শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Somoy Channel
বৃহস্পতিবার ● ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » -”এক রাতের দাম কত” ?
প্রথম পাতা » সাহিত্য রম্যগল্প » -”এক রাতের দাম কত” ?
১১৭ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

-”এক রাতের দাম কত” ?

-”এক রাতের দাম কত” ?কালো শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পরিহিত এক সুদর্শন যুবক নাফিয়াকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলে ওঠে।
খুব ঝড় হচ্ছে।পুরো রাস্তা জনমানবশূন্য।এই শূন্য রাস্তায় ঝড় উপেক্ষা করে নিজ বাড়ির পথে অগ্রসর হচ্ছে নাফিয়া।হটাৎ একটা কালো গাড়ি এসে থামে তার সামনে এবং গাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে একজন পুরুষ যাকে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে দেখে সুদর্শনই মনে হচ্ছে। কিন্তু যুবকটির করা প্রশ্ন নাফিয়ার কানে আসতেই নাফিয়ার কান গরম হয়ে গেলো।কিন্তু এমন ফাঁকা রাস্তায় ছেলেটির সাথে কোনো ধরনের ঝামেলা করা টা নিজের জন্যই কবর খোদার সমান মনে হচ্ছে নাফিয়ার।তাই সে কন্ঠ স্বাভাবিক রেখে বলে ওঠে,
-আসসালামু আলাইকুম।আপনি আমাকে ভুল ভাবছেন।আমি এক রাতের জন্য কেনা কোনো পণ্য নই।
বলেই যেই নাফিয়া স্থান ত্যাগ করতে যায় ওমনি যুবকটি নাফিয়ার হাত ধরে ফেলে এবং বলে ওঠে,
-এতো রাতে হাইওয়েতে বোরকা পরিহিত কোনো ভালো মেয়ে রাস্তায় থাকে না।জীবনে এই প্রথম পতিতার সন্ধানে এলাম বলে আমায় বোকা ভাবছো?
-সীমা অতিক্রম করছেন আপনি।হাত ছাড়ুন আমার!
-পতিতা হয়েও এতো ভাব কেনো?বেশি টাকার অন্য কোনো কাস্টোমার আছে বলেই কি আমার সাথে আসতে এতো নকশা?
ব্যাস রাগের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে গেলো নাফিয়ার।ঠাস করে একটি চর বসিয়ে দিলো ছেলেটির গালে।কিন্তু চর বসিয়ে দেবার পর সে বুঝতে পারছে আসলে সে কত বড় ভুল করে বসেছে।ছেলেটি রক্ত চোক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে যেনো এখনই আস্তো চিবিয়ে খেয়ে নিবে।নাফিয়া নিজের ভয়কে লুকাবার চেষ্টায় বলে ওঠে,
-লজ্জা থাকলে এবার আমার হাত টা ছাড়ুন।
এ কথায় যুবক টির রাগ আরো বেড়ে গেলো।সে নাফিয়ার হাত আরো শক্ত করে ধরে নিজের গাড়ির দিকে হাঁটতে আরম্ভ করলো।এদিকে,নাফিয়া অনুভব করছে তার হাত টি বোধহয় ছিঁড়েই যাবে।সে যুবকটিকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু লাভ হলো না।যুবকটি নাফিয়াকে গাড়িতে বসিয়ে সাথে নিজেও বসে গাড়ি স্টার্ট দিতে বললো ড্রাইভারকে।নাফিয়া বারংবার বলে চলছে তাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু ছেলেটি কানে হেডফোন গুঁজে চোখ বুজে আছে।অনেকটা সময় ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করেও যখন লাভ হলো না এবং যুবকটিও চোখ বুজে আছে সেই সুযোগে নাফিয়া নিজের ব্যাগ থেকে ফোন বের করে ফোনের লক খুলতেই যাবে ওমনি ছেলেটি ছো মেরে নাফিয়ার হাত থেকে ফোনটি নিয়ে নেয়।এতে চমকে নাফিয়া যেই যুবকটির দিকে তাকায় যুবকটি বলে ওঠে,
-খবরদার!যদি কোনো চালাকি করার চেষ্টা করো তবে খুব খারাপ হবে।
যুবকটির রক্তবর্ণ চোখ দেখে ভয়ে চুপসে যায় নাফিয়া।স্থির বসে চোখের নোনাজল ফেলতে থাকে।সেদিকে যুবকটি কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে গাড়িতে হেলান দিয়ে বসে আবারও চোখবুঁজে নেয়।তাকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে সে চোখ বুজে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে চলছে।
কিছুটা সময় পার হতেই একটি দোতলা বাংলো বাড়ির সামনে এসে থামে গাড়িটি।জায়গাটি সম্পূর্ণ অচেনা নাফিয়ার।যুবকটি গাড়ি থেকে বেড়িয়ে নাফিয়ার সামনে এসে গাড়ির গেট খুলে নাফিয়ার হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির দিকে এগোতে থাকে।এদিকে নাফিয়া কাঁদতে কাঁদতে বার বার তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করতে থাকে।কিন্তু যুবকটি যেনো কিছুই শুনছে না।
২য় তলার একটি বেড রুমে নাফিয়াকে এনে এক ধাক্কায় বিছানায় ফেলে দেয় যুবকটি।রাগান্বিত স্বরে চেচিয়ে যুবকটি বলে ওঠে,
-হাও ডেয়ার ইউ?হাও ডেয়ার ইউ টু স্লাপ আফিম ইবনান?ডু ইউ হেভ এনি আইডিয়া হু আই অ্যাম?ইউ হেভ টু পে ফর দিস স্লাপ!
