শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

Somoy Channel
বুধবার ● ৬ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » অনুপ্রেরণা (গল্প) » বর্ষণের সেই রাতে
প্রথম পাতা » অনুপ্রেরণা (গল্প) » বর্ষণের সেই রাতে
৬৮ বার পঠিত
বুধবার ● ৬ মার্চ ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বর্ষণের সেই রাতে

বর্ষণের সেই রাতেলোকটা আমার কোমর ছাড়তেই আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দৌড়ে সোফার রুমে এসে মেইন ডোর খুলতে যাবো তার আগেই লোকটা আমার হাত ধরে হ্যাচকা টানে তার দিকে ঘুরিয়ে আমার গা থেকে একটানে ওরনাটা নিয়ে নিলো। তারপর টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে রাগী কন্ঠে বলল
— বলেছিলাম না উল্টোপাল্টা কিছু করোনা খুব খারাপ হয়ে যাবে?
— ক্ কে আপনি? আর ক্ কেন অ্ আমার সাথে এমন করছেন?
বলতে বলতে কেদেই দিয়েছি আমি। লোকটি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে জোর করে আমার ওই ওরনাটা দিয়েই আমার হাত বেধে দিলো আর কিছু একটা পকেট থেকে বের করে মুখও বেধে দিলো, অন্ধকার তাই শুধু অবয়ব দেখা যাচ্ছে লোকটার। হঠাৎ আমার সাথে ঘটা এই আকষ্মিক ঘটনায় বেশ ঘাবড়ে গেছি। কাজ সেরে বাসায় ফেরার পর এমন কিছু হবে আশা করিনি আমি।
বর্ষার রাত। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বিরতিহীনভাবে ঝরেই চলেছে, সে আজ থামতে একেবারেই নারাজ। একটা ইম্পর্টেন্ট আর্টিকেল নিয়ে কাজ করতে করতে বাড়িতে ফিরতে রাত হয়ে গেলো। নিজের স্কুটিতে এসেছি তাই ভিজেও গেছি। তিন রুমের একটা ফ্লাটে একাই থাকি আমি। ফ্লাটে ঢুকে শরীরের পানি ঝাড়তে ঝাড়তে বেডরুমে ঢুকেই চমকে গেলাম। বিদ্যুৎ নেই রুমটা অন্ধকার। সেটা বড় কথা না কারণ এইরকম বিদ্যুৎ চমকানো বর্ষণের দিনে এইসব এলাকার নিচের বিদ্যুৎও ওপরের বিদ্যুতের সাথে সাক্ষাৎ করতে চলে যায়, যেনো এই সাক্ষাত অনিবার্জ। কিন্তু আমার চমকানোর কারণ হলো আমারি বেডরুমে আমারি বেডে কেউ বসে আছে। অন্ধকারে তাকে দেখা না গেলেও তার অবয়ব স্পষ্ট, অবয়ব অনুসারে একটা ছেলে। আমি একবার চোখ ঝাপটা দিয়ে নিলাম। হেলুসিনেট করছি নাতো? কিন্তু পরক্ষণেই বুঝতে পারলাম যে এটা সত্যিই। ভয় পেয়ে গেলাম আমি। লোকটি এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। আগেই বলেছি ফ্লাটে আমি একা থাকি, এইমুহূর্তে এখানে আসার মতো কোনো আত্মীয় বা পরিচিত কেউ আমার পেই। আর তাছাড়া দরজাতো লক করা ছিলো। তাই কেউ কীকরে আসবে ভেতরে? চোর নাকি? যদি চোর হয় তো লোকটার জন্যে একড্রাম আফসোস কারণ সে টেকোর কাছে চিরুনী খুজতে এসছে। কিন্তু চোর হলে চুরি না করে এভাবে খাটে বসে আছে কেনো? আমি কী করবো বুঝতে পারছিনা। ডাকবো লোকটাকে নাকি চেচাবো? না বাইরে গিয়ে পাশের ফ্লাটের লোকেদের ডেকে আনি