রবিবার ● ১২ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » বাংলাদেশ » ৫০ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে হঠাৎ রুশ নৌবহর
৫০ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে হঠাৎ রুশ নৌবহর
চট্টগ্রাম সমূদ্রবন্দরে হঠাৎ করেই একটি রুশ নৌবহর এসেছে। এর ফলে দীর্ঘ ৫০ বছর পর আবারও বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়েছে রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ। প্যাসিফিক ফ্লিট নামে ওই নৌবহরে অ্যাডমিরাল ট্রাইবাটস ও অ্যাডমিরাল প্যান্টেলেভ নামে দুটি সাবমেরিন বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। সঙ্গে পেচেঙ্গা নামে একটি ট্যাঙ্কারও রয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৫০ বছরে এই প্রথম কোনো রুশ যুদ্ধ জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে এলো।
১৯৭২ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর চট্টগ্রাম নৌবন্দর থেকে মাইন অপসারণের জন্য একটি রুশ নৌবহর মোতায়েন করা হয়েছিল। মূলত সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি দেশকে মানবিক বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতেই সে সময় ওই রুশ নৌবহর বাংলাদেশে আসে। যুদ্ধের চলাকালে বন্দরে অনেক মাইন বসানো হয়েছিল, মাইনের কারণে অনেক জাহাজ সে সময় ডুবেও গিয়েছিল।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মন্টিটস্কি জানান, ৫০ বছর আগে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম নৌবন্দর থেকে মাইন অপসারণে অভিযান পরিচালনার জন্য একটি রুশ নৌবহর মোতায়েন করা হয়েছিল। সে সময় রুশ নৌবহর এসেছিল মূলত সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি দেশকে মানবিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বন্দরে অনেক মাইন বসানো হয়েছিল। এ কারণে অনেক জাহাজ ডুবে গিয়েছিল।
রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, সেই সময় এই মাইন সমস্যা সমাধানে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার অনেক দেশের কাছেই আবেদন জানিয়েছিল। কিছু দেশ সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু বিনিময়ে অনেক অর্থ দাবি করেছিল তারা; যা বাংলাদেশের ছিল না। তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) একমাত্র দেশ হিসেবে মানবিক কারণে সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছিল।
ওই সময় সমস্যা সমাধানে মাইন ক্লিয়ারিং অপারেশন নামে একটি অভিযান চালানো হয়। যা ১৯৭২ সালের এপ্রিলে শুরু হয়ে ১৯৭৪ সালের জুন পর্যন্ত চলে। সোভিয়েত নৌবাহিনীর ৮ শতাধিক নাবিক ২৬ মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চট্টগ্রাম বন্দরের মাইন অপসারণ করে।
তবে এবার রুশ নৌবহর আগমনের লক্ষ্য একেবারেই ভিন্ন। এবার তারা এসেছেন প্রীতি সফরে।
চট্টগ্রামে রাশিয়ার অনারারি কনসাল আশিক ইমরান এ বিষয়ে বলেন, রুশ নাবিকরা আবারও চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছেন। তবে এবার তারা কোন অপারেশনে আসেননি। তাদের এই প্রীতি সফর প্রমাণ করে যে, দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমানে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
তাসের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্যাসিফিক ফ্লিট নামের এই নৌবহরে অ্যাডমিরাল ট্রাইবাটস ও অ্যাডমিরাল প্যান্টেলেভ নামে দুটি সাবমেরিন বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ ও পেচেঙ্গা নামে একটি ট্যাঙ্কার জাহাজ রয়েছে।
প্রথম অপারোশন সম্পর্কে রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, তখন (১৯৭২ সালে) একমাত্র দেশ হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছিল। দীর্ঘ ২৬ মাস ধরে সোভিয়েত নৌবাহিনীর ৮ শতাধিক নাবিকের অক্লান্ত পরিশ্রমে সে সময় চট্টগ্রাম বন্দরের মাইন অপসারণ হয়। অভিযানে এক রুশ ডুবুরি নিহত হন। তবে লক্ষ্য অর্জনের পরই চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়েন সোভিয়েত নৌসেনারা।
চট্টগ্রাম বন্দরে সেই কার্যক্রমকে ‘মাইন ক্লিয়ারিং অপারেশন’ নামে অভিহিত করা হয়। অপারেশনটি ১৯৭২ সালের এপ্রিলে শুরু হয়ে ১৯৭৪ সালের জুন পর্যন্ত চলে। তার পর থেকেই মূলত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সারা বিশ্বে জাহাজ চলাচলের পথ সুগম হয়।
বিষয়: # #চট্টগ্রাম #নৌবহর #বন্দর