-আমাকে মাফ করে দিন প্লিজ।আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।
-হাহ্।টুডে ইউ ডিড আ বিগেস্ট মিস্টেক ইন ইউর লাইফ।সো ইউ হেভ টু পে বেবজ!
বলেই নিজের শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে আফিম এগিয়ে যেতে থাকে নাফিয়ার কাছে।নাফিয়া একটু একটু করে পেছাতে থাকে।আফিম দেরি না করে বিছানার কাছে যেয়ে নাফিয়ার পা ধরে নিজের কাছে টেনে এনে নাফিয়ার উপর ভর দিয়ে শুয়ে পরে।নাফিয়া চিৎকার করে বলে ওঠে,
-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন আমি পতিতা নই।
কিন্তু আফিম এসব কথা কানে না নিয়ে নাফিয়ার নেকাবটি ধরে টান দেয় ফলে তা খুলে যায় এবং আফিমের সামনে ফুটে ওঠে এক মায়াবী চেহারা।যা দেখেই তার দিকে দৃষ্টি আটকে গিয়েছে আফিমের।ভাসা ভাসা চোখ,লাভের উপরের দিকে যেমন শেইপ ঠিক তেমন শেপের ঠোঁট,খাঁড়া নাক,গোলগাল চেহারা সেই সাথে উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং।যেখানে আফিম ব্যস্ত নাফিয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেখানে নাফিয়া কেঁদেই চলছে।কান্নার মাঝে মাঝে নাফিয়া ঠোঁট কামড়ে ধরছে।নাফিয়ার ঠোঁটগুলো আফিমকে খুব করে টানছে।আফিম যেনো একটি ঘোরে চলে গিয়েছে।তার চোখের সামনে শুধু ঠোঁটটিই ভাসছে।ঠোঁট দুটো এই মুহূর্তে ছুঁতে না পারলে যেনো বড্ড ক্ষতি হয়ে যাবে আফিমের।আফিম কোনো কিছু না ভেবেই নাফিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দেয়।প্রায় ৫ মিনিট অতিবাহিত হতেই নাফিয়ার ঠোঁট ছেড়ে মাথা উঠাতেই দেখতে পায় নাফিয়া অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে।প্রায় সাথে সাথেই আফিম নাফিয়ার উপর থেকে উঠে পানির জগ এনে নাফিয়ার চোখ-মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়।কিন্তু নাফিয়ার জ্ঞান ফেরে না।এতে বেশ ভয় পেয়ে যায় আফিম দ্রুত ডাক্তারকে ফোন করে আসতে বলার পর,সে নাফিয়ার পরিহিত বোরকা ও হিজাবটি খুলে নাফিয়াকে ঠিক করে বিছানায় শুইয়ে দেয়।আধ ঘন্টার একটু পরেই একজন মহিলা ডাক্তার এসে নাফিয়াকে এক্সামিন করে আফিমকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে,
-ভয়ের কিছু নেই।মেয়েটি হয়তো প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিল কোনো কিছুতে সেই সাথে হয়তো সকালের পর সারাদিনে কিছু খায়নি এবং পরিশ্রম করার ফলে দূর্বলতার জন্য অচেতন হয়েছে।সমস্যা নেই,জ্ঞান ফিরলে স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার খেলে এবং রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
-ধন্যবাদ ডক্টর।
-ইট’স মাই ডিউটি মিঃআফিম।আজ তবে আসছি।
-ইয়াহ সিওর।
ডাক্তার বিদায় নিতেই আফিম নাফিয়ার কাছে যেয়ে বসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নাফিয়ার দিকে।মেয়েটির চেহারায় যেমন মায়া আছে ঠিক তেমনই একটা বাচ্চা বাচ্চা ভাব যেনো সে একদম নিষ্পাপ।আফিম বেশ কিছুটা সময় নাফিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর হটাৎ ওঠে দাঁড়িয়ে কোনো একটি ব্যক্তিকে কল করে বলে ওঠে,
-আই ওয়ান্ট এভরি সিঙ্গেল ডিটেইলস এবাউট দি গার্ল হু ইজ ইন মাই বেডরুম রাইট নাও।
বলেই ফোনটি কেটে দেয় আফিম।কিছুটা সময়ের মাঝেই ফ্রেশ হয়ে এসে নাফিয়ার পাশে শুয়ে পরে সে।চোখ বন্ধ করতেই কেনো যেনো তার অস্থির লাগছে, ঘুমেরও আসার নাম গন্ধ নেই।তার মন চাইছে তার পাশে শুয়ে থাকা নারীকে এক নজর দেখতে।অবাধ্য মনের বাধ্য হয়ে আফিম তার চোখজোড়া মেলে তাকায় সেই মায়াবী চেহারায়।
!!
