সোমবার ● ২২ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » গল্প অস্তিত্ব
গল্প অস্তিত্ব
আচ্ছা তুই তো ভা-র্জি-ন তোর রেট টা একটু বেশি হবে বিথি আয়না কে বলল,
যদি ওয়ান টাইম কাস্টমার আসে তাহলে ঐ যে কাশফুল দেখছিস ঐখানে নিয়ে যাবে, আর যদি সারা রাতের জন্য আসে আমাকে বলবি,আমি সব ঠিকঠাক করে দিবো,
আয়না কাশফুলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে,,
এই কাশফুল দেখতে ছবি তোলতে আসে তার প্রিয় মানুষটির হাত ধরে কিন্ত আমি, কি কপাল আমার…
একটি মেয়ের কয়টি Bf আছে সেটা আমরা খুব ভালো করে খোঁজ খবর রাখি কিন্ত,,
একটি মেয়ে তার পরিবারের জন্য নিজের শরীর কে বিলিয়ে দিতে চলেছে নাম তার আয়না,ডাক নাম অভাগি
রাত ১২টা বাজে,
শরীরে রঙিন শাড়ি জড়িয়ে, কড়া পারফিউম লাগিয়ে,
ঠোঁটে লাল লিপস্টিক মেখে,
চলল ঘুমন্ত রাস্তায় তার এক বান্ধবীর সাথে সেও অভাবে পড়ে এই রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে,
যেতে যেতে সেই পতিতালয়ের মোড়ে
এসে হাজির হল,
এমন সময় আয়নার বান্ধবী বলল আয়না কোমর থেকে শাড়ি টা শরিয়ে নাভি বের কর,না হলে কাস্টমারের
নজরে আসেনা আকৃস্টি হবে না তোর
প্রতি,,
আয়নার বান্ধবীর নাম বিথী,,,
– বিথীর কথা মতো নিজের নাভিটা বের করে আয়না,
আয়নার মন টা কাঁদতে থাকে কারন একটা মেয়ে অহংকার হল তার ইজ্জত, সেটি আজ কোন কুকুরের খোরাক হতে চলেছে,,,
– বীথি এটাও বলে দিলো প্রথম প্রথম অনেক লাগবে কিন্ত মুখ বুঝে সহ্য করবি,তোর কোন কথা শুনবে না,
কুকুরের মত ছিড়ে ছিড়ে খাবে,,
– আয়না বিথি কে বলল তুই চিন্তা করিস না,,আমি পারবো,
– বিথি আবার বলল, আয়না তুই একবার ভেবে দেখ এখনো সময় আছে,,
– আয়না বলল নারে কাল বাড়িতে টাকা পাঠাতে হবে,আজ বাদ দিলে মা হয়তো বাঁঁচবে না,
বিথি : কিন্তু এই ভাবে তোর জীবনটা নস্ট করে দিবি,
আয়না : তাছাড়া আর কি করব কোন উপায় নাই,
বিথি আয়না কে ডেকে বলল এদিক আয় শুন,
আয়না : কি ??
– তুই তো ভার্জিন তোর রেট টা একটু বেশি হবে,,
এমন সময় এটা প্রাইভেটকার আসলো
ব্রেক টা করলো বিথির সামনে,
গাড়ির দরজা ঠেলে একজন ইয়াং ভদ্রলোক নামলেন,
আর এদিক ওদিক খোঁজতে লাগলেন,
এমন সময় বিথি বলল,আমাকে কি পছন্দ হয় না,
ভদ্রলোক : আমার সুন্দরী লাগবে, আপনারা তো মেকাপ দেওয়া,আমার নেচারাল বিউটি লাগবে,
বিথি ভদ্রলোকের পেটে হাত দিয়ে তুই মনে হয় নতুন, আমায় দেখ না অনেক মজা দিবো,,
ভদ্রলোক তখন বললেন আপনাকে আমার লাগবে না,আমার নতুন মেয়ে লাগবে।
বিথি : নতুন মাল লাগবে,
তখন আয়নার কথা মনে পড়লো,
বিথি আয়না কে ডেকে আনলো আর বলল এই যে নতুন মাল,একদম খাটি ভার্জিন অভাবে পড়ে এসছে,
আয়না নিচের দিকে মাথা দিয়ে আছে কোন কথা বলছে না,
বিথি তখন ভদ্রলোক কে বলল কত দিবি,
ভদ্রলোক : বলল আপনি বলেন কত দিতে হবে.
