বামী হয়ে বুঝতে পারি আমার স্বামী বা স্ত্রী আমাকে তেমন মর্যাদা দেই না যেটা আমি চাই কিন্তু আমারা স্বামী বা স্ত্রী উভয়েই এটা বুঝতে পারি না যে আমি কি ততোটা মর্যাদা দি যতোটা সে চাই। আর এই কারনেই হয় তো সমাজে আজ এতো বিবহ বিচ্ছেদ ঘটে চলেছে।
আর শুধু স্বামী- স্ত্রীর ক্ষেত্রেই এই বিষয় টা লক্ষ্য করা যায় এমন না, লক্ষ্য করে দেখলে প্রতিটা সম্পর্কের ক্ষেত্রেই আমরা কখনোই অপরের ছাড়া নিজের দোষ দেখতে পাই না।

আল্লাহ্ সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন



বিষয়: #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)