সেটাই ভালো। এসব ভাবতে ভাবতেই লোকটির আমার দিকে ঘুরলো, আমাকে দেখেই দ্রুত দাড়িয়ে গেলো আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলাম। লোকটি আমার দিকে এগোতে লাগল। অন্ধকারে আবছাভাবে লোকটিকে আমার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে জোরে চিৎকার দিতে যাবো তার আগেই লোকটি আমার মুখ চেপে ধরল। এতে আরো অবাক হলাম। আমি ছাড়া পাওয়ার জন্যে নড়তে গেলেই লোকটি আরেক হাতে আমার কোমর চেপে ধরল যাতে নড়াচড়া করতে না পারি। আমার সাথে ঘটে যাওয়া আকষ্মিক এই ঘটনায় আমি পুরো হতভম্ব হয়ে গেছি। একা একটা ফ্লাটে একটা মেয়ের সাথে এরকম কিছু হলে সেই মেয়েটার মনের পরিস্হিতি আন্দাজ করা কঠিন। চির পরিচিত আশঙ্কায় বুক কেপে উঠলো আমার। লোকটা উত্তেজিত কষ্টে বলল
— হেই মিস। প্লিজ ডোন্ট সাউট। আমি কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে আসিনি। একটু থামুন লেট মি এক্সপ্লেইন।
কিন্তু লোকটার কথা যেনো আমার কানে গিয়েও গেলোনা। আমি নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আর ভাবছি লোকটা চাইছে টা কী? চোর? নাকি অন্যকিছু? লোকটার এইভাবে আমাকে ধরে রাখাতে আমার আরো ভয় করছে। উল্টোপাল্টা কিছু হবেনা তো আমার সাথে? রোজ এরকম কতো ঘটনার আর্টিকেল নিজের হাতে লিখি। লেখার সময় বেশ আক্ষেপ ও হয় মেয়েগুলোর জন্যে। আজ কী আমার সাথেও এমন কিছু হবে? কালকে কেউ আমারও আর্টিকেল বানাবে? সেইসাথে মন থেকে বেড়িয়ে আসবে আক্ষেপ আর দীর্ঘশ্বাস। এসব ভেবে আরো মোচড়াতে মোচড়াতে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে শুরু করলাম। লোকটার এবার বিরক্তির কন্ঠে বলল
— আরে এমনভাবে লাফাচ্ছেন কেনো? আমাকে বলতে তো দিন? আসলে নিচে..
কিন্তু আমি এবারেও কথাটা শেষ করতে না দিয়ে উমম শব্দ করতে করতে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি। একে বলতে দিলেই বিপদ আগে এর থেকে ছাড়া পেয়ে আমায় লোক জরো করতে হবে। কিন্তু যদি পালিয়ে যায়? অন্ধকারেতো লোকটার মুখও দেখতে পারছিনা। লোকটা এবার একটু রাগী গলাতে বলল
– স্যাল আই ফিনিস? একটু বলি? তারপর না হয় অাপনি আপনার পেংগুইন ডান্স দেখাবেন? সারারাতই আছি এখানে নিরবিলি বসে দেখবো।
সারারাত থাকবে শুনেই বুকটা ধক কর উঠলো তবেকি যা ভাবছি তাই হতে চলেছে। এবার আমার ছটফটানি আরো বেড়ে গেলো। রীতিমতো লাফানোর চেষ্টা করছি আমি। আর মুখ দিয়ে উমম টাইপ শব্দতো আছেই। যেটা আমার নিজেরই বিরক্ত লাগছে লোকটার কেমন লাগছে কে জানে? লোকটা এবার ভীষণ জোরে ধমক দিলো আমাকে। ধমকটা এতোই জোরে ছিলো যে আমি একেবারে খরগোশ ছানার মতো করে শান্ত হয়ে রইলাম। লোকটা এবার একটা শ্বাস নিয়ে বলল
— এটলাস্ট। মুখ ছাড়ছি আমি। ছাড়ার পর যদি একটুও চিৎকার চেচামিচি বা উল্টোপাল্টা কিছু করেন। তাহলে খুব খারাপ হবে। মনে থাকবে?
