শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
শনিবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর (অবঃ) গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যু রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর (অবঃ) গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যু রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন
২২২ বার পঠিত
শনিবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর (অবঃ) গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যু রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন

বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর (অবঃ) গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যু রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্নলন্ডনঃ নাফেরার দেশে চলে গেলন জাতির শ্রেষ্ট সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর (অবঃ) প্রাপ্ত গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘‘সিএমএইচএ‘‘ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না…..লিল্লাহি……রাজিউন)। মৃত্যূকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। সেনাবাহিনীর লাশবাহি ভ্যানে তার মরদেহ প্রথমে নেয়া হয় ঢাকা সেনানিবাসের সিগন্যাল কোরে সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ সামরিক মর্যাদা প্রদান শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মরদেহ আনা হয় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টস্থ বাসভবনে , ১৪ ফেব্রুয়ারী সকাল আট ঘটিকায় ঢাকা সেনানিবাস এলাকার ইসিবি চত্তর মানিকদিস্থ তার নিজ বাসভবন চৌধুরী কুঞ্জে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লাশবাহি এম্বুলেন্সে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের বৃহত্তর কামারগাঁও পুরাদিয়া (নূরগাঁও) গ্রামে সেখানে দ্বিতীয় দফা নামাজে জানাজা শেষে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক গোরস্থানে পিতা ইয়াজ উদ্দিন চৌধুরীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। তার জন্মস্থান গ্রামের বাড়ীতে লাশবাহি এম্বুলেন্স পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়, নূরগাঁও মাদ্রসা ময়দানে নবীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ শাহীন দেলোয়ারের উপস্থিতিতে পুলিশর এস.আই অনিক পাল ও এ.এস.আই সুমনের নেতৃত্বে একদল চৌকস পুলিশ তাঁকে গার্ড অব অনার রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করেন।

জানাযার পূর্বে মরহুমের জীবন বৃতান্ত নিয়ে আলোচনা করেন, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল, দীঘলবাক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুজাত চৌধুরী, মরহুমের পুত্র তারেক ঈকবাল চৌধুরী টিপু সহ আরো অনেকেই। এসময় উপস্থিত থেকে জানাযায় অংশ নেন সিলেট জালালাবাদ সেনানিবাসের পক্ষ থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সালেহ উদ্দিন, নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, নূরগাঁও মাদ্রাসার মুহতামিম হোসাইন আহমদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চৌধুরী শেফু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল সিদ্দিকী, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী কলমদর মিয়া, নবীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযুদ্ধো সন্তান কমান্ডের সাধারন সম্পাদক নিজামুল ইসলাম চৌধুরী, বীমা ব্যক্তিত্ব আমিনুল ইসলাম চৌধুরী শামীম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ।

সেখানে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসসদের পক্ষে থেকে তার কফিনে ফুল দিয়ে সম্মাননা জানান নবীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ শাহীন দেলোয়ার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী (সেলিম) ও মুক্তিযোদ্ধা জালাল সিদ্দিকী। এর পর উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেয়া হয় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা।

জনাব গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন, ১৯৫৭ সালে প্রথম প্রমোশন লাভ করেন। ১৯৭১ সালে ঢাকা ক্যানটনমেন্টে সিগন্যাল কোরে কর্মরত অবস্থায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি পাঁচ নং সেক্টরের একজন সাবসেক্টর কমান্ডার হিসেবে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন। তিনি বেশ কয়েকটি সম্মুখ সমরে অংশ নেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সুনামগঞ্জের বেরীগাঁও অপারেশন ও খাংলার হাওরের যুদ্ধ । এই সম্মুখ যুদ্ধে কয়েকশ পাক সেনা ও রাজাকার নিহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের নয়মাস ব্যাপী বালাট সাব সেক্টরের অধিকাংশ এলাকাই ছিল মুক্তাঞ্চল। তাদের প্রতিরোধের কারণে পাকবাহিনী এই অঞ্চলে ঠিকে থাকতে পারেনি। যুদ্ধকালীন সময় দেশের অভ্যন্তরে তামাবিল ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত এলাকায় তিনি মুক্তিযুদ্ধাদের প্রশিক্ষন দিতেন। তার অধীনে দেশের অনেক নামীদামি ব্যক্তিরা যুদ্ধ করেছেন এর মধ্যে রয়েছেন দেওয়ান ওবায়দুর রাজা চৌধুরী ও বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তার আরেকটি পরিচয় ছিল জয়বাংলা। উঠতে বসতে বা কোন সামরিক অফিসারকে সম্মান জানাতে মুখে উচ্চারন করতেন জয় বাংলা। তার সম্মানার্থে তাহিরপুর সীমান্তে একটি বাজার প্রতিষ্টা করেন এলাকাবাসী বাজারটির নাম দেন জয়বাংলা বাজার। তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবর গ্রহন করেন। অবসর কালীন সময় তিনি একাধিক সামাজিক ও জনহিতকর কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। ডিফেন্স এক্স-সোলজার্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (ডেসওয়াস) এর সম্মানিত উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুকালে তিনি এক পুত্র দুই কন্যা নাতি-নাতনি সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। মরহুমের মাগফেরাতের জন্য সকলের দোয়া চেয়েছেন লন্ডনে বসবাসরত তার চাচাত ভাই সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী ও ভাতিজা আক্তার হোসেন চৌধুরী।

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন



বিষয়: #  #  #  #  #  #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)