বৃহস্পতিবার ● ১৬ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » বিশ্ব » ভারতে টানেল ধস, পাঁচ দিনেও উদ্ধার হয়নি ৪০ শ্রমিক
ভারতে টানেল ধস, পাঁচ দিনেও উদ্ধার হয়নি ৪০ শ্রমিক
“বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, যেকোনো সময় আবার ধস নামার আশঙ্কা আছে। ধস নামলে পাইপ ঢোকানোর কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে”
কেটে গেছে ৯৬ ঘণ্টা। এখনো উদ্ধার করা যায়নি উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের। দিল্লি থেকে আনা হয়েছে মার্কিন ড্রিল। বুধবার উদ্ধারকারীরা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, এক দিনের মধ্যেই আটক শ্রমিকদের বের করার ব্যবস্থা করা যাবে। কিন্তু পাহাড়ে একের পর এক ধস নামতে থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দিল্লি থেকে একটি বিশেষ যন্ত্র আনা হয়েছে। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, এই বিশেষ ধরনের মার্কিন ড্রিলের সাহায্যে আটক শ্রমিকদের কাছ পর্যন্ত অনেক সহজে রাস্তা তৈরি করা সম্ভব হবে।
ওই ড্রিলের সাহায্যে একটি লম্বা পাইপ ঢুকিয়ে দেওয়া হবে ধস ভেদ করে। তার ভিতর দিয়ে শ্রমিকেরা বাইরে বেরিয়ে আসতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, যেকোনো সময় আবার ধস নামার আশঙ্কা আছে। ধস নামলে পাইপ ঢোকানোর কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, উদ্ধারকারীদের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ দল থাকা প্রয়োজন। পাহাড়ের চরিত্র বুঝে ড্রিলের কাজ যারা করাতে পারবেন।
এদিকে পাঁচ দিন ধরে ৪০ জন শ্রমিক আটকে থাকায় ঘটনাস্থলে উত্তেজনাও শুরু হয়েছে। বুধবার বেশকিছু সংগঠন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ দেখান। বৃহস্পতিবারও তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। পুলিশ অবশ্য জায়গাটি ঘিরে দিয়েছে। উদ্ধারকারী এবং বিশেষজ্ঞ ছাড়া আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আটক শ্রমিকেরা যাতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেন, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।
উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গের এই ধস আরও ব্যাপক কিছু প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে। মূলত চারধাম যাত্রা প্রজেক্টের জন্যই ওই সুড়ঙ্গ কাটা হচ্ছিল। ফলে ৫০ মিনিটের রাস্তা পাঁচ মিনিটে যাওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছিল প্রশাসন। বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, ৫০ মিনিট বাঁচানোর জন্য এই ভয়াবহ ধ্বংসলীলা চালানোর কী প্রয়োজন?
ঘটনাস্থলে গেছেন ইঞ্জিনিয়ার এবং পরিবেশবিদ বিভাংসু কাপারওয়ান। তিনি বলেন, “যে অঞ্চলে এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ চলছে, সেখানে পাথর নরম। এমনিতেই এই অঞ্চল ধসপ্রবণ। তার মধ্যে এমন সুড়ঙ্গ তৈরি অত্যন্ত বিপদজ্জনক।”
বিভাংসুর বক্তব্য, “সুড়ঙ্গ তৈরি হওয়ার পরেও বিপদের আশঙ্কা আছে। আরও বেশি ধস নামার আশঙ্কা আছে।”
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ দীপায়ন দে বলেন, “উন্নয়নের নামে সরকার পরিবেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিচ্ছে। যেভাবে হিমালয় কাটা হচ্ছে তা ভয়াবহ।”
দীপায়নের বক্তব্য, “পাহাড়ে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। তারপরেও কারও টনক নড়ছে না। এই মুহূর্তে এই ধরনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া উচিত।” বস্তুত, দীপায়নের বক্তব্য, “যে ধরনের সয়েল টেস্ট করে এই ধরনের প্রজেক্ট হওয়া উচিত, অনেক ক্ষেত্রেই তা হচ্ছে না। হলে এমন বিপর্যয় ঘটতো না। ওই অঞ্চলে এমন সুড়ঙ্গের নির্মাণই হতো না।”
বিষয়: # #টানেল #ভারত