শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
শনিবার ● ২ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ‘বৃষ্টি খাতুন’ পরিচয়ে সাংবাদিক অভিশ্রুতির মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ‘বৃষ্টি খাতুন’ পরিচয়ে সাংবাদিক অভিশ্রুতির মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে
৫৯ বার পঠিত
শনিবার ● ২ মার্চ ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

‘বৃষ্টি খাতুন’ পরিচয়ে সাংবাদিক অভিশ্রুতির মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে

‘বৃষ্টি খাতুন’ পরিচয়ে সাংবাদিক অভিশ্রুতির মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছেরাজধানীর বেইলি রোডে ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ নামের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত সংবাদকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা কেটেছে। তার প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তার আসল নাম বৃষ্টি খাতুন, গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের প‌শ্চিমপাড়ায়। বাবার নাম শাবলুল আলম সবুজ ওরফে সবুজ শেখ। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

১ মার্চ, শুক্রবার রাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নারী সাংবাদিকের পরিচয় নিশ্চিতকরণে দায়িত্বরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জব্বার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে অভিশ্রুতির প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

কলেজের সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর নাম বৃষ্টি খাতুন উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে তার মা বিউটি বেগম বলেন, বৃষ্টি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে কি না জানি না। সে আমাদের মুসলিম পরিবারের সদস্য।

তিনি আরও বলেন, আমরা তার মরদেহ পাচ্ছি না। তার মরদেহ আমরা গ্রামের বাড়িতে দাফন করব। বৃষ্টি যত ভুলই করুক না কেন, আমাদের সন্তান আমরা দাফন করব।

বৃষ্টিরা তিন বোন। বৃষ্টি বড়। তার মেজো বোন ঝর্না ও ছোট বোন বর্ষা। তার বাবা শাবলুল আলম ওরফে সবুজ শেখ ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং তার মা বিউটি বেগমও ইসলাম ধর্মের অনুসারী।

নিহতের ছোট বোন শারমিনা সুলতানা ঝরনা জানায়, সম্প্রতি তার বড় বোন বৃষ্টি খাতুন ‘অভিশ্রুতি শাস্ত্রী’ নামে ফেসবুক আইডি খুলেছিলেন এবং এই নামেই সাংবাদিকতা করতেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মায়ের সঙ্গে বৃষ্টির শেষবার মোবাইলে কথা হয়। বৃষ্টি সাংবাদিকতা করলেও বাড়ি থেকে মা টাকা পাঠাতেন। বড় বোনের মৃত্যুতে তাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। দুই মাস আগে অভিশ্রুতি সর্বশেষ গ্রামের বাড়ি এসেছিলেন।

অভিশ্রুতির হিন্দু ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা হতেই পারে না। আমার বোন মনে প্রাণে একজন মুসলিম। সে কখনই নিজ ধর্ম ত্যাগ করেনি। তবে সম্প্রতি তিনি অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে ফেসবুক আইডি খুলেছিলেন এবং ওই নামেই সাংবাদিকতা করতেন।

এর আগে, দুপুরে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আসেন বাবা সবুজ শেখ। তিনি অভিশ্রুতিকে নিজের মেয়ে দাবি করেন। কিন্তু বিপত্তি বাধে নাম-পরিচয় নিয়ে।

সবুজ শেখের দেখানো এনআইডি কার্ডে বাবার নামের জায়গায় সবুজ শেখ থাকলেও মেয়ের নাম লেখা বৃষ্টি খাতুন। এ কারণে প্রতারক ভেবে পুলিশ সবুজ শেখকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সবুজ শেখের দাবি, নিহত অভিশ্রুতি শাস্ত্রীই তার মেয়ে বৃষ্টি খাতুন। কিন্তু সে ঢাকায় এসে নিজেকে হিন্দু হিসেবে পরিচয় দিত, নিয়মিত মন্দিরে যেত।

এদিকে বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি আমার বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। ২০১৬ সালে সে এসএসসি পাস করে। এরপর বৃষ্টি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। পরে ইডেন কলেজে ভর্তি হয়। সম্প্রতি আমার ছেলেকে ঢাকায় ভর্তির ব্যাপারে বৃষ্টি সহায়তা করে।

অন্যদিকে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, গত আট মাস ধরে আমাদের সঙ্গে অভিশ্রুতির পরিচয়। মন্দিরে নিয়মিত আসতেন। আমাদের মন্দিরের সঙ্গে অনেকটাই কানেক্টেড তিনি।

পরিচয় নিশ্চিত হতে আজ ওই সাংবাদিকের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা গেছে এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বৃষ্টি খাতুন লেখা আছে। বাবার নাম সবুজ শেখ আর মায়ের নাম বিউটি বেগম লেখা আছে।

এনআইডি অনুযায়ী তার গ্রাম বনগ্রাম, ডাকঘর বনগ্রাম, উপজেলা খোকসা এবং জেলা কুষ্টিয়া। এনআইডির তথ্যানুযায়ী পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় এখন সাংবাদিক অভিশ্রুতির মরদেহ তার বাবা শাবলুল আলম সবুজের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়।

অভিশ্রুতি সদ্য ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছেন। ঢাকার মৌচাকের সিআইডি অফিসের বিপরীতে একটি মেসে থাকতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।



বিষয়: #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)