শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

Somoy Channel
শুক্রবার ● ১৯ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » শাড়ির আঁচল
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » শাড়ির আঁচল
৫৪ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৯ জানুয়ারী ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শাড়ির আঁচল

শাড়ির আঁচলতিতি কে কোলে তুলে এনে একটা রুমে নিয়ে আসে অর্ণব। তিতিকে ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে দিলো অর্ণব। তিতির শরীল থেকে আঁচলটা সরাতে নিলেই তিতি শাড়ির আঁচলটা ধরে ফেললো আর বললো….
“অর্ণব কি করছো তুমি এইসব ছাড়ো আমায়”
“তোমাকে আমি কতবার বলেছি যে তুমি শাড়ি পড়বে না তাও তুমি শাড়ি পড়ো। তোমাকে বলেছি তুমি শুধু আমার সামনে শাড়ি পড়বে অন্য কারো সামনে না তাও তুমি সব সময় এই কাজটা করো। তাই আজ তোমাকে শাড়ি পড়ার মজাটা বুঝাতে এসেছি তিতি বেবি।”
“অর্ণব আমি বুঝতে পারি না শাড়ি পড়লে প্রবলেম কোথায় কি হয়েছে শাড়ি পড়লে?”
“শাড়ি পড়লে তোমার পিঠ পেট অনেকটা দেখা যায় আর তোমাকে অনেক হ*ট দেখায় আর এইগুলো অন্যরা উপভোগ করে তাই আমি চাই না তুমি শাড়ি পড়ো”
“পাগলের মতো কথা বলবে না । আর এখন এইগুলো কমন সবাই এইভাবে পরে এই নিয়ে আর কোনো কথা শুনতে চাচ্ছি না আমি,উঠো আমার উপর থেকে উঠো বলছি তা না হলে আজই ব্রেকআপ করবো”
অর্ণব উঠে গিয়ে বললো …..
“সবাই পড়বে বাট তুমি না ওকে”
“আমি হাজার বার পড়বো তোমার কি তাতে আর শুনো তোমার সাথে মাত্র আমার চারমাসের রিলেশন বেশি অধিকার ফলাতে চাইলে শুরুতেই ব্রেকআপ করে দিবো”
কথাটা বলে তিতি অর্ণব কে ওইখানে রেখেই চলে যায়।
আপনারা তো তিতি আর অর্ণব ওদের সম্পর্কে তো কিছুটা বুঝতেই পারছেন। তিতি এইবার অনার্স থার্ড ইয়ারের শেষের দিকে বলতে গেলে ফোর্থ ইয়ারে আর অর্ণবের সাথে তিতির এক কলেজ প্রোগ্রামে দেখা হয়। অর্ণব ছিলো সেই প্রোগ্রমের প্রধান অতিথি আর ওই অনুষ্ঠানে তিতি ড্যান্স করেছিলো সেই থেকে অর্ণব তাকে পছন্দ করে। পরে আস্তে আস্তে কলেজ থেকে তিতির সব ডিটেলস নেয় অর্ণব। ফেসবুকে হালকা পাতলা কথা বলতে বলতে ওদের রিলেশন এখন ওদের রিলেশন শুরু হয়েছে চারমাস হয়েছে। আজ অর্ণব তিতি কে ওর এক ফ্রেন্ডের বার্থ ডে উপলক্ষে একটা ক্লাবে নিয়ে এসেছিলো আর এইখানে তিতি শাড়ি পড়ে এসেছে তাই অর্ণব সবার সামনে তিতি কে কোলে তুলে ক্লাবের উপরে একটি রুমে নিয়ে আসে।আর পরের কাহিনী তো জানেন আপনারা…..
তিতি এখনও ক্লাবে ফ্রেন্ডের সাথে ইনজয় করছে আর এই ফাঁকে অর্ণব লুকিয়ে তিতির বাসায় যায় আর…..
তিতির সব শাড়ি কেটে কুচি কুচি করে রেখে আসে অর্ণব যেনো তিতি আর শাড়ি না পড়তে পারে। তিতিকে অর্ণব অনেকবার বলছে যেনো শাড়ি না পরে বাট তিতিও বলে দিয়েছে ও শাড়ি পড়বে তাই আজ অর্ণব লক্ষী ছেলের মতো তার কাজ করে তিতির বাসা থেকে চলে গেছে।
এইদিকে তিতি পুরো ক্লাব অর্ণবকে খুঁজতে ব্যাস্ত। অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে পরে ওর বাবা মা চিন্তা করবে। কোনো উপায় না পেয়ে শেষমেশ ফোন দিলো অর্ণব কে….
