শুক্রবার ● ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » ঢাকা » জানুয়ারির বাতাসে অভিশপ্ত ঢাকা!
জানুয়ারির বাতাসে অভিশপ্ত ঢাকা!
প্রতিবছর জানুয়ারি আসলেই ঢাকার বাতাস যেন অভিশপ্ত হয়ে ওঠে । গত ৮ বছরে এই নগরে বায়ুর মান পর্যালচনা করলে দেখা যায় বায়ুদূষণ সব থেকে বেশি থাকে বছরের শুরুর মাসেই।
ক্যাপসের গবেষণায় চলতি জানুয়ারিতে গত বছরের তুলনায় কম হলেও বায়ুর মান ছিল অতি মাত্রায় অস্বাস্থ্যকর। শুষ্ক আবহাওয়া, অপরিকল্পিত নির্মাণ, অনিয়ন্ত্রিত ইটভাটা আর মেগা প্রকল্পে পরিবেশ আইন না মানাকেই দুষছেন পরিবেশবিদরা।
সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়ায় বায়ুদূষণের মাত্রা একটু বেশিই থাকে। তাই জানুয়ারিতে যেন খেই হারায় ঢাকার বাতাস। ক্যাপসের তথ্য বলছে, ২৪ সালের জানুয়ারিতে ২৮ দিনই রাজধানীর বায়ুর মান ছিল খুব অস্বাস্থ্যকর। আর তিন দিন ছিল দুর্যোগপূর্ণ বায়ুর মান।
তথ্য বলছে, গত আট বছরে জানুয়ারিতে ২৪২ দিনের মধ্যে ৩৮ দিনই ছিল দুর্যোগপূর্ণ। আর ১৭৩ দিন ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর বায়ু। আর দু:খজনক হলেও সত্য এই আট বছরের জানুয়ারিতে একদিনও নির্মল বায়ু পায়নি ঢাকাবাসী।
ক্যাপসের গবেষণায় অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে জানুয়ারি মাসের বায়ুর মানের সূচক দেখলে বোঝা যায় ভয়বহতা। ওই বছর স্কোর ছিল ২৪৮, ২০১৮ সালে ২৪০, তার পরের বছরে ২৪০। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বায়ুর মান ছিল ২৩৫। ২১ সালে ২৬২ পরের বছর ২২২। ২৩ সালে সর্বোচ্চ ২৮১ আর চলতি বছর যা ছিল ২৬০। বিগত আট বছরের জানুয়ারির মধ্যে দূষণের দিক থেকে ২০২৪ সাল ছিল তৃতীয় অবস্থানে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
মূলত শুষ্ক আবহাওয়া, এই মৌসুমে নির্মাণ কাজের গতি বেশি, সচল ইটভাটা উসকে দেয় দূষণ। এখানে লক্ষণীয় যে মেট্রোরেলের কাজ শেষ হওয়ায় চলতি বছর গত বছরের তুলনায় দূষণ কমেছে ৭ দশমিক ৫১ ভাগ।
ক্যাপসের চেয়ারম্যান ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এই সময়ে বৃষ্টিপাত কম হয়। আবহাওয়া শুষ্ক থাকে। আবার এই সময়ে নির্মাণ কাজ, সংস্কার কাজ বেশি থাকে। আর নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করতে গিয়ে ইটের ভাটার উৎপাদন সর্বোচ্চ থাকে।
সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ চাইলেই পুরোপুরি নয় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা যায় দূষণ। মন্ত্রী জানলেন এবার কঠোর হচ্ছেন তারা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন বলছেন, আমরা পোড়ানোর একটা মাত্রা নির্ধারণ করে দিতে পারি। এরপর এটা বাস্তাবায়ন করার দায়িত্ব শুধু আমাদের না। স্ব স্ব সংস্থা আছে। এখানে সমন্বয় বড় বিষয়। আমরা এখন সে কাজটা করার চেষ্টা করছি।
পরিবেশ রক্ষায় নাগরিকদের সচেতনতা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য তাদের।
বিষয়: #অভিশপ্ত #জানুয়ারি #ঢাকা #বাতাস