বিথি আয়নার কানে কানে ফিসফিস করে বলল কত চাইবো, মাল কিন্ত বড়লোক আছে,আয়না বলল দশহাজার বল,
বিথি যা তোর কোন ধারণাই নাই,
বিথি ভদ্রলোক কে বলল, চল্লিশ হাজার দিতে হবে একরাতের জন্য,খাটি ভার্জিন,,
ভদ্রলোক : আচ্ছা আমি তাই দিবো তারাতাড়ি গাড়িতে উঠেন…
বিথি আয়না কে গাড়িতে তুলে দিয়ে বলল কোন সমস্যা হলে আমাকে ফোন দিস,
আর ভদ্রলোক কে বলে দিলো বিথি,
দেখ মেয়েটা নতুন একটু আস্তে বুঝছিস তো আর বেশি যেন করিস না,মেয়েটা কিন্ত নতুন, পরে দেখবি কেলিয়ে পড়ে আছে আর তুই ধর্ষণের কেচ খেয়ে গেছিস…
ভদ্রলোক বলল আচ্ছা আপনি চিন্তা করবেন না।
বিথি : তোদের ছেলেদের নিয়ে তো চিন্তা,
জিনিস পেয়ে আর হুস থাকে না হায়নার মত তোরা ।
কথা না শেষ হতেই গাড়ী স্টার্ট দিয়ে চলে গেলো,
গাড়ি ছুটে চলেছে গুলির বেগে প্রথম
সেক্স আয়নার ভয় ভয় লাগছে,
এই সব ভেবে আয়নার শরীর ঘেমে যাচ্ছে লোকটি তখন এসি অন করে দিলেন,আয়নার অবস্থা দেখে,
দুজনের মাঝে কোন কথা নেই,দুজনেই চুপচাপ,
প্রায় ২০মিনিট পর ভদ্রলোক টি গাড়ি থামালেন,
আর আয়নার বুকটা ধুকপুক করতে লাগলো না জানি কি হয়,,,
না জানি ভিতরে কতজন আছে কিন্ত গাড়ি থেকে বের হয়ে দেখলো এটি একটি বিউটি পার্লার আয়না কিছুই বুঝলো না, তাহলে এখানেই আজ তার দেহ বিসর্জন দিতে হবে….
বিউটি পার্লারের সামনে গাড়ি পার্ক করা হল,রাত তখন ১২টা বাজে এত রাতে কোন পার্লার খোলা থাকে মনে তো হয় না,
আয়না মনে মনে ভাবলো হয়তো আজ
একটি নারীর অহংকার ধূলিসাৎ হতে
চলেছে কিন্ত সেটা তো নিজের ইচ্ছায়,
যাই হোক ভদ্রলোক টি আমাকে ভিতরে নিয়ে গেলেন,
সেখানে ২জন ভদ্রমহিলা ছিলেন,
তখন ভদ্রলোক টি বললেন তারাতাড়ি কাজ করেন…
আয়না মনে মনে মেয়ে হয়ে আরেক মেয়েরে কি করবে,
তখন আয়না বলে উটলো,উনারা কি করবে,?
– ম্যাম আমরা আপনাকে বউ সাজাবো,
আয়না : বউ আমাকে বউ সাজাবেন মানে। এই সাহেব এই সবের মানে কি?
ভদ্রলোক টি তখন পার্লের মেকানিক, কে একটু বাহিরে যেতে বললেন,,
তারা দুজন বাহিরে গেলেন,ভদ্রলোক টি বললেন,আমি নিলয় চৌধুরী কিন্ত সবাই আমাকে নীল বলে ডাকে,
নীল আয়না কে বলল,আপনি যা ভাবছেন তা করব না,
আয়না : তাহলে কি করবেন,নাকি আমাকে পাচার করে দিবেন,
নীল : আরে না তা করবো কেনো,আমাকে কথা শেষ করতে দেন,
আয়না আচ্ছা বলেন,
নীল : আপনাকে অভিনয় করতে হবে,,
আয়না : কই সিনেমায় নাকি নাটকে।
এবার নীল বিরক্ত হয়ে আরে ভাই আগে আমার কথা টা শুনেন,,,
আয়না : হুম বলেন।
নীল : অভিনয় টা করতে হবে আমার মায়ের সাথে, আমার বউয়ের ভূমিকায়,
আয়না : এখন আপনাকে বিয়ে করতে হবে আমি এই সবের মধ্যে নাই,
নীল : না না,শুধু মায়ের সামনে অভিনয় করবেন,আসলে আমার মায়ের বড় ধরনের একটা রোগ হয়েছে যে রোগের কোন প্রতিকার নাই, বিদেশ পর্যন্ত নিয়ে গেছি কাজ হয় নাই,
ডাক্তার বলে দিছে বেশিদিন বাঁচবে না,
কিন্ত মায়ের ইচ্ছে হল তার ছেলের বউ দেখতে চায়, তাই আপনাকে।
আয়না : তাহলে আপনি বিয়ে করলেই তো হয়,,
নীল : আসলে আমার gf আছে,,
আয়না : তাহলে তাকে নিয়ে যাচ্ছেন না কেনো,তাকে বিয়ে করেন,তাহলে তো হয়ে গেলো,
নীল : আসলে আমার gf এই যুগের মর্ডান মেয়ে তো, ও এই সব শাড়ি, চুড়ি, আর সব সময় বাসায় থাকতে পারবে না,বুঝেননি তো মায়ের সেবা যত্ন করতে হবে, ও এই সব করতে পারবে না,,,ও না করছে এই সব আজাইরা ঢং করতে পারবে না,,
আয়না মনে মনে আমি মনে হয় প্রাচীন যুগের ম্যাইয়া…
আয়না : আচ্ছা ঠিক আছে কিন্ত আমাকে কত দিবেন,
নীল : আপনার পরিবারের সব খরচ আমি বহন করবো,,আর আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু,
আয়না : অনার্স শেষ, কেনো ??