“ফোনটা রিসিভ কর ছাগল। আমাকে একা রেখে কই গিয়ে মরছিস (তিতি রাগে কি বলছে ও জানে না ওর এখন রাগ+ ভয় করছে ক্লাবে অনেক ছেলেই তার দিকে কেমন ভাবে যেনো তাকিয়ে আছে)”
অর্ণব দেখলো তিতির ফোন । ফোন দেখেও রিসিভ করলো না। ও চাইছে তিতি যেনো আরেকটু বিরক্ত হোক। মনে মনে শয়তানি হাসি দিলো অর্ণব।
“আজ যদি তোকে সামনে পাই গর্ণব সরি অর্ণব তোকে শেষ করে ফেলবো আমি”
“কাকে শেষ করবে আমার তিতির পাখি হুম”
তিতি ওর পিছনে তাকিয়ে দেখে অর্ণব এক হাত পকেটে আর অন্য হাত দিয়ে চুল ঠিক করছে। তিতি তো অর্ণবের হাসি দেখে রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে….
“ওই শালা তুই এইখানে আমাকে একা রেখে কই গিয়েছিলি তোকে বলছিনা আমি এইসব জায়গায় থাকতে পছন্দ করি না”
“হুম জানি তো তাই তো ট্রেনিং করাতে নিয়ে এসেছি যেনো বিয়ের পর কোনো সমস্যা না হয়”
“হুম বুঝছি এখন চলো আমায় বাসায় দিয়ে আসো”
“এক্ষনি চলে যাবে?”
“হুম। আব্বু আম্মু বলেছিলো ১১ টার আগে বাসায় থাকতে আর এখন ১১.৩০ বাজে চলো প্লিজ”
“ওকে চলো মহারাণী”
অর্ণব আর তিতি গিয়ে গাড়িতে বসলো। অর্ণব সিট বেল্ট লাগিয়ে দিলো তিতি কে পরে নিজের সিট বেল্ট বাঁধলো। আকাশে চাঁদ উঠেছে খুব বড় করে তিতি গাড়ির জানালাটা খুলে দিয়ে হালহা হালকা বাতাস আসাটা উপভোগ করতে লাগলো। অর্ণব তিতির এই মুগ্ধ হয়ে থাকা চেহারা হালকা আলোতে দেখতে লাগলো। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তিতি পরিবেশ উপভোগ করছে। এই পরিবেশে এখন যদি গান না হয় তাহলে কি জমে। তাই অর্ণব একটি গান প্লে করলো…..
“একসাথে রয়েছি দুজন”
“একই ডরে বাধা দুটি প্রাণ”
“ছিড়বে না কভু এই বাধন”
“আসলে আসুক তুফান ।”
“ও আমার বন্ধুগো চিরসাথী পথ চলার”
“তোমার জন্য গড়েছি আমি মঞ্জিল ভালবাসা ।”
অর্ণব গাড়ি চালাচ্ছে আর হারিয়ে যাচ্ছে এই গানের ভিতর। তিতি ও উপভোগ করছে এই রোমাঞ্চকর অনুভূতিটা। গাড়ি এসে থামলো তিতির বাসার সামনে। তিতি যেই গাড়ি থেকে নামতে যাবে ঠিক তখন অর্ণব তিতির হাত ধরে টান মারে তিতি বুঝে উঠার আগেই অর্ণবের বুকে পরে যায়….
“আজকের এই মুহূর্ত যদি আরো কিছুটা সময় থাকতো বা এই মুহূর্ত যদি কোনোদিন শেষ না হতো তাহলে কতই না ভালো হতো আমার তিতির পাখি”
“সত্যিই আজকের মুহূর্ত গুলো অসাধারণ লেগেছে আকাশে গোল চাঁদ মিষ্টি বাতাস আর সাথে গানটা সত্যিই খুব সুন্দর ছিলো”
অর্ণব তিতির কথা শুনে নিজের কপাল নিজেই থাপ্পড় দিতে লাগলো আর বললো….
“এই গাঁধিকে আমি কি বুঝিয়েছি আর গাঁধী কি বুঝলো”
“ওই রাম ছাগল আমাকে ভুলেও গাঁধী বলবা না রাম ছাগল কোথাকার”
“তো কি বলবো?”
“আমার সুন্দর একটি নাম আছে সেই নামে ডাকবে তিতি ওকে”
“হুম বুঝছি তিতুল সরি তিতি”(হাসি দিয়ে)
“ওই তুই আমার সাথে কথা বলবি না যা ব্রেকআপ”
“আচ্ছা যাও বাসায় আর গিয়ে দেখো তোমার জন্য অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে”
সারপ্রাইজের কথা শুনে তিতি খুশি হয়ে বললো….
