শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
বৃহস্পতিবার ● ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্রকে সহপাঠীরা ছুরি আঘাত করে হত্যা! দফায় দফায় সংষর্ষ, আহত শতাধীক, আটক ১৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্রকে সহপাঠীরা ছুরি আঘাত করে হত্যা! দফায় দফায় সংষর্ষ, আহত শতাধীক, আটক ১৪
১৩৩ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্রকে সহপাঠীরা ছুরি আঘাত করে হত্যা! দফায় দফায় সংষর্ষ, আহত শতাধীক, আটক ১৪

বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি:

দফায় দফায় সংষর্ষ, আহত শতাধীক, আটক ১৪নবীগঞ্জ শহরে দুই গ্রুপের চার ঘন্টাব্যাপী ভয়াবহ সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, পথচারীসহ শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয়েছে মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকান পাঠ। এর মধ্যে তিনটি ব্যাংক ভাংচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৪৫ রাউন্ড টিয়ারশেল, ১৫ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। নবীগঞ্জে কলেজ ছাত্র সৈয়দ তাহসিন হত্যাকান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’ই গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তপক্ষে শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি দোকান পাট ভাংচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে। পরে খবর পেয়ে বাহুবল সার্কেল এসপি আবুল খয়ের, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে দাঙ্গা পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কঠুর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বুধবার সন্ধ্যা ৫টা থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত এক টানা সংঘর্ষ চলে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় সিসি ক্যামেরা ফুটেজ নিয়ে এ সংঘর্ষে সুত্রপাত হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়- কলেজ ছাত্র তাহসিন হত্যার ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ দেখার সূত্র ধরে কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনাতাবাদ গ্রামের সৈয়দ খালেদুর রহমান ও আনমনু গ্রামের পৌর কাউন্সিলর নানু মিয়ার লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে এনাতাবাদ ও আনমনু গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে। এসময় চেয়ারম্যান খালেদের মালিকানাধীন রাজা কমপ্লেক্স. পুবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক , তাহসিন প্লাজা ও আনমনু গ্রামের বেশ কয়েকটি দোকানপাঠ ভাংচুর করা হয়। সবজি বাজারেও ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। চার ঘন্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের লোকজন ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাঠ বন্ধ করে দিগবিদিক ছুটোছুটি করেন। চতুর মূখি সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৪৫ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। রাত ৯টায় হবিগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠান হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আবু জাহির এমপি। অতিরিক্ত পুলিশ এসে রাবার বুলেট, কাদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সংঘর্ষ চলাকালে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম মুর্শিদ, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি এম,এ আহমদ আজাদসহ শতাধিক লোক আহত হন। কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনাতাবাদ গ্রামের সৈয়দ খালেদুর রহমান তিনি তার মার্কেটের সিসি টিভির ফুটেজ দেখানোর জন্য আনমনু গ্রামের লোকজন তাকে সন্দেহ করে তার মালিকাধীন মার্কেটে হামলা করে সিসি ফুটেজ ছিনতাই করার চেষ্টা করে। এনিয়ে সংঘর্ষের সুত্রপাত হয়।

নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্রকে সহপাঠীরা ছুরি আঘাত করে হত্যা!

আরো জানাযায়, গত মঙ্গলবার রাতে কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদের মালিকাধীন রাজা কমপ্লেক্সের পিছনে ফুড কর্নারে দু’দল কলেজ ছাত্রদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেল ধরে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন কলেজ ছাত্র নিহত হয়।
এ সময় চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমানের নিজ গ্রাম এনাতাবাদের লোকজন কাউন্সিলর নানু মিয়ার মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগসহ ৩টি সাইকেল ভাংচুর করেন। কাউন্সিলর নানু মিয়ার দোকানসহ একাধিক দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পাল্টা হামলায় রাজা কমপ্লেক্সের গ্লাস ভাংচুর করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড কাদাঁনো গ্যাস নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেনি। এক পর্যায়ে বাহুবলের সার্কেল এসপির নেতৃত্বে হবিগঞ্জ থেকে একদল দাঙ্গা পুলিশ আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

