শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
বৃহস্পতিবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে বিপদে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে বিপদে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব
১৪৫ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে বিপদে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব

ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে বিপদে প্রতিমন্ত্রী মাহবুবরুহুল হাসান শরীফ, হবিগঞ্জ : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। গত দুই নির্বাচনে সহজে জয় পেলেও এবারই তিনি প্রথম ভোটের লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। সংসদ মাহবুব আলী এলাকার উন্নয়নে কী করেছেন, কী করেননি তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সব বয়সী ভোটারদের নিয়ে যেভাবে ঈগল প্রতীকের প্রচার শুরু করেছেন, এবার মাহবুব আলীর নৌকা ঘাটে ভিড়বে কিনা, এ নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মো. মাহবুব আলী প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। পরে ও ২০১৮ সালেও তিনি জয়ী হন। মাহবুব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি টানা দুবারের এমপি এবং দ্বিতীয় দফায় প্রতিমন্ত্রী হয়েও নির্বাচনী এলাকায় প্রত্যাশিত উন্নয়ন করেননি। এলাকাবাসীর পাশে যেভাবে থাকার কথা, সেভাবে থাকেননি। মুষ্টিমেয় কিছু নেতা ছাড়া দলীয় নেতাকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। বিএনপি নেতার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজকে হঠাৎ মাহবুব আলী তার বাবার নামে নামকরণ করেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তার আমলের সার্বিক উন্নয়নের কথা বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় তুলে ধরছেন মাহবুব আলী। তার বাবা তৎকালীন এমপিএ মাওলানা আছাদ আলীর সাদাসিধে জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন, যিনি এমপিএ হয়েও জনগণের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে পাঞ্জাবির পকেটে সিল নিয়ে বেড়াতেন। তার বাবার পরামর্শেই তিনি এলাকার জনগণের সেবা করতে এসেছেন বলে প্রচার করছেন। এ ছাড়া অতীতে এ আসনে নির্বাচনী ফলাফলের প্রতিফলনই আসন্ন নির্বাচনে দেখতে পাবেন বলে মনে করছেন।

অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহানো জনগণের কষ্ট লাঘবে ইতোমধ্যে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার ব্যক্তিগত অর্থ ব্যয়ে করে এলাকায় ৪৯টি ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। বিতরণ করেছেন ৩৭ হাজার আমগাছ। চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে তাদের পাশে দাঁড়ান ও খাবার সরবরাহ করেন। নিজের নামে ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে এলাকার তরুণদের সংগঠিত করেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে তার একাডেমি একাদশের সঙ্গে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে এর সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে দেন। ওই সব ম্যাচে তিনি নিজে অংশ নিয়ে এবং মাঠে আগত দর্শকের উদ্দেশে মনোমুগ্ধকর বক্তব্য দিয়ে উন্মাদনার সৃষ্টি করেছেন। তিনি চালঞ্চল্যকর নুসরাত হত্যা মামলার বাদীসহ জনস্বার্থে বেশ কয়েকটি রিট দায়ের করেন। করোনাকালে ও সিলেটর বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং বিপুল অর্থ সংগ্রহ করে বিতরণ করেন। এসব বিষয় এলাকার ভোটাররা আলোচনা করছেন।

অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যারিস্টার সুমনের নির্বাচনী প্রচার ভোটারদের মধ্যে চাঞ্জল্য সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন গান ও কনটেন্ট নির্মাণ করে ফেসবুকে আপলোড করা হচ্ছে। এদের মধ্যে ‘ইএমটিভি’ নামে একটি ফেসবুক পেজ আলোচনায় এসেছে। এর কনটেন্ট নির্মাতা মো. ইসমাইল মিয়া জানান, সুমন ভাইকে ছোটবেলা থেকে ভালোবাসি। এ জন্য তার পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছি। এ পর্যন্ত ১৬/১৭টি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করা হয়েছে। সবগুলো ভাইরাল হয়েছে। ১৮ মিলিয়নের মতো ভিউ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা চাই বিনোদনের মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে যেতে। আশা করি প্রচারে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখব।

ব্যারিস্টার সুমনও তার নির্বাচনী প্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে জোরালোভাবে কাজে লাগাচ্ছেন। সুমনের ফেসবুক ফলোয়ার রয়েছেন ৫.৫ মিলিয়ন। নির্বাচনী প্রচারে সুমন প্রতিপক্ষের দুর্র্বল দিক তুলে ধরলেও নৌকার প্রার্থী মাহবুব আলী সরাসরি কোনো সমালোচনা করা থেকে বিরত রয়েছেন। তবে তার সমর্থকদের কেউ কেউ সুমনকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।

চা বাগান অধ্যুষিত হওয়ায় হবিগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থীই এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রায় সব নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসছেন। ব্যতিক্রম শুধু ১৯৭৯, ১৯৮৬ ও ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন। ১৯৭৯ সালে চুনারুঘাট উপজেলা বাহুবল উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। আর মাধবপুর উপজেলা নিয়ে একটি পৃথক আসন ছিল। ১৯৮৬ নির্বাচনের আগে মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলা সংযুক্ত করে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এই আসন থেকে আওয়মী লীগের প্রার্থী হিসেবে ছয়বারের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ।

এই আসনে জয়-পরাজয়ে চা শ্রমিকদের ভোটই নিয়ামক হিসেবে কাজ করে আসছে। অতীতের ভোট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চা শ্রমিকরা বরাবার নৌকাতেই ভোট দিয়ে আসছেন। অনেকের ধারণা, এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন চা শ্রমিকদের সুদিনে কিংবা দুর্দিনে পাশে থাকায় ব্যক্তি ইমেজের কারণে বেশ কিছু ভোট পেতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারে সুমন এগিয়ে থাকলেও ভোটের সমীকরণ কি হবে, এ জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল।

অন্যান্য প্রার্থীর অবস্থা : হবিগঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনে অন্য প্রার্থীরা হচ্ছেন ইসলামি ঐক্য জোটের আবু ছালেহ (মিনার মার্কা), জাতীয় পার্টির আহাদ উদ্দিন চৌধুরী (লাঙল), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ আব্দুল মমিন (চেয়ার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আল আমিন (ডাব), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) মো. মোখলেছুর রহমান (নোঙর) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. রাশেদুল ইসলাম খোকন (ছড়ি)। তবে তাদের কেউই ভোটের আলোচনায় নেই। ডেস্ক নিউজ ফেসবুক থেকে সংগৃহীত:



বিষয়: #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)