“কি গো সারপ্রাইজটা বলো না”
“কেনো বলবো তুমি না ব্রেকআপ করলে”
“আমি দিনে হাজারবার ব্রেকআপ করি তাই বলে কি সত্যি সত্যি নাকি ”
“আগে আদর করো পরে বলবো”
“প্লিজ বলো না। আর পরে আদর এখন না”
“ওকে আমারটা আমিই বুঝে নেই”
কথাটা বলে অর্ণব তিতির ঠোঁটে কিস করলো আর তিতি তো পুরাই শকড । এই চারমাস এইটা ছিলো তিতির ফাস্ট কিস। ওর তো দুই চোখ রসগোল্লার মতো বড় বড় হয়ে গেছে। অর্ণব তিতির দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো আর বললো….
“এখন যাও গিয়ে দেখো সারপ্রাইজ আর অনেক রাত হয়েছে আমি ও যাই। আল্লাহ হাফেজ”
তিতি দৌড়ে ওইখান থেকে বাসায় চলে যায় আর অর্ণব তিতির দৌড় দেখে হাসতে থাকে আর বলে…..
“পাগলী একটা”
অর্ণব গাড়ি চালিয়ে বাসায় চলে যায় আর ভাবে….
“আজ রাতের জন্য ফোনটা অফ করে দিবো। সকালে পরে বুঝা যাবে হাহাহা”
তিতি ওর রুমে এসে দেখে ওর সব শাড়ি কে যেনো কুচি কুচি করে কেটে দিয়েছে তাই ও ওর আম্মু কে ডাকতে থাকে। এত রাতে মেয়ের চিৎকার শুনে তিতির আম্মু তিতির রুমে আসে আর বলে….
“কি হয়েছে এত চিল্লাচিল্লি করছিস কেনো?”
“চিল্লাবো না নাকি এখন লুঙ্গি ড্যান্স করবো। দেখো কে কেনো আমার সব শাড়ি কেটে ফেলছে”
“ওহহ এইটা অর্ণব করেছে আমাদের বলেছে তুই বাসায় আসলে বলতে। আর শুন কিছু শাড়িই তো এইটা নিয়ে এত হাইপার হচ্ছিস কেনো যা ঘুমা”
তিতির মা চলে গেলো আর তিতি রাগে কষ্ট কান্না করতে লাগলো পরে অনেকগুলো ফোন মেসেজ অর্ণবকে দিলো বাট অর্ণব কে পেলো না। সেইরাত তিতি না ঘুমিয়ে সারারাত কান্না করলো।
সকালে ওর চোখ মুখ ফুলে লাল হয়ে আছে। ওকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে ও যে সারা রাত ঘুমাই নি। সকালে কিছু না খেয়ে একটা ব্যাগ হাতে নিয়ে কোথায় যেনো চলে গেলো। তিতির চলে যাওয়া দেখে তিতির আব্বু অর্ণবকে ফোন দিলো বাট ফোন বন্ধ ফেলো…..
অনেকক্ষন পর……
অর্ণব গতকাল ড্রিঙ্কস করেছে তাই বাসায় না গিয়ে ওর বাগান বাড়িতে ছিলো।হটাৎ করেই তার কানে কলিং বেল বাজার শব্দ আসলো। মনে হচ্ছে কলিং বেল টা আজ ভেঙেই ফেলবে। অর্ণব ওর ফ্রেন্ড রিফাতকে বললো দরজা খুলতে ।
রিফাত দরজা খুলে দেখে তিতি দাড়িয়ে আছে । রিফাত তিতি কে দেখে বললো…..
“ভাবী আপনি এত সকালে কি হয়েছে?”
“অর্ণব এইখানে?”
“হুম ভাবী। কিছু কি হয়েছে?”
তিতি কিছু না বলে সোজা অর্ণবের রুমে চলে যায়। এই বাড়িতে ও আরো দুইবার এসেছে তাই তার কোনো সমস্যা হলো না। ও গিয়ে অর্ণবের কলার ধরে তুলে ঠাস করে চড় মারে অর্ণবকে। অর্ণব আর রিফাত যেনো একটা ঘোরে চলে গেছে। কি হয়েছে তাদের মাথায় কিছু ঢুকছে না।
“তিতি কি হয়েছে তোমার আর তোমার এই অবস্থা কেনো?”
তিতি রাগে কষ্টে কান্না করে দিলো আর ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো…
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত



বিষয়: #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)