দফায় দফায় সংষর্ষ, আহত শতাধীক, আটক ১৪

এসময় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা অনুমপ দাশ, সহকারী কমিশনার ভূমি শাহীন দেলোয়ার, ওসি মাসুক আলী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ইউপি চেয়াম্যান এমদাদুর রহমান মুকুল, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান সেফু, জেলা পরিষদের সদস্য শেখ সফিকুজ্জামান শিপন, নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম,এ আহমদ আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম তালুকদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ মিলু, ইউপি চেয়ারম্যান, নির্মেলেন্দু দাশ রানা, ইউপি চেয়ারম্যান নোমান আহমদ সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য আঃ মালিক, সাবেক প্যানেল মেয়র এটিএম সালাম সহ সাংবাদিক জনপ্রতিনধি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনতে অপ্রাণ প্রচেষ্টা করেন। সূত্রে আরো জানা গেছে, ইদানীং নবীগঞ্জ শহরে একের পর এক অনাকাংখিত ঘটনা ঘটছে। কে বা কাহারা এদের পিছনে ইন্দন দিচ্ছে তা বুঝে ওঠা যাচ্ছেনা। প্রতি হিংসার সূত্র ধরে দিন দুপুর সহ সন্ধা রাতেই চলে মারামারি, এমন কি হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটছে। ঐ ধাঙ্গাবাজরা এতো সাহস কোথায় থেকে পায়, তা এখন সবার মনে প্রশ্ন? কারা তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে? মানুষ এখন নবীগঞ্জের নাম শুনলেই আতংকের মধ্যে পড়ে যান। সচেতন মহলের দাবী অপরাধী যে বা যাহারাই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় না আনলে নবীগঞ্জের আরো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এ ব্যাপারে আনমনু গ্রামের পৌর কাউন্সিলর নানু মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান জানাজার নামাজে তার গ্রামের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান জানান, গত ২৭ তারিখ দিবাগত রাতে কিছু লোক একটি ছেলেকে শহরে হামলা চালিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনার কিছু ভিডিও ফুটেজ হয়তো আমার মালিকানাধীন রাজা কমপ্লেক্সের সি,সি ক্যামেরার ফুটেজে সংরক্ষণ রয়েছে৷ থানা পুলিশ এই ভিডিওটি আলামত হিসেবে সংরক্ষণ করতে চাইলে পুলিশ রাজা কমপ্লেক্সে উপস্থিত হওয়ার পূর্বেই পৌর এলাকার আনমনু গ্রামের কতিপয় একদল লোক স্থানীয় কাউন্সিলর নানু মিয়ার লোকজন হঠাৎ রাজা কমপ্লেক্স হামলা চালিয়ে ভিডিও সিসি ফুটেজ ও আলামত নষ্ট করতে এবং সিসি ক্যামেরা মেশিন লুটপাট করে নিতে চায়। এসময় মার্কেটের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন।

নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্রকে সহপাঠীরা ছুরি আঘাত করে হত্যা!

এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র সশ্র নিয়ে রাজা কমপ্লেক্সে তারা ভাংচুর করে৷ এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ঢাকা থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলেন এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। তিনি উভয় পক্ষকে সংঘর্ষ পরিহার করে শান্ত তাকার আহবান জানিয়ে ঘরে ফিরে যাবার আহবান জানান। এরপরও আবার তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ১৪জনকে আটক করে। এতে আহত অনেকেই নবীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকের অবস্থার বেগতিক দেখে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৪৫ রাউন্ড টিয়ারশেল কাদানে গ্যাস ও ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। থানার ওসি তদন্ত সহ ৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। শহরে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ অনুপ বলেন, আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেছি।



বিষয়: #  #  #  #  #  #  #  #  #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)