আমি ভদ্রমেয়ের মতো হ্যা বোধক মাথা নাড়লাম কারণ ভয় পেয়ে গেছি লোকটার ধমকে। কিন্তু মনে মনে বলছি একবার শুধু ছেড়ে দেখনা তোকে যদি গনধোলাই না খাওয়াই তাহলে আমি এক সপ্তাহ চকলেটা খাবোনা হুহ। এরপর লোকটা আমার কোমর আর মুখ ছেড়ে দিতেই এই ঘটনা ঘটল।
বাইরে ঝমঝম শব্দে বৃষ্টি হচ্ছে। আমি হাত মুখ বাধা অবস্হায় গুটিশুটি মেরে সোফায় বসে আছি। আর লোকটা সামনের সিঙ্গেল সোফায় বসল। অন্ধকার হলেও বাইরে থেকে আসা আলোয় সবকিছুই দেখা যাচ্ছে কিন্তু পরিস্কার না অবয়ব আকারে। লোকটার ঠান্ডা গলায় বলল
— আই এম সরি ফর মাই বিহেভিয়ার, তুমি করে বলার জন্যেও সরি। কিন্তু আমার কাছে কোনো সেকেন্ড অপশন ছিলো না। আপনি তৈরী ছিলেননা কিছু শোনার জন্যে,নিজের মতো করে লাফিয়ে যাচ্ছিলেন। অযথাই ভয় পাচ্ছেন আপনি আমাকে।
আমি কিছু বলতে পারছিনা কারণ আমার মুখ বাধা কিন্তু লোকটার ওপর রাগ হচ্ছে। এভাবে একটা মেয়ের ঘরে ঢুকে বসে থাকলে মেয়েটা চেচাবে না তো নাকি মৌনব্রত পালন করবে? আর বলে কী না অযথাই ভয় পাচ্ছি। ডিসগাসটিং। কিন্তু এই ব্যাটার মতলব টা কী? লোকটা বলল
— টেবিল লাইট বা মোমবাতি নেই?
আমার এবার নিজের চুল নিজেরই ছিড়তে ইচ্ছে করছে। মুখ বেধে রেখে প্রশ্ন করছে। লোকটা নিজে জোকার নাকি আমাকে দেখে তার জোকার মনে হচ্ছে সেটা নিয়ে আমি যথেষ্ঠ সন্দিহান? লোকটি নিজেই বলল
— সরি আই ফরগট। বাট প্লিজ চেচাবেন না। বাইরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে আর ফ্লাটের দরজাও বন্ধ আপনার চিৎকার কেউ শুনবেনা। আমি জাস্ট আমার নিজের কানের প্রটেক্শনের জন্য বলছি।
একথা বলতে বলতে আমার মুখের বাধন খুলল। আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি। কী চাই কী এর? খারাপ কোনো উদ্দেশ্য থাকলে এতোক্ষণে তো করার কথা ছিলো, তবুও এদের বিশ্বাস নেই। না জানি কী ফন্দি আটছে। অত্যন্ত বিরক্তি নিয়ে বললাম
— আপনাকে না দেখতে খুব ইচ্ছে করছে আমার।
— কেনো?
— এক্চুয়ালি আমার এলিয়েন দেখা হয়নি এখোনো অবধি। সুযোগ যখন পেয়েছি মিস করবো কেনো?
লোকটি হেসে দিলো। অন্ধকার তাই হাসিটা দেখতে না পেলেও হাসির আওয়াজ টা শুনেই বুকের ভেতর কেমন করে উঠলো। লোকটা হাসিমিশ্রিয় কন্ঠেই বলল
— ক্যান্ডেল বা টেবিল লাইট কোথায় আছে বলুন? আমি নিয়ে আসছি।
— হাত খুলুন আমি এনে দিচ্ছি।
— সরি ম্যাম আই কান্ট ট্রাস্ট ইউ। আপনি আবারো যে অলিম্পিক এর রেস লাগাবেন না, তার কোনো গ্যারান্টি নেই।
আমি এবার বেশ বিরক্ত হলাম। রাগ লাগছে ভীষণ। কী পেয়েছে কী লোকটা? কাঠের পুতুলের মতো নাচিয়ে যাচ্ছে আমাকে। তাই রাগে গজগজ করে বললাম
— লিসেন ইউ আর ক্রসিং ইউর লিমিট।
— আই নো! বাট আমি হেল্পলেস। আপনাকে আগে সবটা বলি। তারপর আপনি যা খুশি করুন। কিন্তু আপনাকে সবটা ক্লিয়ার করে বলার জন্যে আমার মুখটা দেখতে হবে সো আই নিড লাইট।
— কেনো আপনার মুখ হোয়াইট বোর্ড নাকি? যে ওখানে না তাকালে অংক মাথায় ঢুকবেনা?