নীল : কাজ শেষ হলে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিবো,চলবে কি ??
আয়না মনে মনে চলবে না মানে দৌড়াবে,
নীল : তাহলে আমি যা বলব তাই শুনতে হবে এরকম একটা চুক্তিনামা করে ফেলি,
আয়না : ঠিক আছে…
তাহলে এখন বউ সাজাতে বলি
আয়না : আমি নিজে সাজি এরা মুখে বস্তা বস্তা ময়দা দিবে…
– ম্যাম এগুলো সব বাহিরের খুব ভালো,
আয়না : ঐ তো বস্তার ময়দা আর প্যাকেটের ময়দা কিন্ত সব তো ময়দাই,
আমাকে সাজতে দেন,
– কিন্ত স্যার কি আমাদের পেমেন্ট দিবেন,,
আয়না : হুম স্যার দিবেন,
আয়নার ছোট বেলা থেকে বউ সাজার খুব ইচ্ছে আজ সেটা পূরন হল,কিন্ত মিথ্যা বিয়ের নাটক।
আয়নার সাজুগুজু শেষ হতে হতে রাত একটা বেজে গেলো,
নীল আবার গাড়ি করে রওনা হল বাসার উদ্দেশ্য….
আয়না বউ সেজে আমার পাশে বসে আছে আর আমি নীল ড্রাইভিং সিটে বসে…
আমি জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা তোমার নাম জানি কি,,
– আমার নাম আয়না,
আমি : ও তা আয়না তা আপনি ভুল পথে যাচ্ছিলেন কেনো,
আয়না : সোনার চামচ মুখে নিয়ে বড় হয়েছেন তো তাই অভাব কাকে বলে জানেন না…
আমি : তাই বলে নিজের।
আয়না : তাছাড়া কোন উপায় নাই,কাল আমার টাকা লাগবে বাড়িতে পাঠাতে হবে…
আমি : হুম পেয়ে যাবেন,,,একটা কথা বলি,,।
আয়না : হুম বলেন.
আমি : বউ সাজে আপনাকে সুন্দর লাগছে…
আয়না মুচকি হেসে তাই…
আমি : আর শুনো আমাকে কিন্ত তুমি করে বলতে হবে বাসায়,
কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলাম…
কলিং বেল টিপতেই খালা দরজা খোলে দিলো খালা আমাদের কাজের বুয়া কিন্ত খালা বলে ডাকি,
খালা : ছোট সাহেব, এটা আমাদের বউ মা,,
আমি : হে খালা, মা কোথাই ??
খালা : আফা তো ঘুমাচ্ছে,,,
আমি : তাহলে ডাকার দরকার নাই,
খালা : কিন্ত আফার দেখলে তো মেলা খুশি হইতো,
আমি : আচ্ছা ডাকো ডাকো,
রহিমা খালা মা কে ডাকতে চলে গেলো আমি আয়না কে বললাম আসলেই পায়ে হাত দিয়ে সালাম করবা আর যা বলছি রাস্তায় মনে আছে তো,,
আয়না : আপনি কোন চিন্তা করবেন না,
একটু পর দেখি মা দৌড়ে আসছে কই দেখি দেখি আমার বউমা কে…
মা আসতেই আয়না পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে যাবে কিন্ত মা বলল আগে মুখ খানা দেখি আমার বউমার
আয়না লম্বা ঘোমটা দিয়ে আছে,
মা হাত দিয়ে ঘোমটা সরিয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে চমকে যায়….
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত
বিষয়: #অস্তিত্ব #গল্প