ঘুম ভাঙতেই আস্তে আস্তে চোখজোড়া মেলে তাকায় নাফিয়া।শরীরে দূর্বলতা বেশ ভালোই অনুভব করছে সে।সকালে উঠেই কালেমা তায়েবা পড়াটা অভ্যেস তার।তাই কালেমা পড়ে উঠে বসতেই এক অপরিচিত রুমে নিজেকে আবিষ্কার করে সে।সাথে সাথেই তার মনে পড়ে যায় গত রাতের ঘটনা গুলো।চটজলদি সে একরাশ ভয় নিয়ে নিজের দিকে তাকায়।অতঃপর দেখে তার কাপড় ঠিকই আছে এবং শরীর কোনো পরিবর্তন বা ব্যথা নেই।এতে কিছু টা শান্ত হলো নাফিয়া এবং মনে মনে বলতে আরম্ভ করলো,
“জানোয়াররা তো মৃত দেহের লোভ ও নিয়ত্রণ করতে পারে না।আর এই জানোয়ার সামান্য আমার অজ্ঞান হওয়াতে আমায় ছেড়ে দিলো?”
ঠিক এমন সময় কক্ষে প্রবেশ করে আফিম।চেহারায় রাগী ভাব আর কন্ঠে বিরক্তি নিয়ে সে ডেকে ওঠে,
“মজনু”
নিচ থেকে আওয়াজ এলো,
“আইতাছি স্যার”
আর না দাঁড়িয়ে আফিম টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে।জগিং এর ফলে সারা শরীর ঘর্মান্তক তার।
এতোটা সময় সব কিছুই নিরবে দেখে গেলো নাফিয়া।আফিম ওয়াশরুমে যেতেই সে মনে মনে বলে ওঠে,
“কি ভাব,অসহ্য”
কথাটি শেষ করতেই হটাৎ তার মনে পরে তার শরীরে তার বোরকা নেই।চটজলদি সে নিজের আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিজের বোরকা খুঁজতে আরম্ভ করে।বেশি বেগ পেতে হলো না তার।বেডের সামনের সোফাটাতেই তার বোরকা টা পরে আছে।নাফিয়া জলদি উঠে তার বোরকা টা পরে নেয়।ঠিক তখনি কক্ষের দরজায় টোকা পরার আওয়াজ হয়।নেকাব টা পরে নিয়ে নাফিয়া বলে ওঠে,
“আসতে পারেন”
-মেডাম আফনের খাওন।
-আমি খাবো না।নিয়ে যেতে পারেন।
-স্যারের ওর্ডার মেডাম।আফনের খাওনই লাগবো।আর ডাক্তার কইছে আফনের শরীর দূর্বল,ভালো ভালো খাইতে হইবো।
-ডাক্তার?
-জ্বে।কাল আফনের জ্ঞান যাওনের পর স্যার ডাক্তার ডাকছেলো।
-ওহ আচ্ছা।
কথাটি বলেই নাফিয়া ভাবতে আরম্ভ করলো,
“সামান্য অচেতন হওয়ায় সেই রাতে ডাক্তার ডেকেছিলো!কিন্তু কেনো?একটা দেহ লোভী জানোয়ারের দ্বারা এটা আমার কাম্য ছিলো না।”
-এইখানে খাওন রাখলাম মেডাম।
-বললাম তো খাবো না।নিয়ে যান খাবার।
কথাটি বলার পর পরই নাফিয়া একটি ভারী,গম্ভীর ও শান্ত কন্ঠস্বর শুনতে পেলো।
-এখানেই থাকতে চাইছো তবে?(আফিম)
চোখের ইশারা করতেই মজনু খাবার সোফার সামনের টেবিলে রেখে চলে যায়।
-কি বলতে চাইছেন?
-খাবার পুরোটা খেয়ে নিলে তোমায় ছেড়ে দেওয়া হবে নয়তো এখানেই থাকবে।
-আমার খাওয়া নিয়ে আপনাকে চিন্তা না করলেও হবে।
-শাট আপ ইউ মরন!দয়াকে চিন্তা ভাবছো কি করে?তোমার মতো মেয়ের জন্য আফিম ইবনান চিন্তিত হবে?আর ইউ আউট অফ ইউর মাইন্ড?(বেশ চেচিয়ে কথাগুলো বলে ওঠে আফিম)
ভয়ে ও অপমানবোধে নাফিয়ার চোখে জল চিকচিক করে ওঠে।যা আফিমের চোখে পরতেই আফিম সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নেয় এবং মনে মনে বলে ওঠে,
“ঔ মায়াবী চোখজোড়ায় জল বড্ড বেমানান!”
-আমি খাবো না আমায় যেতে দিন।
-ঠিক আছে খেয়ো না।
চলবে….?
সূচনা পর্ব,,,
পরবর্তী পর্ব পেতে পেইজে ফলো দিয়ে রাখুন
Borkot Vai
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত



বিষয়: #  #  #  #


আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)