— উফফ দিস গার্ল। সেটা আমার মুখ দেখলেই বুঝতে পারবেন। এবার বলুন।
— টেবিল লাইট আপনি খুজে পাবেন না। ঐ ওয়ার্ডড্রপ এর ওপর ক্যান্ডেলস আর লাইটার আছে।
লোকটা উঠে কিছুক্ষণ খুজে একটা ক্যান্ডেল আর লাইটার নিয়ে এলো। টি- টেবিলের ওপর মোমবাতি রেগে লাইটার দিয়ে জালানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পুরো রুম আবছা হলদে আলোয় আলোকিত হয়ে গেলো। আমি এতোক্ষণ বিরক্তি নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু রুম আলোকিত হবায় লোকটির দিকে তাকিয়ে আমিতো বড়সর ঝটকা খেলাম। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা। এও সম্ভব? এটা হতে পারে? আমি কি সপ্ন দেখছি? তাই দুবার চোখ ঝাপটাও দিলাম। কিন্তু সেই একি দৃশ্য। আরো অবাক করা বিষয় লোকটা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে যেনো তার দৃষ্টি আমার ওপরেই স্হির হয়ে গেছে। কিন্তু আমার অবাক দৃষ্টি দেখে নিজেকে সামলে নিয়ে মুচকি হেসে ভ্রু নাচালো। আমি অবাক হয়ে লোকটির দিকে তাকিয়ে বললাম
— অ্ আদ্রিয়ান?
লোকটি বাকা হেসে বলল “হ্যা”। আমি এবারেও অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে অবিশ্বাসের সুরে বললাম
— আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের?
— এস পার আই নো।
বলেই ওনার সেই ভূবন ভোলানো হাসিটা দিলো। আমার এখন চোখের সাথে নিজের কানকেও বিশ্বাস হচ্ছে না। আবারো অবাক হয়ে বললাম
— ইউ মিন দ্যা গ্রেট সিঙ্গার? রকস্টার এডি?
এবারেও সেই হাসি দিয়ে বলল
— লোকেতো তাই বলে। বাট থ্যাংক গড যে আপনি আমাকে চিনতে পেরেছেন।
আমি নিজের হাতেই নিজে একটা চিমটি দিলাম যে এটা সপ্ন কী না? কিন্তু চিমটি টায় ব্যথাও পেলাম। সেটা এডি এর চোখে পড়ল, আর চোখে পরতেই উনি আবারো হেসে দিলো। এতোক্ষণে মোটামুটি সিউর হলাম যে এটা স্বপ্ন নয় সত্যিই। উনি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। আমি দাড়িয়ে আটকে যাওয়া কন্ঠে বললাম
— আপনি? এখানে? আমার ফ্লাটে? কীভাবে ম্ মানে?
— আই নিড ইউর হেল্প। আজ রাতটা আমি থাকবো আপনার ফ্লাটে।
আমিতো অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে গেছি থাকবে মানে কী? আর কেনো? বিষ্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম
— মানে?
— মানে আজ রাতটা আমার এখানেই কাটাতে হবে।
আজব? এমনভাবে বলছে যেনো নিজেরই ফ্লাট। ইচ্ছে হলেই থাকবে। মামা বাড়ির আবদার আমি ভ্রু কুচকে বললাম
— যদি থাকতে না দেই?
উনি মুচকি হেসে পকেটে হাত ঢুকিয়ে বললেন
— আপনি বাধ্য। কারণ যদি আবারো ভূলভাল কিছু করেন তো ওভাবেই হাত মুখ বেধে রেখে দেবো। আপনি চান সেটা?
আমি ভয়ে মাথা নাড়লাম। কারণ যদি সত্যিই আবার ওভাবে বেধে রেখে দেয়? উনি বাকা হেসে বলল
— গুড গার্ল।
— কিন্তু আমার ফ্লাটেই কেনো?
— একটু বিপদে পরে গেছি। তাই এখানে এসে আশ্রয় নিয়ে হলো।
আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম
— বিপদ?
