বৃহস্পতিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » স্বাস্থ্য » দাম কমলো হার্টের রিংয়ের, ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর
দাম কমলো হার্টের রিংয়ের, ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর
হৃদরোগীদের জীবনদায়ী চিকিৎসাসামগ্রী করোনারি স্টেন্টের (হার্টের রিং) দাম কমিয়েছে সরকার। ২৭টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ৪৪ ধরনের কার্ডিয়াক স্টেন্টের (হার্টের রিং) দাম ২ হাজার থেকে ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ডিজিডিএ। সে হিসেবে স্টেন্ট প্রতি ৩ শতাংশ থেকে ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত দাম কমছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হবে।
একইসাথে হৃদরোগের চিকিৎসা প্রদানকারী সব হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে করোনারি স্টেন্টের মূল্যতালিকা প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে ডিজিডিএ।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ১২ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার বলা হয়, ঔষধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩ এর ৩০(১) ধারা অনুযায়ী, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর করোনারি স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য পুনরায় নির্ধারণ করা হলো। একইসাথে হৃদরোগের চিকিৎসা প্রদানকারী হাসপাতালগুলোকে স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত না করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে স্টেন্টের নাম, সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এবং উৎপাদনকারীর নাম উল্লেখসহ পৃথক ক্যাশ মেমো সরবরাহ করতে হবে। স্টেন্টের প্যাকেটের গায়ে উৎপাদন, মেয়াদ, উৎপাদনকারী দেশের নাম ও খুচরা মুল্য লেখা থাকতে হবে।
অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, অ্যালেক্স প্লাস কার্ডিয়াক স্টেন্টের দাম ৫৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এতদিন এই স্টেন্টের দাম ছিল ৮০ হাজার টাকা। একইভাবে আল্টিমাস্টারের দাম ৬৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা, কোরোফ্লেক্স আইএসএআর করোনারি স্টেন্ট সিস্টেমের দাম ৫৯ হাজার ১১৯.৪০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৩ হাজার, রিসলিউট ইন্টিগ্রিটির দাম ১ লাখ ৮ হাজার ১৬০.৪০ টাকা থেকে কমিয়ে ৭৮ হাজার ৪০০ টাকা, বায়ো ফ্রিডম স্টেন্টের দাম এক লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৬৫ হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ৪৫ হাজার কার্ডিয়াক স্টেন্ট ব্যবহার করা হয়। হৃদরোগেআক্রান্ত কিছু রোগীর রক্তনালি সরু বা বন্ধ (ব্লক) হয়ে যায়। এতে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। রক্ত চলাচল সচল রাখতে স্টেন্ট ব্যবহার করা হয়। স্টেন্ট অনেকটা কালভার্টের মতো কাজ করে।
গত সেপ্টেম্বরে স্টেন্টের নতুন দাম নির্ধারণের কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে এ মাসে। এ বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর স্টক শেষ না হওয়ায় তারা নতুন দামে বিক্রি করতে রাজি হচ্ছিল না। এছাড়া ইউরোপীয় স্টেন্টগুলোর দাম কমাতে চাচ্ছিলেন না ব্যবসায়ীরা। কয়েক দফা আলোচনার পর তাদের রাজি করানো সম্ভব হয়েছে।’
অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপ-পরিচালক নুরুল আলম বলেন, ‘আমাদের দেশে স্টেন্ট উৎপাদন করা হয় না, আমদানি করে প্রতিষ্ঠানগুলো। মার্কেটে এখন অনেক বেশি কম্পিটিটর আছে। যারা কম দামে দামে বিক্রি করতে রাজি হবে, আমরা তাদের আমদানির অনুমোদন দেব।’
কোনো প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল যদি বেশি দামে স্টেন্ট বিক্রি করে, তাহলে ওষুধ ও কসমেটিক আইন অনুযায়ী দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে করোনারি স্টেন্টের দাম বাংলাদেশের তুলনায় কম। সে কারণে হৃদরোগের চিকিৎসকেরা দাম কমাতে কয়েক মাস ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিলেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে রিংয়ের দাম কমাতে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ওষুধ প্রশাশন অধিদপ্তর দাম কমাতে উদ্যোগ নেয়।
বিষয়: #কমলো #দাম #রিং #হার্ট