শনিবার ● ১৬ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » বিশ্ব » চীনকে বিপাকে ফেলতে ট্রাম্পের নির্দেশে গোপন অভিযানে সিআইএ
চীনকে বিপাকে ফেলতে ট্রাম্পের নির্দেশে গোপন অভিযানে সিআইএ
ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে (সিআইএ) গোপন এক অভিযান চালানোর অনুমোদন দিয়েছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই অভিযানের লক্ষ্য ছিলো, চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় চীন সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা।
২০১৯ সালে শুরু হওয়া ‘অতি গোপন’ ওই অভিযান সম্পর্কে সরাসরি জানেন এমন কয়েকজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিশেষ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশে গোপন এ অভিযানের জন্য সিআইএ একটি ছোট দল গঠন করে। ওই দলের সদস্যরা ভুয়া পরিচয়ে অনলাইন মাধ্যমে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও তার সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালাতে শুরু করে। পাশাপাশি চীন নিয়ে মানহানিকর গোয়েন্দা তথ্য বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে ফাঁস করতে থাকে।
মার্কিন প্রশাসনের সাবেক তিন কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানাচ্ছে, সিআইএ একটি ছোট অনলাইন সক্রিয় দল গড়ে তুলে ভুয়া ইন্টারনেট আইডি ব্যবহার করে চীনা নেতাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালাত। একই সঙ্গে বিদেশি গণমাধ্যমগুলোর কাছে এরা ভুয়া খবর ছড়াতো।
সিআইএর এই অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাতে চাননি মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে তাঁরা জানান, ভুয়া পরিচয়ে চীন সরকারের মর্যাদাহানিকর গোয়েন্দা তথ্য ছড়ান সিআইএ গুপ্তচরেরা। তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে নেতিবাচক প্রচারণা চালান। বিশেষ করে এসব নেতা অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন বলে খবর ছড়ানো হয়। এছাড়া চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে দুর্নীতিতে জর্জরিত প্রকল্প বলে প্রচার চালানো হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় শত শত কোটি ডলারের অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বেইজিং।
দুই সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, অভিযানের প্রধান লক্ষ্য ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। এতে দেশটির সরকার বাধ্য হয়ে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি অর্থ ব্যয়ে বাধ্য হয়।
এ অভিযানের বিষয়টি জানার পর সিআইএর সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স। গোপন অভিযান এখনো চলছে কি না এবং এর লক্ষ্য ও প্রভাব কী, সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তবে সিআইএর মুখপাত্র চেলসি রবিনসন এসব প্রশ্নের বিষয়ে কোনো সাড়া দেননি।
বিষয়টি নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করে রয়টার্স। একজন মুখপাত্র বলেন, চীনের বিরুদ্ধে সিআইএর এ ধরনের অভিযান প্রমাণ করে যে আমেরিকা সরকার সামাজিক ও সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে অপতথ্য ছড়ানো এবং আন্তর্জাতিক মনোভাবকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে থাকে।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও গোপন ওই অভিযান এখনও চালু রেখেছেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স। বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র কেট ওয়াটার্সের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হওয়া হলে, তিনি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে গোয়েন্দা ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন এমন দুই ব্যক্তির সঙ্গে সিআইএর এমন অভিযান নিয়ে কথা বলেছে রয়টার্স। তারা জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউস থেকে এ ধরনের কোনো গোপন অভিযানের নির্দেশ দেয়া হলে, সাধারণত পরবর্তী প্রেসিডেন্ট এলেও তা অব্যাহত থাকে।
বিষয়: #অভিযান #গোপন #চীন #ট্রাম্প #নির্দেশ #বিপা #সিআইএ