উনি এবারেও হেসে দিয়ে বলল
— আরেহ কুল। পালিয়ে যাচ্ছিনা আমি। বলবো সব। আগে আপনি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন পুরো ভিজে আছেন তো।
আমি নিজের দিকে তাকালাম। এসবের চক্করে ভূলেই গেছিলাম যে আমি ভিজে আছি। এবার ইতোস্তত করে ওনার দিকে তাকালাম। উনিও হালকা ভিজে আছেন। মোমবাতির আবছা হলদেটে আলোয় চম্যৎকার সুন্দর লাগছে তাকে। হালকা ভিজে চুল যা এলোমেলো হয়ে কপাল ভর্তি হয়ে আছে। ছয় ফুটের ওপরে লম্বা, ফর্সা গায়ের রং, একেবারে হালকা গোলাপি ঠোট, এক অসম্ভব সুন্দর দুটো চোখ। যেনো ওই চোখ দিয়েই সবাইকে হিপনোটাইজ করার ক্ষমতা সে রাখে। একটা ব্লাক টিশার্ট, নেভিব্লু জ্যাকেট, ব্লু জিন্স, হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি, পায়ে কেচ। একজন স্টার বলে কথা। এখোনো আমার বিশ্বাস হচ্ছে না যে এতো বড় একজন রকস্টার আমার ফ্লাটে এসছে। আমি এখোনো অবাক হয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। আদ্রিয়ান আমার সামনে তুরি বাজিয়ে বললেন
— হ্যালো মিস?
ওর আওয়াজে আমার ধ্যান ভাঙতেই নিজেকে কোনোরকমে সামলে বললাম
— জ্বী?
উনি ভ্রু কুচকে তাকালেন আমার দিকে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন
— গিয়ে চেন্জ করে নিন। আর পারলে আমাকেও মোছার জন্যে একটা টাওয়াল জাতীয় কিছু একটা দিয়ে যান। মুছে নিতাম আরকি।
আমি কিছু না বলে একটা টাওয়াল এনে ওনার হাতে দিলাম। এরপর তাড়তাড়ি ওয়াসরুমে ঢুকে কুর্তি আর জিন্স চেন্জ করে একটা টপস আর প্লাজো পরে নিলাম। বুক কেমন যেনো ধুকপুক ধুকপুক করছে। আমিকি হেলুসিনেট করছি? কিন্তু এটা কীকরে হলো? এসব ভাবতে ভাবতে বাইরে এলাম। বাইরে বেরিয়ে দেখি উনি বেডরুমে মোমবাতি নিয়ে এসছে আর খাটে বসে আছে গায়ে শুধু জিন্স আর একটা কালো চিকন স্লিভস এর গেন্জি। ভীষণ রকমে কাপছি আমি। উনি উঠে আমার সামনে এসে আমাকে এভাবে কাপতে দেখে বলল
— এখোনো ভয় পাচ্ছেন আমাকে?
— নাহ ম্ মানে সেরকম ক্ কিছু না।
প্রচুর নার্ভাস আর আনইজি লাগছে। আদ্রিয়ান বাকা হেসে বলল
— কেনো? এতোক্ষণ তো ভয় পাচ্ছিলেন? পরিচয় জানার পর ভয় লাগছেনা?
আমি কী বলবো কী করবো কিছুই বুঝতে পারছিনা। সবকিছুই সপ্নের মতো লাগছে। কী বলা উচিত আমার এখন।
— পাবলিক ফিগার আমি। দ্যাট নট মিনস কী আমার ক্যারেক্টার ভালো হবে তাইনা?
আমি একটা বড়সর ঢোক গিললাম। উনি একটু একটু করে এগিয়ে আসছেন আমার দিকে, আর আমি নিজের অজান্তেই পিছিয়ে যাচ্ছি। পেছাতে পেছাতে দেয়ালে লেগে গেলাম। মনে মনে প্রচুর ভয় হচ্ছে। শুনেছি এইসব সেলিব্রিটিদের ক্যারেকটার একেবারেই খারাপ হয়। যদি সত্যিই উল্টোপাল্টা কিছু করে? কেউ তো আমার কথা বিশ্বাস ও করবেনা যে দ্যা রকস্টার এডি আমার বাড়িতে এসে আমার সাথে এসব করেছেন। এমন কী কারণ থাকতে পারে ওনার এখানে আসার? এসব ভাবতে ভাবতে উনি একদম আমার কাছে এসে দেয়ালে হাত রাখল। ভয়ে আত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে আমার। উনি একটু ঝুকতেই আমি খিচে চোখ বন্ধ করে নিলাম।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত



বিষয়: #  #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)