শুক্রবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ‘কিনার টেকা নাই, কম্বল পাইয়া বেজান খুশি অইলাম’
‘কিনার টেকা নাই, কম্বল পাইয়া বেজান খুশি অইলাম’
গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা নিচের দিকে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও রেকর্ড হয়েছে কয়েকদিন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মৌলভীবাজারের হোসনাবাদ চা বাগানসহ আশপাশের অসহায় লোকজন প্রথম আলোর ট্রাস্টের টোকেন হাতে আসতে শুরু করেন হোসনাবাদ নাটমণ্ডপ প্রাঙ্গণের দিকে। তাদের অনেকেই বয়সের ভারে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না। বেশিরভাগ বয়স ষাটোর্ধ।
গত কয়েকদিন ধরে হোসনাবাদ চা বাগান, নন্দরানী চা বাগান, জঙ্গলবাড়ি চা বাগান, এম আর খান চা বাগান ঘুরে ঘুরে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহযোগিতায় প্রথম আলোর স্থানীয় প্রতিনিধি অসহায় এই মানুষদের তালিকা তৈরি করেন। বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে শীতার্ত অসহায় এই মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শীতবস্ত্র কম্বল। হাসি ফুটে উঠে কম্বল নিতে আসা অসহায় মানুষদের মুখে।
এসব মানুষের মধ্যে অম্বরতী তাঁতী একজন। বয়স তাঁর ৬৫ এর কাছাকাছি। হাতে কম্বল নিয়ে তিনি বলেন, “বাগানো বিকাল থাকি বেজান (বেশি) ঠান্ডা লাগে। হামরা (আমরা) টাউন থাকি বহুত দূরের বাগানে থাকি। সব সুবিধা টাউনের মানুষ পায়, এত দূরে কেউ কম্বল লইয়া আয় না। এই ঠান্ডার মধ্যে অনেক কষ্ট হয় আমরার। টাকার লাগি একটা নতুন কম্বল কিনতে পারি না। পুরান কম্বল দিয়া অনেক কষ্টে শীত পার করি। আপনারা হামদের (আমাদের) কথা ভাবিয়া এত দূরে আইয়া কম্বল দিছেন। কম্বলটা পাইয়া খুব ভালো লাগছে। ভগবান আপনাদের ভালা করবে।
শুধু অম্বরতী তাঁতী নয়। প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল পেয়ে এভাবেই অনুভূতি প্রকাশ করেন কম্বল নিতে আসা বিভিন্ন চা বাগানের বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার হোসনাবাদ চা বাগানের নাটমণ্ডপে প্রায় দুই শতাধিক অসহায় মানুষের মাঝে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে এই কম্বল তুলে দেওয়া হয়। হোসনাবাদ, নন্দরানী, জঙ্গলবাড়ি, এমআরখান চা বাগানের বাসিন্দারা আসেন কম্বল নিতে। বয়সের ভারে যারা আসতে পারেননি, তালিকা দেখে তাদের বাড়িতে কম্বল পৌঁছে দেওয়া হয়।
কম্বল বিতরণ কালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, চা শ্রমিক নেতা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রেমসাগর হাজরা, হোসনাবাদ চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সুদাম তাঁতী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, ওয়াল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার কাজল হাজরা প্রমুখ।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, চা বাগানে সবচেয়ে বেশি শীত পড়ে। এখানে শ্রমিকরা যে মজুরি পায়, তা দিয়ে সংসারের খাবার জোগাড় করাই কষ্টকর। প্রথম আলো ট্রাস্ট যেভাবে চা বাগানের মানুষদের জন্য এগিয়ে এসেছে। আশা করবো সরকারের পাশাপাশি দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এভাবে মানবতার কাজে এগিয়ে আসুক। এতে করে শীতার্ত অসহায় মানুষের কষ্ট দূর হবে।
বিষয়: #কিনার #টেকা #নাই